আমার তিনটি কবিতাঃ অবগুন্ঠিত, অবসাদ, নিরুত্তর

 

 

শুভ রাত্রি। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের কাছে আমার নিজস্ব তিনটি কবিতা যা grathor.com এ পোষ্ট করলাম। তার আগে বলে রাখি যে, কবিতাগুলি বুঝতে আপনাকে সময় দিয়ে পড়তে হবে। তা না হলে বুঝতে পারবেন না। আশা করছি যারা এ পোষ্টটি পড়বেন তাদের সবার ভালো লাগবে।

 

           অবগুন্ঠিত

হৃদয়ের যে নিলীন রহস্যের কাছাকাছি

নিশিদিন আমি একান্ত নিবিড় হয়ে আছি—

সে কি প্রেম নাকি গভীর আবেগ আমার চোখে;

জান কি? নাকি আমি– আমিও মনের নিরালোকে

আবর্তিত হয়ে আছি একা–এক আকাশের মতো!–

যেখানে মেঘের আড়ালে মেঘ অজস্র শত

জিজ্ঞাসার মতো তবু ততোধিক অবগুন্ঠিত হয়ে আছে

অনবদ্য কি হৃদয়ের নির্লিপ্ত ও প্রগাঢ় ভাবনার মাঝে

দ্রুতমান যত স্বপ্ন ক্লান্তি ও বিরহবিষাদ— ইহাদের ভিড়ে

মনে আসে যদিও ঢের দিন এক রূপসীর শরীরে

আমি রঙ–রূপ–রেখা কত খুঁজিয়াছি– দেখিয়াছি

যদিও কতদিন– তবুও অতৃপ্ত হয়ে আছি,

জানি আমি– তোমার অব্যক্ত মনোনিবেশের পরে;

সে কোথায় কতদূরে আজ কোন বিজন প্রান্তরে

মিশে আছে একা–একা সুদূর বৈতরণীর ডাকে?

একবার তবু মনে করেছিল কি সে আমাকে

হে মহাবৈভব?

তোমার শত অগণিত শক্তির মৃদু কলরব

আমি কি পেয়েছি আদৌ হৃদয়ের গহীন বনে?

মনে করে তাই আজ বহিঃপ্রকৃতির চিরনির্বাসনে

প্রেম–প্রত্যয়–স্বপ্ন যেথা আছে নিরবদ্য স্বভাবে–

আস্তীর্ণ হতে চেয়েছি সময়ের সুবিকশিত মনোভাবে।

 

             অবসাদ

জীবনের থেকে বহুদূর পাড়ি দিয়ে

কোনো–এক নয়নাভিরাম সমুদ্রের কিনারে গিয়ে–

নীল ছাতা আকাশের নিচে দাঁড়ায়ে

কয়েকবার সমুদ্রের দ্বিধাদ্বন্দ্বের দিকে তাকায়ে–

হৃদয়ের যে প্রহ্লাদ উপলব্ধ হয় মন আর মননের গভীরে,

অবসাদ সময়ের বেগের থেকে আরো ধীরে

হয়তো–বা শিশিরের ফোঁটার মতো তৃপ্তি পায় তাতে;–

যদিও সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো দিনের ঝড়ের আঘাতে

ক্লান্তি আসে হৃদয়ে নিয়মিত,– তবুও সময়ের কাছে

নিজেকে পরাজিত করে তুষ্ট করে নিতে হয় মাঝে–মাঝে।

 

                নিরুত্তর

সারাটা দিন

পাঁড়াগার জনতার ব্যস্ততার কোলাহলে

কেটে তবু নিস্তব্ধ রজনী–এক

এল বুঝি আবার– আবার মাঘের নিশ্ছিদ্র নির্ঘুমতলে;

চেয়ে দেখি আমি ইতস্তত চারিদিকে

বাইরে আজ কেমন উন্মন হাওয়া আর তার হীম কুয়াশা,

যেন আরো গভীরতর–এক পৃথিবীর স্থান গভীরতা খুঁজে

সম্পূর্ণ আস্তীর্ণ হওয়ার যে–অনুপম প্রত্যাশা

করে চলেছে নিরন্তর– তার মতো আমিও কি

সারাটা দিনের শেষে

সারাটা রাত্রি আস্তীর্ণ হতে চাই? সারাটা রাত্রি? তবে—

হৃদয়ের এ গাঢ় নিস্তব্ধতার মনোনিবেশে এসে

আমি বুঝেছি পৃথিবীর চিরসত্যায়িত সে–সত্যতা;

যার কোনো উত্তর নেই।

কোনো উত্তর নেই।

 

কষ্ট করে এতদূর পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি কোনো লাইন বা শব্দ বুঝতে না পারেন কিংবা বুঝতে কঠিন মনে হয় তাহলে কমেন্ট করুন। আমি রিপ্লাই দিয়ে বুঝিয়ে দিব। ভালো থাকবেন।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন