এতোদিন শীতকাল মানেই ছিলো উৎসব এর আমেজ!স্কুল এর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। যার কারণে পরিবারের সবাই মিলে চেষ্টা করে ছুটি ছাটার ব্যাবস্থা করে কোথাও বেড়িয়ে আসার।সেই সাথে কুয়াশা ঘেরা ভোরের সকাল,হরেক রকমের পিঠাপুলির উৎসব,রাতের বেলায় গা গরম করার জন্য ব্যাডমিন্টন খেলা।সত্যি বলতে এই ঋতু কতই না চমৎকার ভাবে কেটে যেতো আমাদের কিছু বছর আগেও!
কিন্তু ২০১৯ এর করোনা ভাইরাস নামক একটি অদৃশ্য শক্তির কারনে আমাদের এই প্রিয় ঋতু টি হয়ে পড়ছে এক আতংকের নাম।ব্যাপার টা যদিও অদ্ভুত তবুও প্রতি বছর এর শেষের দিকে শীত আসার আগে আগে এখন করোনা ভাইরাস এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর আবিষ্কার হচ্ছে এবং সেটি ছড়িয়েও পড়ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এইবার যোগ হলো “অমিক্রন” ভ্যারিয়েন্ট। বরাবরের মতোই এই ভ্যারিয়েন্ট কে পূর্বের সব ভ্যারিয়েন্ট এর থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং ভয়ংকর বলা হচ্ছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এর উত্তপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকা। যার কারণে বিভিন্ন দেশ আফ্রিকার কিছু দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অমিক্রনকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’, ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে।বাংলাদেশ থেকেও এই বিষয় টা তে বেশ কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। অথচ শুরু তেই বেধে গেলো বিপত্তি। বেশ কিছু প্রবাসী মানুষ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে।আমাদের খোদ মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিডিয়া তে বলেন ২৪০ জন আফ্রিকান প্রবাসী বাংলাদেশে ঢুকে পলাতক অবস্থায় আছে অথচ তাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর চাইতে দুঃখজনক আর কিই বা হতে পারে।
গত কয়েক মাসে করোনা আক্রান্ত এর পরিমাণ কমে আসাতে এবং টিকা দেয়ার কারনে অনেকের মধ্যেই করোনা প্রতিরোধী স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে শিথিলতা চোখে পড়ছিল। অনেকের মধ্যেই এই ধারনাও চলে এসেছিলো ভ্যাক্সিন দিলেই আর স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে না,সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে না। কিন্তু এই ধারনাটি কিন্তু একেবারেই ভুল। ভ্যাক্সিন নেয়ার পরেও করোনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং অমিক্রন আসার পরে সেই সম্ভাবনা আরো প্রবল হবে বৈকি!
আমরা প্রতিবারই দেখেছি রাস্ট্রীয় ভাবে অব্যাবস্থাপনার পাশাপাশি আমরা ব্যাক্তিগত পর্যায়েও প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করি নি যার কারণে এর আগের করোনার ভ্যারিয়েন্ট এর আক্রমণ গুলো তে আমরা বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলাম। এবার যেন সেই পরিস্থিতি না হয় তার জন্য আমাদের সবার আগেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে সতর্ক হয়ে পড়া উচিত।স্বাস্থ্যবিধি,সামাজিক দুরত্ত্ব,মাস্ক পরিধান এইসব সাধারণ করোনা প্রতিরোধ কারী ব্যবস্থা গুলো আবারও পূর্বের মতো জোরদার ভাবে পালন করতে হবে। এতে আমার মনে হয় পূর্বের মতো আমরা এইবার ধসে পড়বো না। কিছুটা হলেও রুখে দাড়াতে পারবো অমিক্রন নামক করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর সাথে।
সবাই ভালো থাকবেন এবং সতর্ক থাকবেন।