আইসি(IC) নিয়ে নানান খুটিনাটি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত এখন যেই আর্টিকেলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো সেটি হচ্ছে IC বা ইন্টিগ্রেটেট সার্কিট নিয়ে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

আমরা ছোট বেলায় টেস্টার দিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস খুললে অনেক কিছুই দেখতে পারতাম।তখন হয়তো কিছুই বুঝতাম না। তবে এগুলো দেখে কোন কারণ ছাড়াই মজা পেতাম।অনেক কৌতুহল নিয়ে এগুলো দেখতাম আর বোঝার চেষ্টা করতাম যে এগুলো কী, আর কীভাবে কাজ করে?এখন বড় হয়েও আমরা হয়তো সেই জিনিসগুলো সম্পর্কে এখনো শুদ্ধভাবে কিছু জানি না হয়তো যন্ত্রপাতি গুলোর নাম বলে দিতে পারব কিন্তু এগুলো কিভাবে তৈরি কী করে না করে এগুলো স্পষ্টভাবে বলতে পারব না বা আটকিয়ে যাব।তবে যারা টেকনিক্যাল লাইনে পড়াশোনা করেন তারা হয়তো এগুলো নিয়েই Practically অনেক কাজ করেন।
যাইহোক প্রথমেই বলা হয়েছে যে,যেটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে IC বা ইন্টিগ্রেটেট সার্কিট, যার বাংলা অর্থ সমন্বিত বর্তনী।এটি অনেকেই আমরা চিনে থাকি আবার ছোট বেলায়ও এগুলো নিয়ে আমরা খেলতাম।সবাই খেলতো কিনা জানি না,তবে আমার মনে আছে আমি এগুলো নিয়ে খেলা করতাম। এই সমন্বিত বর্তনী অর্ধপরিবাহী উপাদানের উপরে নির্মিত অনেকগুলি আণুবীক্ষণিক ইলেকট্রনিক উপাদানের অত্যন্ত ক্ষুদ্র সমবায় বা বর্তনী, যাকে অতিক্ষুদ্র ও একটিমাত্র খণ্ডবিশিষ্ট যন্ত্রাংশ হিসেবে উৎপাদন করা হয়। এটি আবার অনেকে মাইক্রোচিপ,সিলিকন চিপ নামে চেনেন।এই আধুনিক দুনিয়ায় প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে, যেমন কম্পিউটার, টেলিফোন, গাড়ি, রুটি সেঁকার যন্ত্র বা টোস্টার, বাসা-বাড়ির বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি,ফ্যান ইত্যাদিতে ব্যাপকভাবে এবং বিপুল সংখ্যায় এই সমন্বিত বর্তনী ব্যবহৃত হচ্ছে। সমন্বিত বর্তনীর মূল অংশটি অর্ধপরিবাহী Silicon পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি পাতলা অধঃস্তর। এক-কেলাসবিশিষ্ট সিলিকনে ভেজাল উপাদান ঢুকিয়ে দেয়া হয় তারপর ছড়িয়ে ও মিশিয়ে এটিকে অর্ধপরিবাহী পদার্থে পরিণত করা সম্ভব।এরপর ইলেকট্রন বিম ব্যবহার করে এই সিলিকনের স্তরের উপর বর্তনীর নকশা খাঁজ করে কাটা হয়। সিলিকন স্তরের উপরে বহুসংখ্যক অতিক্ষুদ্র সক্রিয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ ট্রায়োড,ডায়োড, নিষ্ক্রিয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ এবং তাদের মধ্যকার ধাতব আন্তঃসংযোগগুলি সৃষ্টি করা হয়।নিষ্ক্রিয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশগুলো হলো প্রধাণত ধারক ও রোধক।সমন্বিত বর্তনীর ইলেকট্রনিক উপাদানগুলি সাধারণত আণুবীক্ষণিক হয়ে থাকে, এদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না,অর্থাৎ ন্যানোটেকলজি। ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের শিল্পোৎপাদন প্রক্রিয়াতে এটির Base সাধারণত সিলিকনের একটি ওয়েফার।মজার বিষয় এই  একেকটি ওয়েফারে একই রকমের শতশত সমন্বিত বর্তনী সারিবদ্ধভাবে উৎপাদন করা হয়।বোঝাই যাচ্ছে যে কত ছোট আর আণুবীক্ষণিক । ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির উন্নয়ন ও এদের খরচ কমানোর জন্য সমন্বিত বর্তনী বিশাল ভূমিকা রাখছে।এছাড়াও আধুণিক কম্পিউটারের পেছনে এটি ভূমিকা ব্যাপক। এছাড়াও রেডিও, টেলিভিশনসহ প্রত্যেকটি যন্ত্রেই এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।সমন্বিত বর্তনীর সমন্বয় ক্ষমতা অনুযায়ী এগুলিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়:;1)Small Scale Integration  : এতে প্রতিটি চিপে ৫০-এর কমসংখ্যক উপাদান থাকে।

2)Medium Scale Integration এতে প্রতিটি চিপে ৫০ হতে ৫০০-র মত উপাদান থাকে।
3)Large scale Integrationএতে প্রতিটি চিপে ৫শ’ থেকে ৩ লক্ষের মত উপাদান থাকে।

4)  Very large Scale Integration এতে প্রতিটি চিপে ৩ লক্ষের বেশি উপাদান থাকে।

আশা করি IC সম্পর্কে আমরা কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছি। সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন