মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অবশ্যই সঠিক খাবারের বিকল্প নেই। আমাদের শরীরের যাবতীয় কাজ করার সময় মস্তিষ্ক থেকেই সংকেত যায় এবং তারপর আমরা কাজ গুলো করে থাকি। মস্তিষ্ক এমন একটি অঙ্গ যা প্রতি মুহূর্তে সকল ধরনের কাজে আমাদের সহযোগিতা করে। এজন্য মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু উপকারী খাবার রয়েছে। যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সহায়তা করে। খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে-
মাছঃ মাছ মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাবার। মাছে বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। মাছে বিদ্যমান ভিটামিন মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভুমিকা রাখে। সামুদ্রিক ছোট মাছ এবং মিঠাপানির বড় মাছ মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী।
কমলা লেবুঃ কমলা লেবু ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ একটি ফল। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের ভারসাম্যহীনতা সহ বিভিন্ন প্রকার অসুখ দূর করতে সক্ষম। ভিটামিন ‘সি’ এর অভাব দূর করার জন্য প্রতিদিন একটি কমলা খাবারের লিস্টে রাখুন।
পালংশাক ও সবুজ শাকসবজিঃ সবুজ শাকসবজি ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘ই’ তে সমৃদ্ধ যা মস্তিষ্কের মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি ও চিন্তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খুবই উপকারী। এজন্য নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খাওয়া মস্তিষ্ক ও স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।
ডিমঃ ডিম খুবই উপকারী একটি খাদ্য। প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ফলে দেহে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ডিমে বিদ্যমান ভিটামিন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বাদামঃ বাদাম আমাদের অনেকেরই প্রিয়। বাদামে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘ই’ ও চর্বি। এজন্য বাদাম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত বাদাম খেতে অভ্যস্ত তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় বেশি। এজন্য আজ থেকেই আপনার খাবারের তালিকায় বাদাম যোগ করে নিন। বাদামের মধ্যে আখরোট সবচেয়ে বেশি উপকারী।
হলুদঃ আমরা বিভিন্ন তরকারিতে হলুদ ব্যাবহার করি। হলুদের বেশ কয়েকটি উপকারী গুণ রয়েছে যা মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী। হলুদে বিদ্যমান কারকিউমিন মস্তিষ্কের কোষের জন্য উপকারী। এমনকি মানসিক ভারসাম্যহীনতা দূর করতেও সহায়ক খাদ্য এই হলুদ।
গ্রিন টিঃ গ্রিন টি (Green Tea) অর্থাৎ সবুজ চা-তে থাকা ক্যাফেইন ও এল-থিয়াইন মনোযোগ বৃদ্ধি করতে ও মস্তিষ্কের উদ্বেগের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে। এজন্য এই বিশেষ উপকারী একটি পানীয়।
চা ও কফিঃ চা ও কফি মস্তিস্কের জন্য বেশ উপকারী। মস্তিষ্ককে সচল রাখতে ও ধক্ষতা বৃদ্ধিতে চা ও কফি অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আলজাইমার্স রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেট প্রায় অনেকেরই পছন্দের একটি খাবার। এই চকলেট-এ বিদ্যমান উপাদান মস্তিষ্কে নিউরন তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও নতুন কোনো বিষয় মনে রাখতে ও মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।
কুমড়ার বীজঃ কুমড়ার বীজে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার ও লৌহ ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্নায়বিক সমস্যা, আলজাইমার্স রোগ, মাইগ্রেনের সমস্যা, বিষণ্ণতা দূর করতে বিশেষভাবে উপকারী। এজন্য এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হলে কুমড়ার বীজ খাবারের তালিকায় যোগ করে নিন আজই।
গাজরঃ চোখের জন্য একটি উপকারী খাবার হলো গাজর। কিন্তু এটা মস্তিষ্কের জন্যও বেশ উপকারী। কারণ গাজরে বিদ্যমান লুটিওলিন স্মৃতিক্ষয় ও মস্তিষ্কের ইনফ্লামেশন কমাতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন ধরনের ডালঃ ভিটামিন বি-৬, বি-৯, লৌহ ইত্যাদি উপাদান রয়েছে ডালে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বেশ উপকারী।
এই খাবার গুলো মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খুবই উপকারী। নিয়মিত খাবার গুলো খেলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে মস্তিষ্কের ভালো উন্নতি লক্ষ্য করতে পারবেন।