অনলাইনে খুব সহজে আয়ের সুযোগ

আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি ইন্টারনেটে আয়ের কিছু দক্ষতা সম্পর্কে আপনাদের সাথে তথ্য শেয়ার করবো।
ইন্টারনেট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে। মানুষ এখন অনলাইনে অর্থ আয়ের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করছে। অনলাইনে আয়ের নানা পথও তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে গেলে কোন প্ল্যাটফর্ম ধরে এগোচ্ছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

পৃথিবী এখন প্রযুক্তির উচ্চ শিখরে অবস্থান করছে । পুরো বিশ্ব এখন প্রযুক্তি নির্ভর । দৈনন্দিন জীবনের একটি ছোট্ট কাজ থেকে শুরু করে বৃহত্তম সকল কাজই চলছে এখন অনলাইনের মাধ্যমে । কেনা কাটা , পড়ালেখা ,অফিস , মিটিং ,ব্যাবসা বানিজ্য সবকিছুই হয়েছে এখন অনলাইন নির্ভর । এরমধ্যে আপনি হয়তো শুনেছেন আপনার আশেপাশে অনকেই অনলাইন থেকে ঘরে বসে টাকা আয় করতেছে। আপনি হয়তো নাম শুনেছেন ফ্রিলান্সিং বা আউটসোর্সিং এর ।

আপনি নিশ্চয়ই অনলাইনে ইনকাম করার জন্য আগ্রহী। সবাই চাই ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে। অনেকে সঠিক গাইডলাইন এর কারনে পারে না আবার কারও ধৈর্য থাকে না। অনলাইন থেকে ইনকাম করতে হলে আপনার প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইন এবং প্রচুর ধৈর্য । তাহলে অনলাইন থেকে ভালো একটা টাকা ইনকাম আসবে।

অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় কয়েকটি ওয়েবসাইট। সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে।

ঘরে বসে আয় করার অনেক সুযোগ রয়েছে।এর মধ্যে কয়েকটি হলোঃ
১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
২. গ্রাফিক্স ডিজাইন
৩. সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম
৪. ওয়েব ডিজাইন
৫. কনটেন্ট রাইটিং
৬. ইউটিউব
৭. পিটিসি
৮. ডেটা এন্ট্রি
এ কয়েকটি মাধ্যম দিয়ে অনলাইনে খুব সহজেই আয় করা যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing):
এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ। যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য অনলাইনে থাকা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের ব্র্যান্ডের প্রচার এবং পাব্লিসিটি করে থাকে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি দুইভাবে আপনার আয় শুরু করতে পারেন। একটি ব্লগ লিখে, অপরটি একটি নিশ সাইট তৈরী করে।
বেশির ভাগ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে সাধারণত আপনাকে দিবে তৈরিকৃত ট্যাক্সট লিংক, ব্যানার এবং ফর্মসমূহ, যেখানে আপনাকে আপনার নিজস্ব কোডটি বসাতে হবে এবং আপনার নিজের ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিতে হবে অর্থাৎ যার মাধ্যমে আপনি ট্রাফিক করবেন।
এইভাবেই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design):
আজকালকার সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি জনপ্রিয় পেশা। এই পেশা শিখে ঘরে বসেই টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এমন একটি প্রযুক্তিগত পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি আপনার মেধা কল্পনাশক্তি ও অভিজ্ঞতার সাহায্যে নতুন কোন দৃশ্যমান ছবি, অবয়ব তৈরী করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে আপনার চিন্তাধারা ও মতামত প্রকাশের ধরন এবং বাস্তবজ্ঞান।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম (Social Media):
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করে। অনলাইনে গ্রাহক টানতে সৃজনশীল আইডিয়া প্রয়োজন। লেখা, পোস্টার, ভিডিওসহ নানা কন্টেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশ ও ভাইরাল করতে পারলে ভালো অর্থ আয় করা যায়।

ওয়েব ডিজাইন (Web Design):
Web Design হলো ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তার একটি টেমপ্লেট তৈরি করা। অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটের কোথায় মেনু বার হবে, কোথায় ইমেজ দিতে হবে, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ দেখাবে, মোবাইল স্কিনে কেমন দেখাবে, এবং কোথায় কি রং ব্যবহার করতে হবে তার একটি রূপ নির্ধারণ করা।
ওয়েব ডিজাইনিং থেকে আয় করার একটি ভাল উপায় হচ্ছে নিজের একটি ডিজাইনিং ব্লগ চালু করা। ব্লগের মাধ্যমে আপনি একদিকে যেমন নিজের ডিজাইনিং সৃষ্টিশীলতা ছড়িয়ে দিতে পারবেন অন্যদের মাঝে, একইভাবে আপনি নিজের করা ডিজাইনকে প্রমোট করতে পারবেন। এমনিক, কখনো কখনো ব্লগের মাধ্যমে নিজের ডিজাইন বিক্রিও করতে পারবেন।

