টেন মিনিট স্কুল এবং আয়মান সাদিক। বিগত কয়েক বছরের আমাদের দেশের শিক্ষা এবং ক্যারিয়ার সেক্টরের বেশ পরিচিত নাম।বর্তমানে ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এ মার্কেট লিড করা কোম্পানির নাম বলতে হলে সবাই এক বাক্যে যার নাম নিবে সেটা হলো আয়মান সাদিক এর টেন মিনিট স্কুল।
২০১২ সালে আইবিএ তে ভর্তি হওয়ার পরে টিউশনির পাশাপাশি একটি কোচিং সেন্টারে নিয়মিত ক্লাস নিতেন আয়মান সাদিক। তার পড়ানোর ধরন সবার পছন্দ হই এবং ধীরে ধীরে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে যেটা তাকে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে উদ্ভুদ্ধ করে।
পড়াতে গিয়ে তিনি একটা বিষয় লক্ষ্য করেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বা চাকরি প্রার্থী পিছিয়ে পড়ছেন ঢাকা কেন্দ্রিক উন্নত শিক্ষাব্যাবস্থার কারণে। সবার পক্ষে ঢাকায় এসে একই রকম শিক্ষা নেয়া সম্ভব হই না।তাই দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষেরাও যাতে শহরের উন্নত শিক্ষার সুযোগ টা নিতে পারে তারই চেস্টাই তিনি অনলাইন ভিত্তিক লার্নিং প্ল্যাটফর্ম বানানোর উদ্যোগ নেন।
প্রথমে নিজের টিউশনি এবং কোচিং এর বেতনের থেকে কিছু জমানো টাকা দিয়ে তার স্টার্ট আপ টি দাড় করানোর চেষ্টা করেন।শুরুর দিকে প্রচুর স্ট্রাগল করতে হইছে ওয়েবসাইট দাড় করাতে।ধীরে ধীরে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে তাদের সাথে টাইটেল স্পনসর হিসেবে যুক্ত হই রবি।বাড়তে থাকে স্কুল টির বিস্তৃতি।কোভিড মহামারিতে স্কুল,কলেজ লক ডাউন এর কারনে বন্ধ হয়ে গেলে আরও জনপ্রিয়তা পেতে থাকে টেন মিনিট স্কুল।
দেশসেরা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে তৈরি প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির যেকোনো বিষয়ের ২৫ হাজারের বেশি অধ্যায়ভিত্তিক ভিডিও লেকচার তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই লার্নিং অ্যাপ ব্যবহার করছে ৩০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। ২০২০ সালে ৯০ লাখ নতুন শিক্ষার্থী যুক্ত হয় প্ল্যাটফর্মটিতে। এই সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে টেন মিনিট স্কুল।
অবশেষে ২০২২ সালে টেন মিনিট স্কুল পেলো আরও বড় একটি সুসংবাদ যা তাদের ব্যাবসায়িক যাত্রাপথে আরও সুন্দর করে তুলবে। সেটি হলো এই প্রথম বাংলাদেশি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগ পেলো আয়মান সাদিক এর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল। বিনিয়োগ এর পরিমাণ প্রায় সতেরো কোটি টাকা! এই বিনিয়োগ টি করছেন বিশ্বের শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির একটি ভারতের সেকোয়া ক্যাপিটাল। এ বিনিয়োগের বিপরীতে সেকোয়া ক্যাপিটাল টেন মিনিট স্কুলের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হবে।
এই বিনিয়োগ টি নিঃসন্দেহে টেন মিনিট স্কুল এর জন্য একটি মাইলফলক।ইতিমধ্যেই তারা এই বড় বিনিয়োগ পেয়ে তাদের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এবং তাদের বেশ কিছু বড় বড় প্রজেক্ট কথা জানিয়েছেন।
সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো থ্রিডি ভিডিও তে টপিক পড়ানো, বিভাগীয় শহর গুলো তে টেন মিনিট স্কুল এর ল্যাব,ইংরেজি শিক্ষার জন্য আলাদা এপ বানানো, বিবিএ,এমবিএ কোর্স সবার জন্য উন্মুক্ত করা,আরও বড় বড় ইনভেস্টর দের সঙ্গে কোলাবোরেশান করা ইত্যাদি। নিঃসন্দেহে বেশ আশাব্যঞ্জক সব পরিকল্পনা।
টেন মিনিট স্কুল আশা করছি তাদের এই সফল পথযাত্রা অব্যাহত রাখবে এবং আমাদের ই-লার্নিং সেক্টর কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাবে। শুভকামনা টেন মিনিট স্কুল।