স্থুলতা প্রতিরোধ করার নতুন লাইফস্টাইল, নিজেকে বদলে ফেলুন

আসসালামু আলাইকুম আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আপনাদের স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন কিছু টিপস দিব।আজকের টিপস পেয়ে ইনশাআল্লাহ অনেক উপকৃত হবেন।

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। কিন্তু স্বাস্থ্য শব্দটির অর্থ নিয়ে আমাদের মধ্যে মত পার্থ্যক্য আাছে।আমরা মোটা হওয়া অর্থাৎ স্থুল হওয়া কে ভালো স্বাস্থ্য বুঝি। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

ভালো স্বাস্থ্য হচ্ছে দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সঠিক অনুপাতের নীরোগ অবস্হা। আবার অনেকে মনে করে বেশি বেশি খেলেই শরীর স্বাস্থ্য ভালো হবে,এটিও একটি ভুল ধারণা। খাবার খেতে হবে নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে যেমন বয়স, ওজন, লিঙ্গ,কাজের ধরণ ইত্যাদি। আমরা আজ স্থুলতার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে জানব।

ব্যাক্তি পর্যায়ে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহন,কিন্তু পর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম না করাকে স্থুলতার প্রধান কারণ হিসেবে চিন্হিত করা হয়ে থাকে।অন্যদিকে সামাজিক পর্যায়ে সুলভ ও মজাদার খাবার, গাড়ির উপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়া এবং উৎপাদন যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারকে স্থুলতা বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করা হয়। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা যেসব কারণকে স্থুলতার জন্য বিশেষভাবে দায়ী করেছেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো।

সফল বিপাক এবং দেহে মেদ সঞ্চয় ও বিস্তারের ক্ষেত্রে গুচ্ছ জিন ভূমিকা পালন করে। স্হুলকায় বাবা-মায়ের সন্তান ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে স্থুলকায় হয়। নিম্ন বিপাক হার এবং জিনগত সংবেদনশীলতা স্থুলতার কারণ হয়ে দাড়ায়।

পরিবারের জীবনযাত্রার উপর স্থুলতা অনেকখানি নির্ভর করে। খাদ্যাভ্যাস পারিবারিক ভাবে গড়ে ওঠে। চর্বিযুক্ত ফাস্টফুড (বার্গার,পিৎজা ইত্যাদি) খাওয়া, ফল সব্জি ও অপরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট (লাল চালের ভাত) না খাওয়া, অ্যলকোহল জাতীয় পানীয় পান করা।

<

বিষণ্নতা, আশাহীনতা, ক্রোধ, একঘেয়েমি-জনিত বিরক্তি, নিজেকে ছোট ভাবা, দুঃখজনক ঘটনাবলী যেমন-শৈশবকালীন শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার,বাবা-মা হারানোর শোক, বৈবাহিক বা পারিবারিক সমস্যা ইত্যাদি অতিভোজনকে উসকে দেয় যার ফলে দেখা দেয় স্থুলতা।

চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে ঠায় বসে থেকে কাজ করা এবং সহকর্মীদের চাপে ফাস্টফুড ও অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া। অবসর সময়ে বাসায় বসে কেবল রিমোট নিয়ন্ত্রিত টিভি দেখা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা, কম্পিউটার গেম খেলার কারণে কায়িক পরিশ্রমের অভাবে স্থুলতা দেখা দেয়। গড়পরতায় নারীর চেয়ে পুরুষদেহে বেশি পেশি থাকে।

পেশি যেহেতু অন্যান্য টিস্যুর চেয়ে বেশি ক্যালরি ব্যবহার করে (এমনকি বিশ্রমের সময়ও), পুরুষ তাই নারীর চেয়ে বেশি ক্যালরি ব্যবহার করে। এ কারণে নারী পুরুষ একই পরিমাণ আহার করলেও নারী দেহে মেদ জমার সম্ভাবনা বেশি থাকে।প্রতিবার গর্ভধারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদেহে ৪-৬ পাউন্ড ওজন বেড়ে যায়।এছাড়া রাতে ৬ ঘন্টার কম ঘুম হলে দেহে হরমোন জনিত পরিবর্তন ঘটে ক্ষুধা বেড়ে যায় ফলে বেশি পরিমাণ খাদ্য গ্রহন করায় স্থুলতার সৃষ্টি হয়।সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকা, সুষম খাদ্য সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব,স্হুলতার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে না জানার কারণে কায়িক স্হুলতার সৃষ্টি হয়।

স্হুলতা থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের সুষম খাবার সঠিক মাত্রায় খাওয়া উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। চর্বিযুক্ত খাবার ও মিষ্টি সমৃদ্ধ খাবার নিয়ন্ত্রিতভাবে খেতে হবে।অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় গ্রহন থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবারের প্রতি লোভ মোটেও ভালো নয়, যখন ক্ষুধা লাগে শুধু তখনই খাওয়া উচিত। নিয়ম মতো পানি খাওয়া উচিত। এছাড়া শারীরিক যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত যদি আপনি ওই সমস্যা প্রতিকার সম্পর্কে না জানেন।

আজ এতটুকুই। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্হ থাকবেন। পরবর্তীতে মানব দেহের আরও রোগ ও রোগের প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব, এজন্য আমাদের সাথে থাকুন।আশা করি এতে আাপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

Related Posts

23 Comments

মন্তব্য করুন