একজন ছাত্রের সততার কাহিনী।

গ্রামের নাম বটতোলি। সেই গ্রামের স্কুলে নাম হাড়িভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে পড়তো হেলাল নামে একজন ছাত্র। সে ছিল একজন কৃষকের ছেলে। হেলাল স্কুলে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতো না। কাউকে মারতোও না। সেই স্কুলের শিক্ষকরা হেলালকে অনেক ভালোবাসত।

কারণ হেলাল একজন ভদ্র ছাত্র ছিল। কিন্তু সেই স্কুলের কিছু ছাত্র আসে যারা হেলালকে হিংসে করতো। আর তারা হচ্ছে, কাশিম, বেলাল, তারেক সহ আরও কিছু ছাত্র। তবে জাদের নাম বলেছি তারা হেলালের উপর অনেক ক্ষেপে আছে।
তাই কাশিম,বেলাল,তারেক একদিন হেলালকে অপমান করার জন্য বুদ্ধি বের করতেছিল। তাদের মাথায় একটা বুদ্ধি ঘুরপাক খাচ্ছিল। তারা সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগানর জন্য বলাবলি করতে লাগলো। অবশেষে সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিলো।

তাদের বুদ্ধিটা হচ্ছে, হেলাল যখন স্কুলে আসবে তখন তার ওপর গোবর ঢেলে দেবে।
তাই তারা পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করলো। সকাল হলো। স্কুলে সবাই চলে আসলো। কিন্তু হেলাল আসলো না। কারণ হেলালের বাবা বিদেশে যাচ্ছে বলে হেলাল তার বাবাকে এয়ারপোটে ছাড়তে গিয়েছিল। তার কারণে কাশিম, বেলাল, তারেকের বুদ্ধিটা কাজে দিলো না।

তারা তিনজনে আবার বুদ্ধি করতে লাগলো। যে, হেলালকে কি করে শিক্ষা দেওয়া যায়। এবার তিন বন্ধু একটা বুদ্ধি বের করলো যে, হেলালের ব্যাগে তাদের বন্ধু রাসেদের খাতা ঢুকিয়ে দেবে।

এবার হেলাল পরের দিন স্কুলে আসলো। আর তিন বন্ধু রাসেদের খাতা চুরি করলো। সেই খাতা হেলালের ব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে দিলো। যখন স্কুলের টিফিন পিরিয়ড শুরু হলো, তখন রাসেদ দেখে তার খাতা নেই। তাই সে তার স্যার হিতেনকে কথাটা জানালো। রাসেদ বলল, “স্যার আমার খাতাটা চুরি হয়েছে”। এই কথা শুনে হিতেন স্যার বলল, “চল তোমাদের ক্লাস রুমে যাই”

এরপর রাসেদ ও হিতেন স্যার ক্লাস রুমে আসলো। ক্লাস রুমে সকলকে ডাকলো। হিতেন স্যার সবাইকে বলল, “রাসেদের খাতা চুরি হয়েছে। কেউ নিয়ে থাকলে তাড়াতাড়ি রাসেদকে দিয়ে দাও। নইলে যার কাছে খাতা পাবো তাকে পানিশমেন্ট দিব”।
এবার ক্লাসের সাবাই বলাবলি করতে লাগলো যে, “কে নিয়েছ তাড়াতাড়ি বের করে দাও, হিতেন স্যারের রাগ তো দেখনি”?

কিন্তু কেউ যখন খাতা বের করতেছিল না, তখন হিতেন স্যার রাসেদকে বলল, “রাসেদ যাও সবার ব্যাগ সার্চ করো, দেখ তোমার খাতা আছে কিনা”।

রাসেদ সবার ব্যাগ সার্চ করতে লাগলো। অবশেষে হেলালের ব্যাগে খাতা পাওয়া গেলো। রাসেদ বলল, “স্যার খাতা পেয়েছি, আমার খাতাটা হেলালের ব্যাগে রয়েছে”। হিতেন স্যার ভাবলো, “হেলাল তো কোনোদিন কারো কিছু না বলে নেয় না, আজ আবার না বলে কেন নিল”।

তাই হিতেন স্যার হেলালকে জিজ্ঞাসা করলো, “তুমি কেন রাসেদের খাতাটা নিয়েছ”। হেলাল উত্তর দিলো, “না স্যার আমি রাসেদের খাতাটা চুরি করিনি! আমার ব্যাগে কেউ খাতাটা ঢুকিয়ে রেখেছে। আমার উপর অনেকে ক্ষেপে আসে”।

হিতেন স্যার মনে মনে বলল,“ হেলালের মতো একজন ভালো ছাত্র এরকম কাজ করতে পারে না”।

তাই হিতেন স্যার বুদ্ধি বের করলো চোরকে ধরার জন্য। হিতেন স্যার সকলকে বলল, “যে খাতাটা রাসেদের পরে হাত দিয়েছে তাকে আমি চিনতে পারব। রাসেদের খাতার উপরে লাল রং ছিল, যেই খাতাটা নেরেছে তার হাতে রং লেগেছে”।

যেমনিই এই কথা কাশির, বেলাল, তারেক শুনল। তখনিই তিন বন্ধু নিজেদের হাত দেখতে লাগলো। আর তখনই হিতেন স্যার চোরকে ধরতে পারলো। তাই এবার তিন বন্ধুকে ক্লাসের রুমে কান ধরে ১০০ বার উঠবস করতে বলা হলো।

তারপর হিতেন স্যার সকলকে বলল, “অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই গর্তে পড়তে হয়”।

তো বন্ধুরা কি বুঝলে?
সকলকে ধন্যবাদ।

Related Posts

19 Comments

মন্তব্য করুন