খুব ছোট থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আলাদা একটা আকর্ষণ ছিল। যখন ক্লাস ফোর-ফাইভে পড়তাম তখন বিজ্ঞান বইয়ের ব্যতীক্রমধর্মী বিভিন্ন পাত্রের নকশা দেখে মনে হতো, ইস! এরকম পাত্র যদি আমারও থাকতো! আমিও যদি বিজ্ঞানী হয়ে এরকম পাত্রে কাজ করতে পারতাম! দিন দিন আবিষ্কারের নেশা একদম পেয়ে বসলো।
যদিও এখনো তেমন কিছু আবিষ্কার করতে পারিনি, তবে বিজ্ঞান মেলা নামে যে কিছু আছে তা জানতে পারলাম মাদরাসায় আলিমে পড়াশুনার পর। তখন শেরপুর জেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ইদ্রিয়া কামিল মাদরাসায় পড়তাম। শহরে মাদরাসা হওয়ায় সেখানকার ছাত্ররাও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো।
বিজ্ঞান মেলার কথা শুনে শিক্ষকদেরকে বললাম, এই বিজ্ঞান মেলায় আমিও একটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে চাই। তখন শিক্ষকগণ বললেন, যেহেতু হাতে সময় কম, তাই তুমি যদি কালকের মধ্যেই প্রজেক্ট প্রস্তুত করে দেখাতে পারো তবে আগামী পরশু তোমার প্রজেক্টটি দেখে আসবো। যদি তা মনোপুত হয় তবে তার পরের দিনই বিজ্ঞান মেলায় তা উপস্থিত করার পারমিশন দেবো।
যেহেতু আমি তখন নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কারের চিন্তা করতাম এবং তা সযত্নে লিখে রাখতাম, তাই আমার হাতে উপস্থাপনের জন্য অনেকগুলো প্রজেক্ট ছিল। তার মধ্য হতে “পানির উপর দিয়ে হেটে যাওয়ার যন্ত্র” নামক একটি যন্ত্রের প্রজেক্ট তৈরি করে ফেললাম। নির্ধারিত দিনে মাদরাসার সহকারী প্রিন্সিপাল জনাব জাকির হোসেন হুজুর দেখতে আসলেন।
প্রজেক্টটা এমন ছিল যে, তা আকারে একটু বড় হয়ে গিয়েছিল এবং এটি জুতার মতো পায়ে পরিধান করে ১২-১৪ বয়সের হালকা পাতলা কিশোর খুব কষ্টে তা নিয়ে পানির উপর দিয়ে হেটে চলতে পারে। এটা দেখে হুজুরের তেমন পছন্দ হলো না। তিনি বললেন- এটা উপস্থাপন করলে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। যদি এর চেয়ে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারতে তবে অনুমোতি দিয়ে দিতাম। অর্থাৎ এটা আর উপস্থাপন করতে পারবো না।
এখানে বলে রাখা ভালো যে, তিনি প্রজেক্টটি বিকেল বেলা পরিদর্শন করতে এসেছিলেন এবং তা দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি দমে গেলাম না। যেহেতু আমার লিখে রাখা অনেক আইডিয়া আমার হাতে সংরক্ষিত ছিল তাই সেখান থেকে আরও একটি প্রজেক্ট রাতেই নির্ধারিত করে হুজুরকে ফোন দিলাম। বললাম আমি নতুন আরেকটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে চাই যার নাম হবে- “পানির উপর ভাসমান ফসলের প্রজেক্ট”।
তিনি বললেন, যেহেতু হাতে আর সময় নেই তাই তোমার প্রজেক্টটি নিয়ে আগামীকাল মাদরাসায় চলে আস। যদি তা আমাদের বিবেচনায় প্রদর্শনযোগ্য বলে মনে হয় তবে মাদরাসা থেকেই সরাসরি বিজ্ঞান মেলায় উপস্থাপনের জন্য পাঠিয়ে দেবো। আমি পরদিন সকালেই প্রজেক্টটি প্রস্তুত করে তা নিয়ে মাদরাসায় হাজির হলাম। প্রজেক্টটি দেখে শিক্ষকদের পছন্দ হলো।
