শিক্ষা সফর
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন বান্ধবী ছিল ওরা । ওদের মধ্যে একজনের ১ম পর্ব শেষ হওয়ার পর বিয়ে হয়ে যায় ওর নাম ছিল নাজু । ওরা সবাই ছিল ভদ্র, শান্ত এবং সুন্দরী। ওদের মধ্যে অনেক মিল ছিল। হঠাৎ তিন বান্ধবী জানতে পারলো ওদেরকে শিক্ষা সফরে নেওয়া হবে। এই তিন বান্ধবী নিজের পরিবার ছেড়ে শহরের বাইরে যায়নাই। সেজন্য আপত্তি জানাতে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে গেল। স্যার বললেন, না যাও তাহলে তোমাদের নাম্বার কাটা যাবে। শুনে ওরা যেতে রাজি হয়। মৎস্য বিভাগের সফর শুরু হলো। পরদিন সকাল ৮ টায় ওরা নিজেদের বাসা থেকে রওনা হয়ে ভার্সিটিতে যায়। সেখানে দুটো বাস রিজার্ভ করা ছিল। সবাই নিজেদের সিটে বসলে বাস কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। রহমান স্যার বললেন, তোমরা জীবনে অনেক ভ্রমণ করবে কিন্তু এই রকম আনন্দ পাবে না। বাসের মধ্যে ছেলেরা গান করছিল আর নাচ করছিল। মেয়েরা হাত তালি দিয়ে ওদের উৎসাহিত করছিল। একটি মেয়ে ভীত হয়ে ওদের চুপ থাকতে বলছিল। ছেলেরা সবাইকে একটি করে ছদ্মনাম দিল। ৪ ঘণ্টা ভ্রমণের পর কুমিল্লার একটি রেস্টুরেন্টে খাবার বিরতি হলো। সেখান হতে চলার পথে একটি দূর্ঘটনার জন্য ২ ঘণ্টা দেরি হলো। পরে চট্টগ্রাম হয়ে রাত ১১ টায় গেস্ট হাউজে পৌঁছাল। ওরা শিয়ালের ডাক শুনতে পারছিল। মেয়েরা ভয় পেয়েছিল।
মামা রাতের খাবার রান্না করলে সবাই খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে গেল। পরদিন সকালে উঠে সবাই সমুদ্র দেখতে গেল। সবাই বেশ আনন্দিত ছিল সমুদ্র দেখতে পেয়ে। ওদের মনটা সমুদ্রের মত বিশাল হয়ে গিয়েছিল। দৃষ্টির শেষ সীমানা অবধি ছিল পানি আর পানি। এরপর গেল হিমছড়ি, মহেশখালি। একদিন বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা করল। সবাই নিজেদের পছন্দমত জিনিসপ্ত্র কিনল। বন্ধুরা একে অপরকে উপহার কিনে দিল। নিজেদের পরিবারের সবার জন্যও উপহার কিনল। ওরা ঝিনুক মার্কেট থেকেও নানান সামগ্রী ক্রয় করেছিল। সন্ধ্যার পর ওরা গেস্ট হাউজে ফিরে এল। এসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিল। রাতের খাবার শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল।
ভোর ৪ টার সময় সবাই ঘুম থেকে উঠল। উঠে সবাই সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে লাগল। ভোর ৫ টায় ওদের বাস যাত্রা শুরু করল। পূব আকাশে তখন রাতের অন্ধকার পেরিয়ে একটু একটু করে সূর্য উদিত হচ্ছিল। এমন সূর্যোদয় ওরা কখনই দেখে নি। সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিল।
২ ঘন্টা বাস যাত্রার পর ওরা নাফ নদীর তীরে এসে পৌঁছাল। সবাই নেমে ২টি ট্রলারে উঠল। ওরা এই প্রথম ট্রলারে উঠল। ট্রলার ভ্রমণ ওদের বেশ ভাল লাগছিল। ১ ঘণ্টা ভ্রমণের পর ওরা দ্বীপে এসে পৌঁছাল। সবাই বেশ কৌতুহলী ছিল। সোমাদের একটি দল হাটতে হাটতে একটি জেলে বাড়িতে বিশ্রাম নিতে গেল। জেলের ৫টি ছেলে সন্তানের পর ১টি মেয়ে সন্তান জন্ম নিয়েছে ১৮ দিন ধরে। জেলের স্ত্রী বাচ্চাটিকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল। এটা দেখে ওরা অবাক হয়। জেলে অর্থের অভাবে দুধের পরিবর্তে ভাত খাওয়াচ্ছিল। দেখে ওরা দুঃখিত হলো। উঠানে বিছানো পাতার উপর ওরা বসে বিশ্রাম নিল। এমন সময় জেলের ছেলে ওদেরকে দাবকিনে এনে খাওয়ালো। পরে ওরা দ্বীপে অনেক হাটলে প্রবাল দেখলো। কেয়া–কাঁঠাল গাছ দেখল। ঘুরতে ঘুরতে দেখতে পেল ওদের দলের অন্যরা হারিয়ে গিয়েছে। খুঁজতে খুঁজতে দেখতে পেল সবাই একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খাচ্ছে। ওরাও খাওয়ার জন্য বসে পড়ল। খাবার শেষে সবাই একসাথে টেকনাফে এসে মার্কেটে কেনাকাটা করে। অনেকে শুঁটকি মাছ কিনে রাত ৮ টায় রেস্ট হাউজে ফিরে এল। পরদিন সকালে চেয়ারম্যান স্যার আর স্যারের মেয়ে নাতাশার সাথে সোমা, শিরু, নিনা হোটেল প্রবালে সকালের নাশতা করতে গেল। সেখানে নায়ক রিয়াজের আর নায়িকা শাবনুরের সাথে দেখা হলো। ওদের বন্ধুরা ওদের সাথে ছবি তুলল। সমুদ্রের পানিতে গোসল করে অনেকের জ্বর চলে আসল।
শিক্ষার্থীরা মাহিনের কূপ, বৌদ্ধমন্দিরে গেল। ওরা মাছের আড়ৎ, চিংড়ি হ্যাচারি দেখার জন্য হিমছড়ি, মহেশখালী গেল। এভাবে ৭ দিন শিক্ষা সফরের পর ওরা পরদিন সকালে ঢাকা জগন্নাথ ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। রাত ৮টার সময় ওরা ভার্সিটিতে পৌঁছাল। শিক্ষা সফরের দিনগুলি ওদের স্মৃতিতে লিপিবদ্ধ হয়ে রইলো।
শিক্ষা সফর নিয়ে গল্প
📢 Promoted post: বাংলায় আর্টিকেল লেখালেখি করে ইনকাম করতে চান?
Ata asoley khub anonder.freiends forever
Thank you very much
Ok
nc