আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছেন। বর্তমান সময়ে টেকনোলজি আমাদের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রায় আমরা সব সময় পুরনো থেকে নতুন নতুন সম্ভাবনার দিকে ধাবিত হই। আমরা সব সময় চাই উন্নত থেকে আরও উন্নত হতে। আমাদের জীবন যাত্রার গতিকে সহজ থেকে সহজতর করতে। এই কাজের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই আমাদের হাতে থাকা ফোনের মধ্যে ও। টেলিফোনের আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে এর সূচনা ঘটে। এখন আমরা স্মার্টফোনের সময়ে বসে আছি। এই পর্যন্ত চলে আসতে আমাদের পার করতে হয়েছে বেশ দীর্ঘ একটা সময় এবং করতে হয়েছে ব্যাপক পরিশ্রম।
যাই হোক বর্তমান সময়ে আমরা সবাই অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে থাকি। ২০১১ সাল থেকে সর্বপ্রথম এন্ড্রয়েড যাত্রা শুরু করে। আর এখন ২০২২। এইটুকু সময়ের মধ্যে এন্ড্রয়েড বেশ কয়েকটি ভার্শন বাজারে লঞ্চ করেছে। সর্বশেষ ভার্সনটি হল অ্যান্ড্রয়েড ১২। যা লঞ্চ করা হয় ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর। আমরা সবাই চাই আমাদের ফোনটিতে যেন অ্যান্ড্রয়েড এর লেটেস্ট ভার্সন থাকে। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। কারণ আমরা সবাই একই ধরনের মোবাইল ফোন ব্যবহার করি না।
অ্যান্ড্রয়েড হলো একটি অপারেটিং সিস্টেম যা লিনাক্স কার্নেলের একটি মোডিফাইড ভার্শন শুধুমাত্র স্মার্টফোনে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা। এন্ড্রয়েড ভার্সন বাড়ার সাথে সাথে এর মেমোরিতে জায়গা দখল করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আমাদের ফোনের রোম অর্থাৎ ফোন মেমোরির একটি নির্দিষ্ট অংশ কখনোই ব্যবহার করতে পারি না। কারণ সেই অংশ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে ফোনের এন্ড্রয়েড এবং অন্যান্য সিস্টেম ফাইল। এই অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম এবং অন্যান্য বিল্ডার অফ অ্যাপ্লিকেশন আমাদের ফোনের মেমোরি বেশ খানিকটা জায়গা দখল করে থাকে।
আর সময় বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ফোনের কোয়ালিটি ও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে ১ জিবি রেম ও ৮ জিবি রোম এর অ্যান্ড্রয়েড ফোন আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো ছিল এখন সেইখানে এই স্পিকেরফোন অনেকটা ফিচার ফোনের মত হয়ে গিয়েছে। এখন একজন রেগুলার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ইউজার এর জন্য ৩ জিবি রেম ও ৩২ জিবি রোম এর অ্যান্ড্রয়েড ফোন এর কথা চিন্তা করা কল্পনার বাইরে। কিন্তু আমরা যারা এইটুকু সাধ্যের মধ্যেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে ব্যর্থ হয় তাদের অবশ্যই ১ অথবা ২ জিবি রেমের ফোন কিনতে হয়। আর এই সকল ফোনে ব্যবহৃত ফোন মেমোরি তুলনামূলকভাবে কম হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ৮ জিবি ফোন মেমোরির ক্ষেত্রে।
কারণ আমাদের অনেক ফোনেই অ্যান্ড্রয়েডের পুরাতন ভার্সন দেওয়া থাকলেও তা পরবর্তীতে আপগ্রেড করার সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই সখের বসে অ্যান্ড্রয়েড এর নতুন ভার্সন ব্যবহার করার জন্য কোন কিছু চিন্তা না করেই আপগ্রেড করে নেই। তখন শুরু হয় যত সমস্যা। কারণ নতুন অ্যান্ড্রয়েডে আপগ্রেড করার পর দেখা যায় আমার ফোন মেমোরির বেশ খানিকটা জায়গা দখল হয়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এরকম হয় যে ফোন মেমোরিতে যে পরিমাণ জায়গা রয়েছে তা অ্যান্ড্রয়েড আপডেট দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
অথচ অ্যান্ড্রয়েড আপডেট করার অপশন আছে বিধায় আমরা অ্যান্ড্রয়েড আপডেট করি। তারপর ফোন করাই বন্ধ করে দেয়। অ্যান্ড্রয়েড আপগ্রেড করা মানে এই নয় যে আপনার ফোন দিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি কিছু করা যাবে। মনে রাখবেন অ্যান্ড্রয়েড শুধুমাত্র অপারেটিং সিস্টেম। এটি আপনার ফোনের হার্ডওয়ার নয়। আপনি যদি এটি আপগ্রেড করেন এটি আপনার ফোনের চেয়ে উন্নত মানের কোন ফোনের মত কাজ করবে না।
তাই যাদের ফোন মেমোরি তুলনামূলকভাবে কম তাদের অ্যান্ড্রয়েড আপডেট মোটেই করা উচিত নয়। আর যাদের ফোনের রোম মোটামুটি ৩২ জিবি এর উপরে তাদের এন্ড্রয়েড ভার্সন আপগ্রেড করলে তেমন কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। তবুও ফোনে দেওয়া অ্যান্ড্রয়েড টি যদি আপনার ভাল লাগে এবং ফোনকে ঠিকঠাকমতো অপারেট করে তাহলে অ্যান্ড্রয়েড আপডেট না করারই পরামর্শ রইল। বিভিন্ন রকমের ফোন আছে যাদের অ্যান্ড্রয়েড আপগ্রেড করার পর বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমি ব্র্যান্ডগুলোর নাম উল্লেখ করতে চাইছি না। আপনারাই খোঁজ নিলে জানতে পারবেন।
আশা করি পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসবে।
ধন্যবাদ।