তারপর সেই প্রজেক্টটি নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই শিক্ষকদের নেতৃত্বে বিজ্ঞান মেলায় গিয়ে উপস্থিত হলাম এবং আমাদের জন্য নির্ধারিত স্টলে প্রজেক্টগুলো প্রেজেন্টেশনের উদ্দেশ্যে সাজিয়ে রাখলাম। তিন দিন ব্যপী অনুষ্ঠানের শেষ দিনে আমার প্রজেক্টটি পরিদর্শক এসে দেখলেন এবং কিছু প্রশ্ন করলেন। যেমন- প্রজেক্টটি বাস্তবে প্রস্তুত করতে আনুমানিক কত টাকা খরচ পড়বে? উক্ত খরচ দিয়ে একজন কৃষক যদি তা তৈরি করেন তবে কি তার লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না? ইত্যাদি। আমি প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলাম।
তারপর সেদিন বিকাল বেলায় বিজ্ঞান মেলার সমাপনী ও বিজয়ীদের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। অসংখ্য ক্যাটাগরিতে বিজয়ীগণের নাম ঘোষণা হচ্ছে। অনেকের ঘোষণা শুনে মনে হলো আমি মনেহয় বাদই পড়ে গেলাম। কিন্তু না! আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার প্রজেক্টের নাম ঘোষণা করা হলো- এবং বলা হলো উক্ত প্রজেক্টটি জীব বিজ্ঞানে দ্বিতীয় বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
ঘোষণাটি শুনে মুহূর্তেই মনটা আনন্দে ভরে উঠলো। আমার শিক্ষকদের চেহারাও খুসিতে উৎফুল্ল হলো। যদিও পূর্বে জানতামনা যে, বিজ্ঞান মেলা বলতে একটা মেলার অনুষ্ঠান হয়, তা সত্যেও প্রথম উপস্থাপন করা প্রজেক্টটি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে দেখে মনে হলো আমার আইডিয়াগুলো একেবারে অর্থহীন নয়।
এরপর আরও বহু আইডিয়া মাথায় এসেছে এবং সেগুলো খাতায় লিখে রেখেছি এবং এখনো রাখছি। তবে সেগুলো আর কখনো বিজ্ঞান মেলায় উপস্থাপনের সুযোগ পাইনি। আমার হাতে এখন প্রায় ১০/১২ খাতা রয়েছে যেখানে বিভিন্ন আবিষ্কারের চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। হয়তো এগুলোর দু’চারটি মানব কল্যাণে অবদানও রাখতে পারে।
কিন্তু সমস্যা হলো আইডিয়াগুলো টেস্ট করে দেখার মতো বা বাস্তবায়ন করার মতো আর্থিক সামর্থ আমার নেই। আমি নিতান্তই গরীব পরিবারের সন্তান। তাই এখন চিন্তা করছি এই আইডিয়াগুলো নিয়ে লেখালেখি করে মানুষকে জানানো উচিত। হয়তো এগুলো অন্য কেউ বাস্তবায়ন করে মানব কল্যাণে অবদান রাখতে পারবে। নয়তো কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমার আইডিয়াগুলো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন।
এই লেখাটির পর পরই নতুন একটি সফটও্য়্যার তৈরির আইডিয়া প্রকাশ করবো, যা তৈরি করতে পারলে মেডিকেলের শিক্ষার্থীগণ উপকৃত হতে পারবে । তাই পরবর্তী লেখাটি পেতে চাইলে কমেন্টে জানিয়ে রাখতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করলাম।
Very informative article..
U R Welcome!
Great
Second Article is Available Now. Please see it.
বেশ ভালো লাগলো
tnx
Good post
Tnk U
Good Idea
Thanks
vlo laglo
Plz see the nex post
Good
গুড…
Tnx
thanks fort those information
Welcome
It’s really wonderful. I really enjoy it
Tnx
Ok
tnx
nice
tnx
সুন্দর পোস্ট
Thanks
Welcom
Good news
আপনাকে ধন্যবাদ
ব্রডব্যান্ড রাউটারে পিং এবং স্পিড সমস্যার সমাধান। https://grathor.com/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a1%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%89%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a6%bf%e0%a6%82/
good
tnx
ভাই সেই..
tnx
gd
tnx
nice post
tnx
nice
tnx
Nice
tnx
nice post
tnx
nice
tnx
Good.
tnx
❤️
Nice
tnx
tnx
দারুন