“অনুভূতিশীল মানুষ স্বভাবতই দয়াপ্রবশ”

অনুভূতিশীল মানুষ স্বভাবতই দয়াপ্রবশ। যে, ব্যক্তি অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করে স্নেহ-মমতার হাত বাড়িয়ে দেয়, সেই অপরের জন্য সন্তোষজনকভাবে দয়াপ্রবশ। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া অসাধারণ মানবিকতা প্রদর্শন করে যে অন্যকে আনন্দ দেয় তার চেয়ে সুন্দর সৌম্যতা আর কিছু নেই। অনুভূতিশীল-জ্ঞানী মানুষের প্রকৃত সুখ মুলত এটাই যা সে অন্যের জন্য আপোষ মনে মহান মহানুভবতা দান করে । কারণ যে জ্ঞানী সে জানে যে, ধন সম্পদের সুখ প্রকৃত সুখ হতে পারে না। ধন ঐশ্বর্যের মাঝে সুখ সন্ধান করলে দুঃখ বিনে সুখ পাওয়ার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল।

এজন্য য়ে জ্ঞানী তারা নিজেকে নিয়ে এমন ব্যস্ত হন না যাতে মানুষ এবং মনুষ্যত্ব জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কেননা নিজেকে নিয়ে ব্যাস্তশীল মানুষগুলো অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে না, বরং তারা অন্যের দুঃখের কারণ হয়ে দাড়ায়। আর প্রকৃত বিবেকবান জ্ঞানী মানুষ, অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করে সে কারোর দুঃখের কারণ না হয়ে বরং সুখকর বা, সুখের কারণ হয়ে থাকে। মানুষের জীবনে দুঃখের পরে সুখ আসে, সুখের পরে আসে দুঃখ। জীবন ক্ষণস্থায়ী বটে তবুও জীবনের সৌন্দর্যতা বলতে সুখ, দুঃখ নিয়েই যতটা সম্ভব সাজে।

প্রতিকূলতার অনুভূতি জড়িয়ে থাকা মানসিক যন্ত্রনায় যখন কোন মানুষের বিমূর্তভাব প্রকাশ পায় তখন চুপ চাপ অন্যের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়। আর কারো অসহায়ত্ব প্রকাশ পেলে তাদের মনের কথা,তাদের ভালোলাগা,খারাপ লাগা এগুলো শোনার মতোও কেউ থাকে না। তাইতো দুঃখীদের মনের কথাগুলো মনের মধ্যেই রয়ে যায়। কেউ ইচ্ছা করলেই, সুখকে আকাশ অভিসারী করতে পারে কিন্তু দুঃখ কাতর মানুষেরা না চাইতেই দুঃখকে আকাশ অভিসারী করতে পারে।

তাই বলা যায় যে, এ পৃথিবীতে দুঃখীরাই মানুষ। কারণ তারা দুঃখ কষ্টের কারণে নিজের অন্তরে যায়, দুঃখ পেলে ধনীদের মত ব্যাংকে যায় না, আর দুঃখ বিকিয়ে সুখ আনতে আমেরিকাও যেতে পারে না। সুখ বিমুখ মানুষ গুলো এভাবে নিরবেই তাদের দুঃখ দৈন্যদশার দাসত্ব করে বেড়ায়।অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি ক্ষমতা থাকলেও দুঃখীরা কারোর সামান্যতম সহানুভূতি ও সুখের কারণ হতে পারে না,যেটা তাদের জন্য আরো দুঃখ কষ্টের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

এ জন্য মানুষের প্রতি সদয় সদ্ভাব এবং সহানুভূতিশীল মহানুভবতা প্রদর্শন করা মহৎ কাজ এতটুকু যে আত্মপোলব্ধি করে এবং শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যে তা আদায় করতে পারে না,তার চেয়ে বড় কষ্ট আর কিছু নেই। তবে সামর্থ্যবানদের মধ্য থেকে যারা মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় না, বরং নিজেকে নিয়ে ব্যস্তময় জীবনে যাপিত হয়ে অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে না, এবং সে কারোর সুখ কিবা সান্ত্বনার কারণ হয় না প্রকৃত প্রস্তাবে সে মানুষ হতে পারে না।

মানুষ তো সেই যে, মানুষকে নিজের মত মানুষ মনে করে অন্যের দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে,কারোর দুঃখের কারণ না হয়ে সদয় সদ্ভাব ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়।আর এ জন্যই মানুষ মানুষের জন্য।

কবিতা : –

আঁখি তাঁকে

মুহা. কবির হোসেন

রঙ বাহারি ফুল কুড়িরা
মিলায় রঙের মেলা,
প্রজাপতি তুড় তুড়িয়া
কাটায় নন্দে বেলা।

ফুলে ফুলে অলিকুলে
দোলায় তারা ডানা,
হৃদয় মূলে গুলে আকুল
কে দিলো তার নি জানা।

প্রজাপতির রঙিন পাখা
কি চিত্র ভাই আঁকা?
বেশতো সুন্দর দেখতে থাকা
বিচিত্র তায়-ই রাখা।

মানে না মন হই একলা
যেথা সবে ফাঁকা,
অজানাতে গেলেও এবেলা
তোমাতে রব দেখা।

রোজ বিহনে পাখির ডাকে
জাগি তোর অভাগা,
খোঁজ কি নিবে আঁখি তাঁকে
রাগী না কি দুর্ভাগা।

হিতবাণী : –
” আজ আছি কাল নেই – স্মরণে, শয়নে কিবা মরণে সবের সবাই। “

Related Posts

40 Comments

মন্তব্য করুন