রাখাল বালক ছিলেন একসময়কার ক্রিকেট আইকন মোহাম্মদ রফিক

কিংবদন্তি মোহাম্মদ রফিক কে আজকের যুগের ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়ত না চিনেও থাকতে পারে। তবে 2010 সালের আগেও যারা ক্রিকেট খেলা দেখতেন তারা অবশ্যই জেনে থাকবেন সাকিব-মাশরাফিদের আইডল এই ক্রিকেটার।

সর্ব প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে 100 উইকেট শিকার করেছিলেন টেস্ট এবং ওডিআই এই দুই ফরম্যাটেই। তার পাশাপাশি ওডিআই সর্বপ্রথম এক হাজার রান তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এই সময়কার ক্রিকেটার হলে হয়তবা তারপ্রাপ্যতা থাকত আকাশছোঁয়া, তবে বাংলাদেশ দলে তিনি এমনই একটা সময় খেলতেন যখন বাংলাদেশ দল টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে পারতো না। যাইহোক, জিনজিরায় বাবুবাজারে ব্রিজ নির্মাণ অথবা সরকারি জমিতে স্কুল প্রদান করা এই সবকিছুর গল্প হয়তোবা আমরা জানি। কিন্তু আজ আমরা জানব তার অতীতকে নিয়ে।

একসময়কার রাখাল বালক বাংলাদেশের এক কিংবদন্তি ক্রিকেটার হয়ে উঠে এসেছিলেন। জিঞ্জিরার বস্তিতে থাকতেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিল 1970 সালে। পড়াশোনা টা বেশি দৌড় চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। জিঞ্জিরার এপারের মাঝিকে বিভিন্ন আকুতি মিনতি করার মাধ্যমে তিনি ঢাকা যেতেন। আজকের সাকিব-সৌম রা যেমন বিকেএসপিতে পড়াশোনা করার পর বাংলাদেশ দলে যোগদান করেছেন, কিন্তু মোহাম্মদ রফিক তেমন ছিলেন না। তিনি বস্তুতপক্ষে নিজ থেকেই ক্রিকেটে যোগদান করেছিলেন। ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে করুণ ছিলো তার জীবন কাহিনী। ক্রিকেটের প্রতি অগাধ ভালোবাসার জন্য তিনি ঢাকায় বারবার ছুটে আসতেন। তিনি মনে করতেন যে ঢাকায় না থাকলে হয়তোবা ক্রিকেট খেলা সম্ভব হবে না। তার কিন্তু বস্তিতে নিয়মিত ক্রিকেট খেলতেন। সেই বস্তির ক্রিকেটার আজ বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার এর আইকন ক্রিকেটার।

33 টি টেস্ট ম্যাচ খেলার মাধ্যমে তিনি একটি সেঞ্চুরি এবং তিনটি হাফ সেঞ্চুরি তার ঝোলায় ভরেছেন। তার পাশাপাশি লাভ করেছেন 10টি উইকেট।

125 টিওয়ানডে ম্যাচ খেলে তিনি কাকতালীয়ভাবে 125 টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স করার পরে প্রধানমন্ত্রী যখন তাকে বলেছিলেন, ” যে তুমি কি চাও?” তখন তিনি নিজের এলাকার কল্যাণের জন্য বলেছিলেন, “বাবুবাজারে অনেক দিন হলে একটি ব্রিজ প্রয়োজন, সেই ব্রিজ যদি আপনি করে দিতেন তাহলে খুবই উপকৃত হতাম।” সেই কারণে হয়তোবা প্রধানমন্ত্রী অবাক হয়েছিলেন কিন্তু পরে সত্যি সত্যি সেই নির্মাণ করা হয়েছিল। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় দলের সকল ক্রিকেটারের জন্য সরকারি জমি প্রদান করেছিলেন কিন্তু সেই জমিতে মোহাম্মদ রফিক কি করেছিলেন!

সে জমিটি স্কুল করার জন্য দান করে দিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু হঠাৎ করে 2009 সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ঘোষণা করে বসলেন যে দুইজন ক্রিকেটারকে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাদ দিতে হবে। তার মধ্যে ছিল মোহাম্মদ রফিকের নাম। টেস্ট ক্রিকেট থেকে তিনি যদি বাদ না পড়তেন তাহলে হয়তোবা তার নামের পেছনে আজকে শতাধিক টেস্ট লেখা থাকতো।

আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

ধন্যবাদ।।

Related Posts