ক্রিকেট খেলাই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট টি জনপ্রিয় করার পিছনে যে ঘরোয়া লীগটির সবচেয়ে বড় অবদান সেটি হচ্ছে আইপিএল।যার পুরো নাম ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ।২০০৮ সালে বেশ জামজমক ভাবে এই লীগ টি শুরু হই।যেখানের টীম গুলোর ফ্র্যাঞ্জাইজির মালিক হোন ভারতের বড় বড় ব্যবসায়ী, অভিনেতা, অভিনেত্রী রা।যার কারনে শুরু থেকেই এইখানে টাকার ঝলকানিতে সব হাইপ্রোফাইল ভিড়তে শুরু করে।বর্তমানে তো অনেক ক্রিকেট খেলোয়াড় রা আইপিএল খেলার জন্য নিজেদের জাতীয় টীমের খেলাও ছেড়ে দেন।
২০০৮ থেকে শুরু হওয়া আইপিএল আর কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে এর 15 তম আসর। ইতিমধ্যেই এর নিলাম ঘোষণা করা হয়েছে।নীলামে অন্য আরো বিদেশি ক্রিকেটারের মতো ডাক পেয়েছেন কিছু বাংলাদেশি ক্রিকেটার।চলুন দেখে নেয়া যাক কারা কারা এবারের আইপিএলের নিলামে ডাক পেয়েছেন।
সাকিব আল হাসান– ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই লীগে বেশ কিছু বাংলাদেশি প্ল্যায়ার খেলেছেন। যেমন মাশরাফি বিন মর্তুজা,মোহাম্মদ আশরাফুল,আবদুর রাজ্জাক। কিন্তু কেউ টানা সফলভাবে খেলে যেতে পারেননি একমাত্র সাকিব-আল-হাসান ছাড়া। ২০১১ সালে প্রথম ডাক পাওয়ার পর থেকে টানা প্রতিটি সিজনে ধারাবাহিকভাবে খেলে চলেছেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্স 2012 এবং ২০১৪ সিজনে চ্যাম্পিয়ন ও হয়েছিলো।তাই এবারের নিলামে ও তিনি যে থাকবেন করবেন সেটা এক প্রকার অবধারিতই ছিল। তবে নতুন খবর হচ্ছে এবার তিনি সর্বোচ্চ মৃত্যুর মূল্যে নিলামে অংশগ্রহণ করছেন। তার ভিত্তি মূল্য রাখা হইছে প্রায় দুই কোটি রুপি।
মোস্তাফিজুর রহমান – 2015 সালে আমাদের ক্রিকেটে আমির হয় নতুন এক বিস্ময় বালকের। তার বাঁ হাতের পেসে,কাটারে কুপোকাত হচ্ছিলেন একেরপরে এক বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান রা।তার নামই হয়ে গিয়েছিলো কাটার মাস্টার ফীজ।সেই ফীজ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথমবার আইপিএল এ এসেই চ্যাম্পিয়ন করেন তার টীম কে।এরপর থেকে সেও মোটামুটি প্রতি সিজনে খেলে চলেছে।এইবারের নিলামে তার ভিত্তি মূল্যও বাড়ানো হয়েছে। তার মূল্য রাখা হইছে সাকিবের সসমপরিমাণ ২ কোটি রুপি। বেশ চড়া দামেই বিক্রি হতে চলেছেন এই কাটার মাস্টার বুঝাই যাচ্ছে।
লিটন দাস – মোহাম্মদ আশরাফুল এরপর বাংলাদেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটসম্যান হলেন লিটন দাস। ঘড়োয়া ক্রিকেটে বেশ ধারাবাহিক ভাবে পারফর্ম করে চলেছেন অনেক দিন ধরেই। কিন্তু ন্যাশনাল টীমে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছিলেন না কেন জানি। কিন্তু গত দুই বছরে টেস্ট ক্রিকেটে কিছুটা ধারাবাহিক হতে শুরু করেছেন তিনি। শেষ দুই বছরে টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ৫০ এরো বেশি।এছাড়া টি টোয়েন্টি তেও কিছু ভালো ইনিংস আছে তার।সব মিলিয়েই হয়তো আইপিএল হর্তাকর্তা দের নজরে পড়েছেন তিনি।তার ভিত্তি মূল্য রাখা হইছে ৫০ লক্ষ রুপি।
তাসকিন আহমেদ – মাশরাফির পরে আমাদের আরেকজন পেসার এসেছিলেন যে নিয়মিত ১৪০+ স্পীডে বল করে যেতে পারতেন। কিন্তু মাঝখানে নানা ইঞ্জুরী জনিত সমস্যার কারনে ফর্ম হারিয়ে অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিলেন। জাতীয় দল থেকেও বাদ পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি মনোবল হারান নি।আবার নিজেকে প্রস্তুত করে ফিরে এসেছেন আগের থেকে আরও ভয়াবহ রুপে।পারফরম্যান্স, বোলিং এগ্রেসন এসবের উন্নতিও ছিলো চোখে পড়ার মতো।তারই পুরস্কার হিসেবে এইবার পেলেন আইপিএল এর ডাক। তার ভিত্তি মূল্য রাখা হয়েছে ৫০ লক্ষ রুপি!
শরীফুল ইসলাম – ছিলেন বিশ্বকাপ জয়ী অনুর্ধ ১৯ দলের সদস্য।এরপরই ডাক পেয়ে যান ন্যাশনাল টীমে।ধারাবাহিক পারফর্ম দিয়ে জায়গা স্থায়ী করতেও খুব বেশি করেন নি।গত দুই বছর এ তিনি টি টোয়েন্টি তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল পেস বোলার। উইকেট নিয়েছেন এখন পর্যন্ত ১৭ ম্যাচে ২৩ টি।খুব বেশি পেস না থাকলেও লম্বা হওয়ার কারনে প্রাপ্ত এক্সট্রা বাউন্স আর এগ্রেসন তার মূল শক্তি। এইবার ক্যারিয়ারের শুরুর সময় টা তেই জায়গা পেয়ে গেলেন আইপিএল এর নিলামে।তারো ভিত্তি মূল্য রাখা হয়েছে ৫০ লক্ষ রুপি।
সর্বশেষ সাকিব,মোস্তাফিজ যে এইবার আইপিএল এ দল পাবেন এইটা মোটামুটি নিশ্চিত। এর পাশাপাশি আমি যথেষ্ট আশাবাদী বাকিরাও দল পাবেন। কারণ এইবারের আইপিএল এ দুইটা দল বাড়তি যোগ হয়েছে সাথে অনেক নামকরা বিদেশি প্ল্যায়ার রাও আইপিএল না খেলার ঘোষণা দিয়েছেন। আইপিএল এর মেগা অকশন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারীর ১২,১৩ তারিখ। নিলামে ডাক পাওয়া পাচ ক্রিকেটারদের জন্য রইলো শুভকামনা।
নিউজ সোর্স wisden.com
লিংক- shorturl.at/uxL69