কন্টেন্ট রাইটিং (Content Writing):
কন্টেন্ট রাইটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা, রচনা ও ওয়েব কন্টেন্ট সম্পাদনার প্রক্রিয়া।একে আর্টিকেল রাইটিংও বলা হয়ে থাকে।
আপনার লিখার হাত যদি ভালো হয় তাহলে আপনি অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে লিখে আয় করতে পারেন। অথবা বিভিন্ন কোম্পানী অনলাইনে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে ডিটেইল (Details) লিখানোর জন্য ভালো কন্টেন্ট রাইটার খোঁজে এবং তার বিনিময়ে অর্থ দিয়ে থাকে।

ইউটিউব (Youtube):
অনেক ইউটিউব চ্যানেল বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিতে যায় যে তাদের পণ্যের লিংক তার ভিডিও ডিস্ক্রিপশনে দিয়ে দেবে এবং ভিডিওর মধ্যে তাদের এ পণ্যটির কথা বলতে হবে। যখনই কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে পণ্যটি ক্রয় করেন, সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তখন তিনি কমিশন হিসেবে পেয়ে যাবেন।
ইউটিউব থেকে আয়ের প্রধান উৎস বিজ্ঞাপন। এর অর্থ আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটিকে বিজ্ঞাপন দাতাদের ব্যবহার করতে দেবেন এবং পরিবর্তে আপনি তাদের থেকে টাকা পাবেন। অর্থাৎ আপনার ইউটিউব ভিডিওর শুরুতে বা মাঝে বিজ্ঞাপনদাতারা তাঁদের বিজ্ঞাপন দেখাবেন আর আপনি ইউটিউব থেকে রোজগার করবেন। এছাড়া চ্যানেল মেম্বারশিপ, সুপার চ্যাট, পণ্য বিক্রি, ইউটিউব প্রিমিয়াম ইত্যাদি বিভিন্নভাবেই ইউটিউব থেকে টাকা রোজগার করা সম্ভব।

পিটিসি (PTC):
আপনি কোন ধরনের দক্ষতা ছাড়াই পিটিসি সাইট থেকে আয় শুরু করতে পারবেন। পিটিসি ওয়েবসাইটগুলো থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে শুধু কয়েকটি টাস্ক কমপ্লিট করতে হবে। এটি এত সহজ যে ইন্টারনেট এর সাধারণ জ্ঞান থাকলে যে কেউ এটা করে টাকা আয় করতে পারবে। পিটিসি সাইটগুলি তাদের ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কিছু অ্যাড দেখার জন্য অর্থ প্রদান করে। এই সাইটের বিজ্ঞাপনদাতারা বিভিন্ন ধরণের পণ্য প্রচারের জন্য বা তাদের সাইটে দর্শকদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। আপনি নিয়মিত এই বিজ্ঞাপনগুলি থেকে আয় করতে পারেন।

ডাটা এন্ট্রি (Data Entry):
ডাটা এন্ট্রি হলো কম্পিউটার অথবা যে কোন ডিভাইস দ্বারা কোনো ডাটা কে অন্য একটি ডাটাতে রূপান্তর করা, বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কনভার্ট করা।
যেমন আপনার কাজ হতে পারে কোন অডিও (Audio) শুনে সেটিকে শব্দে (Word) অর্থাৎ এমএসওয়ার্ডে (MS Word) রূপ দেওয়া। পিডিএফ (PDF) থেকে এমএসওয়ার্ডে রূপান্তর করা, স্প্রেডশীট (Spreadsheet) ফাইল সংরক্ষণ করা ইত্যাদি নানা ধরনের কাজ।
সহজ কথায় আপনাকে কাজ দেওয়া হবে একটি ডকুমেন্ট থেকে অন্য একটি ডকুমেন্ট রূপান্তর করা। কোন একটি ভয়েস দেয়া হতে পারে সে ভয়েস থেকে আপনাকে পিডিএফ বা মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডে রূপান্তর করতে হতে পারে। এছাড়াও অডিট এর মত কাজ আপনাকে বলা হতে পারে নির্দিষ্ট কোন শ্রেণীর লোকজনের মেইল অথবা কন্টাক্ট নাম্বার লিড করা।

আপনি চাইলেই উপরের যে কোনো দু-একটি দক্ষতা শিখেই ঘরে বসে ফ্রিল্যান্স ওয়ার্ক (Freelance Work) করে মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

Related Posts