একটি বিবাহিত মেয়ের বিয়ের পর তার মাকে বলা কিছু কথা….
সেই ছোট বেলা থেকে আট দশটি মেয়ের মতো আমার ও বিয়ে সম্পর্কে কৌতুহল ছিলো..
ভাবতাম বিয়ে মানে কত আনন্দ,বিয়ে মানে কত মজা..
প্রিয় মানুষের সাথে আনন্দের সাথে থাকা…
কিন্তু এখন যখন বিয়ে হয়ে গেছে..এখন বুঝতে পারছি..বিয়ে মানেই সুখের চাদরে শুয়ে থাকা নয়..
বিয়ে মানেই বরের সাথে হাসি আনন্দে দিন কাটানো নয়..
বিয়ে মানেই অনেক দায়িত্ব কর্তব্য পালন করা…
সকল পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া…
যখন নিজের বাড়িতে ছিলাম তখন নিজেট ইচ্ছা মতো ঘুমাতাম..নিজের ইচ্ছা মতো ঘুরে বেড়াতাম..
কিন্ত এখন আমাকে সবার আগে ঘুম থেকে উঠতে হয়…
নিজেকে নিয়ে ভাবলে চলবে না৷
সবার খেয়াল আমাকে রাখতে হয়..
জানো মা…রাগ করে বসে থাকলে এখন আর কেউ আমায় খাইয়ে ও দেয় না…
তোমার মতো করে কেউ আর আদর ও করে না..
এখন আর কেউ আমায় মা বলে ডাকে না..আমার ইচ্ছা গুলোকে পূর্ণ করে না..
না খেয়ে থাকলে ও এখন আর কেউ মুখে তুলে খাইয়ে দেয় না..খুব মনে পড়ে ছোটবেলার সেই খেলার দিন গুলোর কথা..যখন বুঝতাম না জীবনের মানে না..কষ্ট কাকে বলে সেটা ও বুঝি নি তখন..কিন্তু এখন মনে হচ্ছে জীবনটা আসলেই অনেক কষ্টের..নিজের আপন মানুষ গুলোকে ছাড়া থাকতে কতটা কষ্ট হয়..সেটা এখন আমি হারে হারে টের পাচ্ছি..
এসব যখন ভাবি তখন আমার খুব খারাপ লাগে..আর মনে মনে বলি কেনো যে বিয়ে করলাম…
খুব ইচ্ছে করে তোমাদের কাছে ছুটে যাই..
ভালোই তো ছিলাম তোমাদের কাছে…ফিরে গিয়ে তোমাদের জ্বালাতে খুব ইচ্ছা করে..
ভাইয়ের সাথে খুনসুটি করার দিন গুলো খুব মিছ করি..
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার দিন গুলো খুব মিছ করি…
খুব ইচ্ছে করে আগের মতো করে তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাতে..
ঠিক তখনই তোমার কথা মনে পড়ে মা..তুমি ও তো কত কষ্ট করেছো..অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছো..হাজারো খারাপ পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছো…সেই ছোটবেলা থেকে কত কষ্ট করে আমাদেরকে বড় করেছো..পরিবারের সবগুলো মানুষকে আগলে রেখেছো..
নিজে না খেলে ও আমাদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছো…নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে অপূর্ণ রেখে আমাদের চাওয়া পাওয়া গুলো পূর্ণ করেছো..
যখন এইগুলো চিন্তা করি..তখন নিজেকে একটু শান্ত করি..তুমি যেহেতু পেরেছো..
আমাকে ও পারতে হবে..
জীবন যুদ্ধে জিততেই হবে..
তোমার কর্তব্য,তোমার ত্যাগ নিষ্ঠা আমার কাছে আর্দশ..