অদ্ভুতুড়ে গল্পের আরো একটি পর্ব

বসন্ত শেষ হতে না হতেই শুরু হয়ে গেল গ্রীষ্মকাল। আমি তখনও হাই স্কুলে পড়ি। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি ও বেশ ভালো একটা ঝোঁক ছিল। বন্ধুরা মিলে প্রায়ই কলেজের মাঠে খেলাধুলা করতাম। বড় ভাইরাও আমাদের সাথে যোগ দিত। বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল তাদের সাথে আমাদের। বড় ভাই হিসেবে অনেকটা নিজের আপন ভাইয়ের মতোই মনে হতো তাদেরকে। ছোটখাটো বিভিন্ন কাজে তারা আমাদেরকে ডাকত। আমরা সেই মাঠে খেলাধুলা করতাম তার পাশ দিয়েই চলে গেছে ছোট্ট একটি খাল।

সেবার গরম পড়েছিল বাকি বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। কোন বছরই গরমে খালটি সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে যায় না। কিন্তু সেই বছরই কেন জানো খালটি সম্পূর্ণরূপেই শুকিয়ে গেল। যেহেতু গরম ছিল আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি তাই হয়তো এরকম হয়েছিল। যাই হোক আমাদের মাছ ধরার ইচ্ছা ছিল প্রচন্ড বেশি। ছোটবেলা থেকেই হাত দিয়ে,ছিপ দিয়ে এবং জাল দিয়ে মাছ ধরেছি। কিন্তু কখনো ফস্কা দিয়ে মাছ ধরা হয়নি। আমার বন্ধুরাও অনেকেই এভাবে মাছ ধরেনি। আর যেহেতু আমাদের কারোই কোন অভিজ্ঞতা নেই তাই আমরা আমাদের বড় ভাইদের শরণাপন্ন হলাম। জামিলুর ভাইয়ের সাথে আমাদের বেশ খাতির ছিল। সে এর আগেও ফস্কা দিয়ে মাছ ধরেছে। তার অভিজ্ঞতা এই ব্যাপারে বেশ ভালো না হলেও চলনসই। সবাই মিলে তাকেই ধরলাম এবং রাজি করলাম। সে আমাদেরকে পরেরদিন তৈরি হয়ে আসতে বলল খালে যাওয়ার জন্য। সে তার এক বন্ধুকে নিয়ে পরের দিন চলে আসলো।

আমরা সবাই মোটামুটি লুঙ্গি গামছা নিয়ে হাজির হলাম। এ প্রথমবার ফস্কা নিয়ে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা অর্জন করব বলে। সবাই অনেকটাই আনন্দিত। কিন্তু কথা হলো সেই পরিমাণ বড় মাছ কি পাওয়া যাবে। খালের জাগায় জাগায় কিছু পানি জমে রয়েছে। বড় ভাই আমাদেরকে বললেন যে আমরা যেন আগেই পানিতে না নামি। পানিতে নামার আগে যেন অবশ্যই দেখেনি পানির মধ্যে কিছু আছে কিনা। যদি কোন সাপ টাপ থাকে তাহলে যেন আগেই সতর্ক হতে পারে। যেহেতু খালের চারপাশে প্রচুর জঙ্গল ছিল আমরাও বড় ভাইয়ের কথা মেনে নিলাম। সকাল থেকে শুরু করে দুপুর গড়িয়ে গেল। দুই তিনটা বড় মাছ ছাড়া তেমন কোন বড় মাছ ধরা পড়ল না বড় ভাইদের হাতে। যাই হোক আমরা মাছ ধরতে পেরে খুশি। বেশিরভাগ সময় আমরা হাত দিয়েই মাছ ধরেছি। দুপুরের দিকে যখন আমরা সবাই ক্লান্ত তখন হঠাৎ করেই দেখলাম আমাদের পাশেই একটি ছেলে হাত দিয়ে মাছ ধরার জন্য এসেছে। আমরা মনে করলাম আশেপাশের ই হয়তো হবে। আমাদের দেখাদেখি মাছ ধরতে এসেছে। যেহেতু আমরা কেউই তাকে চিনি না তার সাথে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করলাম না। জামিলুর ভাই বেশ খানিকটা সময় ধরে মাছ ধরেছে। এখন সে বিশ্রাম নিচ্ছে। চিন্তা করছে আর খানিকটা সময় মাছ ধরে চলে যাবে। সে আবার ওই ছেলেটির দিকে প্রথমে দৃষ্টিপাত না করলেও পরবর্তীতে তাকে লক্ষ্য করতে থাকে। ছেলেটি পাতিল হাতে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানি সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতো আর কি যেন লক্ষ্য করতো।

আমরা সবাই মাছ ধরার জন্য এসেছিলাম। তাই আমরা ভাবছিলাম সেও পানির ভেতর মাছই খুঁজছে। কিন্তু জামিলুর ভাই অন্য কিছু আন্দাজ করল। সে দেখল সেই ছেলেটি পানির সামনে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে কিছু বলছিল আর বারবার জায়গা পরিবর্তন করছিল। জামিলুর ভাই একটু কৌতূহল বোধ করলো। ছেলেটিকে তার কাছে ডাকলো। কিন্তু ভাই থেকে খানিকটা দূরে থাকায় ছেলেটি তার ডাকে সাড়া দিল না।ভাই মনে করেছিলেন হয়তো ছেলেটি তাকে শুনতে পাইনি। হঠাৎ করে ভাই লক্ষ্য করলেন জমে থাকা একটু পানির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মাছ উপস্থিত হয়েছে। এত কম পানিতে এত বেশি মাছ থাকার তো কোনো প্রশ্নই উঠে না। ভাই মনে করলেন ওইখানে জমে থাকা পানি হয়তো অনেক গভীর, কাছে গিয়ে দেখতে হয়। যখনই সে কাছে গিয়ে লক্ষ করতে গেল তখনই সে দেখলো ছেলেটি ওইটুকু পানির মধ্যে ঝাঁপ দিয়েছে। বড় ভাই রীতিমত অবাক হয়ে গেলেন। তিনি তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। হতভম্ব হয়ে আমাদের সবাইকে তিনি ডাক দিলেন।

আমরা সবাই যে যার মতো ব্যস্ত আছিলাম। ওই বাচ্চার দিকে অতটা খেয়াল করিনি। বড় ভাই যখন ডাক দিলেন আমরা সবাই সেখানে গেলাম। সে বলল ওই পিচ্চি টা এইটুক পানির মধ্যে ঝাঁপ দিয়েছে। পানির পরিমাণ দেখে আমরা সবাই বিস্মিত হলাম। ওইখানে কোন প্রকার গর্ত ছিল না। আমার পায়ের গিরা পর্যন্ত উঠছিল না পানি। এইখানে কেউ কেমন করে ঝাঁপ দেয় আবার ডুবেও যায়। প্রথমে ভাবলাম ভাই আমাদের সাথে মজা নিচ্ছে। কিন্তু ওই পানির সামনের কাদায় ওই পিচ্চি বাচ্চার পায়ে হেঁটে আসার দাগ তখনও স্পষ্ট ছিল। আমরা সবাই অবাক হলাম। ভরদুপুর ছিল তখন। এই ঘটনা ঘটার পর ভাই ও খানিকটা ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বললেন। বিকালে আবার আমরা সবাই একত্রিত হলাম। সবাই মিলে ওই এলাকার আশেপাশে খোঁজ নিলাম যে কোন বাচ্চা দুপুরে সেখানে মাছ ধরতে গিয়েছিল কিনা। কিন্তু সবাই নাই করল।

কোন বাড়ি থেকেই ওই বাচ্চার সন্ধান পাওয়া গেল না। ভাবলাম যদি কেউ নিখোঁজ সংবাদ হিসেবে মাইকিং করে তাহলে ছেলেটির পরিচয় জানা যাবে। কিন্তু এই ঘটনাটির পরবর্তীতে কখনো ঘটল না। আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু অদ্ভুত ঘটনা মধ্যে এই ঘটনাটি ও একটি।

Related Posts

17 Comments

  1. —#গল্প টা আপনি শেষ পর্যন্ত পড়ুন কান্না আটকে রাখতে পারবেন না বিশ্বাস না হলে পড়ে দেকুন —–
    #নামঃ_বোনের_অবহেলা
    আপু ১০টা টাকা দে তো।
    – কেন?
    – স্কুল যামু।
    – টাকা নাই এখন যা।
    – এমন করিস কেন আপু দে না প্লিজ।
    – বলছি না, নাই এখন ঘ্যানর ঘ্যানর করিস না তো।
    – আপু দিবি কিনা? ( ঠাস)
    – এই নে দিলাম, হইছে এখন?
    – উহুঁ উহুঁ। ..
    কাদতেঁ কাদতেঁ বেরিয়ে গেল ঘর থেকে সোহেল ।
    এই হলো তামান্না আর ওর ভাই। তামান্না পরে
    ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে আর সোহেল পরে ক্লাস ফাইভে। সোহেল সবসময় ওর আপুর সাথে মেলামেশার চেষ্টা করে কিন্তু ওর আপু ওর সাথে এমন ব্যবহার করে। দুজনে সাপ বেজির মতো,, সোহেল ওর আপুর কাছে থাকতে চাইলেও ওর আপু ওকে ঝামেলা মনে করে দূরে রাখে।
    .
    স্কুলে যাওয়ার সময়, #সোহেল ভাবলো আপু তো আমার স্কুলের সামনে দিয়েই কলেজে যায়।
    আমার স্কুলের সামনে দিয়েই কলেজে যাওয়ার রাস্তা, তাই আমি আপুর সাথে যাব।
    সোহেল ওর আপুর ঘরে গিয়ে দেখে ওর আপু রেডি
    হয়ে গেছে কলেজে যাবার জন্য।
    .
    – আপু আপু আমাকে সঙ্গে নিয়ে যা।
    – একা যেতে পারিস না।
    – এতো গাড়ির মধ্যে একা যেতে ভয় লাগে
    তোর সাথে যাব।
    – আচ্ছা নিয়ে যাব, রাস্তায় বেরিয়ে এটা ওটা বাহানা ধরবি তো,সকালের মতো আরেক টা দিব।
    – আচ্ছা চুপ করে থাকবো।
    .
    তারপর সোহেল আর তামান্না বেরিয়ে পড়ে।
    দুজনে চুপচাপ রাস্তা দিয়ে হাটছে।
    তবুও ওদের মাঝে প্রায় ১ হাত ফাকা জায়গা
    বিরাজ করছে। সোহেলের অনেক ইচ্ছে করছে আপুর হাতটা ধরে রাস্তায় চলতে কিন্তু সোহেল ১ হাত ফাক
    দিয়ে যাচ্ছে। আর আপুর কাছে যেতে ভয়
    পাচ্ছে,যদি মাইর দেয়। .
    ওর আপু তো ওকে একটুও ভালবাসে না। সবসময় মারধোর করে। তাই এখন সোহেলের মনে
    সবসময় এক ভয় কাজ করে,,, সেটা হলো আপুর কাছে যাওয়া যাবে না, নয়তো মার খেতে হবে।
    তখন সোহেল বলে,,,
    – আপু একটু কোলে নে না।
    – কিইইইই?? ( চোখ বড় বড় করে রাগি লুক
    নিয়ে তাকালো সোহেলের দিকে)
    – না,,, কিছু বলি নাই।
    .
    সোহেল ভয় পেয়ে আরও একটু দূরে সড়ে যায়। তারপর সোহেল ওর স্কুলে চলে যায় আর ওর আপু
    একটু শান্তি পায়। মনে মনে বলতে থাকে আপদ গেছে।
    . এরপর সারাদিন সোহেল স্কুলে আর তামান্না কলেজে কাটায়। এভাবেই দিন চলছে দুজনের।
    সোহেল পাচ্ছে শুধু ওর আপুর অবহেলা। কোনো সময় একটু ভালবেসে আদর করেনি ওকে।
    সবসময় বকাঝকা আর মেরেই সময় কাটায়
    বাড়িতে ওর আপু।
    . বিকেল ৪ টার ছুটি হয় সোহেলের স্কুল।
    ওর বাসার আশেপাশে ওর কোনো বন্ধু নেই।
    তাই স্কুল ছুটি হওয়ার পর সোহেল

মন্তব্য করুন