মা ও বোনদের মুড সুইং সম্পর্কে জেনে নিন।

রহস্যজনক জটিলতার এই পৃথিবীতে খুব কম সংখ্যক ছেলেই আছে যারা তাদের বিপরীত লিঙ্গ অর্থাৎ মেয়েদের মুড সুইং এর ব্যাপারে জানে বা সঠিক আন্দাজ করতে পারে। অথবা এমনও হতে পারে, ছেলেরা হয়তো জেনেও না জানার ভান করে বা গুরুত্ব দেয় না! এই বিষয়গুলো আগে না বুঝলেও এখন ঠিকই বুঝতে পারছি যে, এই ব্যাপারটা নেহায়েত একটা অভিশাপ।

আপনি যদি কখনো লক্ষ্য করে দেখেন যে, আপনার মা, আপনার বোন, আপনার বান্ধবী, আপনার প্রেমিকা, আপনার স্ত্রী কিংবা আপনার কন্যা কোন বিশেষ কারন ছাড়াই ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছে, অযথা রাগ করছে, অদৃশ্য কারনে কাঁদছে, চিৎকার করছে, ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে যাচ্ছে তখন প্লিজ আপনজন হিসেবে আপনিই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন!

কারন বয়স অনুযায়ী হরমোনাল ইমব্যালেন্স, মেন্সট্রুয়াল সার্কেল সহ আরও বিভিন্ন ছোট খাট কারণে বেশিরভাগ মেয়েই মুড সুইং এ ভুগে থাকে। হঠাৎ হঠাৎই একদম আপনজনদের সাথেও তাদের বিহেভ পাল্টে যায়। প্রায় সবার সাথেই ওভার রিঅ্যাক্ট করে। এ অবস্থায় মেয়েদেরকে আমরা সাইকো বলে থাকি। কিন্তু জানেন কি? মেয়েটা আসলেই সাইকো না।

মেয়েরা সাধারণত আবেগ আর মায়া মমতায় ভরা একটা মানুষ। মুড সুইং-এ ভুগা আমাদের দেশের মেয়েগুলো আসলে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় প্রাণী। ওরা কিছু কিছু বিশেষ সময়ে নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করে আপনার আমার সাথে নরমাল বিহেভ করতে চেস্টা অবিরত রাখে। কিন্তু কি করবে বেচারি। সে ও তো মানুষ। অনেক সময় সে নিজের সাথে পেরে উঠেনা। সবার ওভার রিঅ্যাক্ট করে ফেলে। ওরা কখনোই ইচ্ছা করে কারও এমনটা করেনা। ওদের শরীরে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন প্রকার হরমোনের প্রভাবে এমন করে থাকে। হয়তো সে নিজেও কখনো জানে না কিভাবে নিজের মুড সুইং কে হ্যান্ডেল করতে হয়।

বিশেষ ব্যাপারটি হচ্ছে, ওদের এই মুড সুইংটা বেশিরভাগ সময়েই তাদের খুব প্রিয় ও কাছের মানুষগুলোর সাথে হয়। এই স্বভাব তাদের পরিবর্তনশীল। এই দেখছেন খুব হাসি খুশি আবার হঠাৎ খেয়াল করে দেখলেন সে অন্যরকম বিহেভ করছে। এমনও হতে পারে সে আপনার কাছ থেকে মনে মনে কিছু চাচ্ছে কিন্তু সেটা মুখের ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেনা। সে চায় আপনি তাকে তার মত বুঝুন। কিন্তু যখন সে দেখে তার কাছের মানুষটা তার চাওয়াটা পূরণ করছে না তখন সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না। আর সেই আশাটা পূরণ না হওয়ায় নিমিষেই সে পাল্টে যায় ও রিঅ্যাক্ট করে।

আবার কিছুক্ষণ পরেই সে ঠিক হয়ে যায়। আপনি তার মুড সুইং এর ব্যাপারটা ধরতে পারেন নি। আপনিও তাকে বলে ফেলেন সে মিসবিহেভ করে। কিংবা তাকে এড়িয়ে চলেন। এতে করে সেই মুড সুইং হওয়া মেয়েটি আস্তে আস্তে সবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়।

<

এমতাবস্থায় তাদেরকে এটা ওটা গালমন্দ মা করে তার কাছে আপনি এমন একজন হোন যার কাঁধে মাথা রেখে সে কাঁদতে পারে! যার কাছে মন খুলে কিছু কথা বলতে পারে! যখন ওদের নিজের কাছে সবকিছু ভুল মনে হতে থাকবে, নিজেকে আর সহ্য করবে না, সবকিছু অর্থহীন মনে হবে তখন তাদের চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে। বিশ্বাস করুন, ঐ মুহূর্তে স্রেফ একজন তাদের কথা শোনার একজন আপন মানুষের দরকার হয়। যে কিনা খুব মনোযোগ দিয়ে ভীষণ অগোছালো আর অর্থহীন কথা গুলো ধৈর্য নিয়ে শুনবে। আর তাকে স্বান্তনা দিয়ে বলবে, কাঁদিস না, আমিতো আছি।

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন