সত্যি কারের ভালোবাসা কাকে বলে ?

ত্যি কারের ভালোবাসা কাকে বলে ? ভালবাসতে জানলে সবসময় পাশে থাকা যায়💕❣️
রিহান আর অবনি ওদের ৫বছরের রিলেশন। রিহান অবনির প্রাইভেট টীচার ছিল। গল্পটা এমন ছিল অবনি যখন এসএসসি দিবে রিহান তখন ডিগ্রি ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে কেবল।

রিহানের আর্থিক অবস্থা ছিল মধ্যবিত্ত। নিজের পড়াশুনাটা চালিয়ে নেওয়া কস্টকর হয়ে যেত। নিজের পড়ার খরচ চালাতে রিহান একটা টিউশনি নেয়। সেটা দিয়ে কোনমতে পড়াশুনা চালিয়ে যেত। অবনি হয় তার ছাত্রী। রোজ তাকে পড়াতে যেত রিহান। এভাবে আস্তে আস্তে ওরা দুজন দুজনকে ভালবেসে ফেলে রিহান প্রতিদিন যখন পড়াতে যেত অবনির আম্মু বেশ ভাল আপ্যয়ন করতো চা নাস্তা দিত বাবা বাবা বলে ডাকতো ছেলের বয়সি বলে।

এভাবে যেতে যেতে কয়েক বছর পেরিয়ে যায় এদিকে ওদের রিলশনটা গভীর হয়ে উঠে বাসার কেউ জানতনা অবনি আর রিহান ছাড়া। বেশ ভালই যাচ্ছিলো অবনি এসএসসি দিল রিহান ও চালিয়ে যাচ্ছে পড়া ঐদিকে। অবনি এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হল ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে।তখন যেন বাবা মার চিন্তা বেড়ে গেল বিয়ের জন্য।এদিকে রিহান সবকিছুর পাশাপাশি ছোট একটা কম্পিউটারের দোকান দেয়। কোনমতে নিজের খরচটা চলে।

অবনির বাবা মা হুট করে বিয়ে ঠিক করে অবনির অথচ এখনো তারা দুজনকে অনেক ভালবাসে। এই সময়ে ওদের বিয়ের ব্যাপারে আলাপ করলেও অবনির মা মানবেনা ওদের সম্পর্কটাকে কারন রিহানে জব নাই মধ্যবিত্ত রিহান।
নিরুপায় হয়ে সবটা জেনেবুজেও রিহান কে বলল অবনি প্রস্তাব নিয়ে আসতে রিহানের ফ্যামিলি রিহান তাই করলো বাট অবনির ফ্যামিলি মানলনা অপমান করলো রিহানকে।

অবনিও অনেক ভালবাসে রিহানকে অন্য কাউকে বিয়ে করে অবনি সুখে থাকবেনা বুঝতে পেরেছে।
এদিকে রিহান অবনিকে না পেলে সোসাইড করবে। বড্ড মায়া লাগলো রিহানকে দেখে অবনির। রিহান অবনিকে বলেছিল যদি তুমাকে না পাই বাচঁবনা সত্যি বলতে মধ্যবিত্তের আবেগ বেশি কথায় আছেনা আসলে তাই। আজ রিহান ধনী হলে অবনির পরিবার খুশি হয়ে মেনে নিত বাট মধ্যবিত্ত তাই অবহেলা করেছে।

কিন্তুু অবনির ভালবাসাটা রিয়েল ছিল। একদিন দুজনে ডিসাইড করলো পালিয়ে যাবে তাই করলো। কলেজের নাম করে অবনি পালিয়ে যায় রিহানকে নিয়ে। কিন্তু পালিয়েত গেলো এখন যাবে কোথায় রিহানের পকেটে যা টাকা আছে কোনমতে গাড়ি ভাড়াটা হয়েছিল। রিহান তার এক আত্নীয়র বাসায় উঠলো অবনিকে নিয়ে। আর এদিকে অবনির পরিবার যখন জানলো অবনি পালিয়েছে আকাশ ভেংগে পড়লো মাথায়। তাই রিহানের সব আত্নীয়র বাড়ি খোজ নিতে লোক পাঠালো কিন্তু পেলনা।

রিহান অবনির বিয়ে পড়িয়ে দেয় রিহানের এক বড় ভাই। ওখানে কিছুদিন থাকে।এরপর একদিন রিহান কম্পিউটারের দোকানে কাজ নেয় যা টাকা পায় দিনটা কাটে কোনমত। একদিন রিহানের দোকানে এক বড় সরকারী কর্মকর্তা আসে কাজ করাতে।  রিহানের টাইপিং আর কাজের দক্ষতা দেখে সরকারি অফিসে ছোট পোস্টে জব দেয়। যাই হোক একটা আশা ত হলো দিনটা ত কাটবে খেয়ে না খেয়ে তবু অবনি তার হাতটা ছাড়েনি পাশে ছিল। এরপর একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় ছোটখাট আর জবটা ভালই চলছিল ওদের।

এভাবে যেতে যেতে ওদের ভালবাসার প্রদীপ আসে ওদের সংসারে। আর এদিকে একসময় রিহান অবনির পরিবারও মেনে নিয়েছিল।সত্যি মেনে নিয়েছিল কিনা জানিনা। অবনি রিহানকে খবর দিল বাড়ি আসতে আসলো বাড়িতে তারা। কিন্তু অবনির মা এতটা পাষান ছিল যে মিথ্যা বলে অবনিকে বাসায় নেয় আর আটকে রাখে বলে যেতে দিবেনা আর রিহানের কাছে।

অবনি জোর করাতে ওর পরনের কাপড়টা ওর মা খুলে রেখে দেয় বলে আমার কাপড়টা খুলে দিয়ে যা।অবনি শুধু ছল ছল করে তখন তাকিয়েছিল তার মায়ের দিকে। এরপর ওর শাশুরি জোর করে অবনির বাচ্ছাটাকে এভয়শন করিয়ে নস্ট করে ফেলে হসপিটালে নিয়ে। সেদিন এসব কস্টে অনেক কেদেঁছিল অবনি। মনে হচ্ছিল ওর কান্নায় পৃথিবীটাও থমকে গেছে। এরপর রিহান আর অবনি দূরে চলে যায়। এতকিছুর পরও অবনি রিহানকে ভুলেনি ওর হাতটা ছাড়েনি।

নতুন জায়গায় গিয়ে নতুন করে সংসার সাজায় ওরা। কখনো একবেলা খেলে আরেকবেলা না খেয়ে থাকতে হয়েছে। যে জবটা করে বাসা ভাড়া দেওয়া হলে খাওয়া পড়া কস্ট হয়ে যেত বাট অবনি হাসিমুখে মেনে নিত সবকিছু।সত্যিকারের ভালবাসা বুঝি এমোনি হয়। রিহান ছোট জবটা করে যখন বাসায় আসত অবনির জন্য ১০টাকার ফুসকা আর নিয়ে আসতো মনে হত এটাই যেন দামি কোন রেস্টুরেন্টের খাবারকে হার মানায়।

এভাবে রিহানের প্রতিটা কস্টে সুখে দুখে অবনি পাশে থেকেছে। এরপর আবার ওদের কোলজুরে ভালবাসার প্রদীপ আসে। একটু একটু করে সাজিয়ে নেয় রিহান আর অবনির ভালবাসার সংসার। সত্যি বলতে কাউকে কখনো ভালবাসলে তার পাশে থাকুন একদিন সে মানুষটা সব কাটিয়ে উঠবে।সত্যিকারের ভালবাসাগুলো শেষ হয়না শত ঝড় বিপদ আসলেও। ভাল থাকুক পৃথিবীতে সত্যিকারের ভালবাসাগুলো।

Related Posts

15 Comments

মন্তব্য করুন