আমরা কাজ শুরু করার পর মাঝপথে থেমে যাই কেন? এটি রোধের উপায় কি?

আমরা যখন কোনো কাজ শুরু করি তারপর সেটাকে আর ধরে রাখা হয় না। চালানো সম্ভব হয় না। আমথা হার মেনে নেই। একটা সময় পর আমরা হাল ছেড়ে দেই। কেন? কারণ হিসেবে প্রথমত নানারকম অযুহাত দিতে থাকি। এটা হয় কারণ আমরা কাজের প্রতি আগ্রহ, স্পৃহা হারিয়ে ফেলি! হয়তো একটা উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ শুরু করি কিন্তু পরবর্তীতে সেটা আর ধরে রাখা হয় না।

গবেষকরা বলছেন- আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফলাফল পেতে চাই। আর অবশ্যই সেটা ইতিবাচক এবং আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হতে হবে। যদি না হয়, আগে বা পরে কিছু চিন্তা না করেই সাধারণত আমরা কাজের অভ্যাসটা ত্যাগ করে ফেলি। অনেক সময় দেখা যায়, একটা কাজ শুরু করে মাঝপথে থামিয়ে অন্য একটা কাজের দিকে ঝুঁকে পড়ি আমরা। কারণ আমাদের ব্রেন সবসময় নতুন কিছু চায়। পুরনো কাজগুলোর চর্চা করতে করতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

এটা তো গেলো মানসিক কারণ। এখন ব্রেনকে সচল আর কাজের প্রতি আগ্রহী করতে হলে কি করতে হবে?

১। নিজেকে উৎসাহ দিতে হবে।
২। নিজেকে পুরস্কৃত করতে হবে।
৩। বিরতি নেয়া যেতে পারে কিন্তু কাজ থামানো যাবে না।
৪। চাইলে কাজের ধরণ বদলে নেয়া যেতে পারে। নতুন নতুন উপায় যোগ করা যেতে পারে।

বিষয়টা যদি কঠিন মনে হয় তাহলে উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ধরুন কেউ নিয়মিত ব্যয়াম করা শুরু করলো। কিন্তু কয়েকদিন পরই ক্লান্ত লাগতে থাকে। এমনকি সে অনিয়মিত হয়ে যায়। আগের মতো স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ আর সে দিতে পারে না। তাছাড়া ব্যয়াম করার সাথে সাথেই ওজন কমবে না। সময় লাগবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করে যেতে হবে। ব্যয়াম বদল করে হলেও চালিয়ে যেতে হবে।

আরেকটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টাকে ব্যখ্যা করা যেতে পারে। অনেক পড়াশোনা করার পরও পরীক্ষায় প্রথম হতে না পারলে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়া যাবে না। দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থান অধিকার করা মোটেই খারাপ নয়। পড়াশোনার অনেক ক্যাটাগরি আছে।

ক্লাসের রোল ১ যদি স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং ৪র্থ বা ৫ম অবস্থানে থাকা শিক্ষার্থী যদি পরবর্তীতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে তাহলে কার গুরুত্ব বেশি পাওয়া উচিত? কার সনদের এবং যোগ্যতার বেশি মূল্যায়ন হবে? অবশ্যই যার কাছে পিএইচডি ডিগ্রি আছে তার সনদ এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি গুরুত্ব পাবে!

এই উদাহরণ, এত আলোচনার সারমর্ম এই- থেমে গেলে চলবে না। কাজ চালিয়ে যেতে হবে। একটা কাজ শুরু করলে মাঝপথে হাল ছাড়া যাবে না। শরীরচর্চা, পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসা, জীবনযাপন সব ক্ষেত্রেই এটি সত্য বলে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। জোর করে নয়, ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন। সফলতা আসবেই!

Related Posts