আর্টসেল! ব্যান্ড জগতে এক জনপ্রিয় নাম।

আর্টসেল! ১৯৯৯ সাল, মাসটা অক্টোবর। চারজন ট্যালেন্টেড ছেলের ইচ্ছে হলো,তারা ব্যান্ড গঠন করবে। তাদের ইচ্ছে মতই শুরু হয় তাদের পথচলা।
ব্যান্ডটির নাম দেওয়া হয় আর্টসেল । প্রথম দিকেই মেটালিকার গানগুলো কাভার করে গন্তব্যহীন পথের দিকে চারজন বালকের যাত্রা শুরু। একে একে শুরু হলো তাদের লাইভ শো করা। গানের গুণে,মানুষের মনে স্পর্শের অনুভূতির মত বিধে গেছে আর্টসেল” নামটি। বাংলার ব্যান্ড মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন কিছু আসার অপেক্ষায় ছিল সবাই।ব্যান্ডের লাইন আপ সেই চারজন বাঘ লিংকন-এরশাদ-সেজান-সাজু ভাই। ব্যান্ডটির চিলে কোঠার সেপাই লিরিকিস্ট রূপক ভাই। কিন্তু তখনই ব্যান্ডটি প্রথম হোচট খায়। রূপক ভাই এর মৃত্যু ছিল হোচটের কারণটা। কিছুদিনের জন্য হয়ত সবাই অনুভূতির দেয়ালে আটকা পরে থাকে। রঙিন কত না সপ্ন ধুসর সময়ে পরে থাকে।কিন্তু কিছুদিন পর নতুন যাত্রা শুরু হয় চার বাঘের টিমের। তখন আর চার বাঘ থাকে না। রুম্মান ভাই যোগ দেয় তখন পাঁচ বাঘের টিম হয়ে যায়। সময় তখন ২০০২ এর মে,সকল দুঃখ বিলাসের অবসান ঘটিয়ে প্রথম অ্যালবাম বের করে আর্টসেল। অ্যালবাম এর নাম দেওয়া হয় “অন্য সময়”। গানগুলো এক কথায় অসাধারণ। প্রথম অ্যালবামের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। সকল কান্ডারিদের হুসিয়ার দিয়ে মেটাল,রক মিউজিক লাভার দের মুখে শুধু আর্টসেল। আবারো সব বাধা ছাপিয়ে ২০০৬ এর এপ্রিল, বের হয় অার্টসেলের ২য় এলবাম।
নাম দেওয়া হয় “অনিকেত প্রান্তর। অ্যালবামের সব গানই বরাবরের মত সবার কাছে পছন্দের। কিন্তু অ্যালবামে একটি গান ছিল, গানটির নাম “অনিকেত প্রান্তর” যেই গান টি আজও অনেক জনপ্রিয়। ১৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড এর গানটি শুনলে আজও শরীরে কাটা দিয়ে উঠে, আজও চোখের এক কোণে পানি জমে থাকে। মানুষের কাছে অন্য মাত্রা পায় আর্টসেল। কিন্তু ২য় বারের মত ধাক্কা খায় ব্যান্ডটি।সেজান ভাই আর সাজু ভাই বিদেশে চলে যায় আর ওইখানে সেটেল।এইভাবে কিছুদিন চলার পর,পুরোদমে ভেঙে পরার আশংকা ব্যন্ডটির।তাও থেমে থাকেনি ব্যান্ডটি। লিংকন ভাই আর এরশাদ ভাই এর উপর ভর করেই আবার পথচলা,কিছু গেস্ট মিউজিশিয়ান দের নিয়ে পারফর্ম করতে থাকে ব্যান্ডটি। এরপর পুরোনো দুই বাঘ সেজান ভাই আর সাজু ভাই আবার দেশে ফিরে ব্যান্ডে যোগ দেয়। পুরো দমে শুরু হয় ৩য় অ্যালবামের কাজ। কয়েক দফায় এলবাম রিলিজের তারিখ ঘোষণা করলেও কথায় কাজে মিল ছিল না।

আর্টসেল আর আগের রূপে নেই। কয়েক দফায় ব্যান্ডটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেই সম্ভাবনার মুখে কালি দিয়ে আবার টিকে থাকার সপ্ন বাড়িয়ে দিয়েছিল।

দুই যুগ পেরিয়ে আর্টসেল শুধু বাংলাদেশের গর্ব না। কলকাতার ব্যান্ড মিউজিশিয়ানরাও বলে আর্টসেল তাদেরও গর্ব. আমরা কেউই কখনো চাইনি আর্টসেল দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাক বা তারও অধীক হোক।শুধু চেয়েছি চারজনের এক আর্টসেল একই থাকুক। এই চারজনই আর্টসেল কে অনন্য মাত্রায় নিয়ে যাক। আমরা যেই কারণে গর্ব করি, তা যেনো শত গুণে বৃদ্ধি পায়।

Related Posts

5 Comments

মন্তব্য করুন