একটি দুষ্টু ছাত্রের আত্মকাহিনী | দুষ্ট ছেলের গল্প

একটি দুষ্টু ছাত্রের আত্মকাহিনী – ছাত্র হিসেবে আমরা কেউ অনেক ভালো, কেউ মাঝারি টাইপের আবার কেউবা খারাপ। এসবের মধ্যে আরো একটি ক্যাটাগরি রয়েছে। যেটির নাম হচ্ছে দুষ্টু ছাত্রের ক্যাটাগরি। আমি যদি খুব বেশি ভুল না করি তাহলে প্রত্যেক ব্যাচে একজন দুষ্টু ছাত্র অবশ্যই থাকবে। যে দুষ্ট ছাত্রের কথা সব স্যার এবং ছাত্র ছাত্রীর মুখে মুখে থাকবে। আজকে আমি আপনাদের এমন একজন দুষ্ট ছাত্র এর আত্মকাহিনী সম্পর্কে বলবো।

একটি দুষ্টু ছাত্রের আত্মকাহিনী | দুষ্ট ছেলের গল্প

আমি যার কথা বলতে চাচ্ছি সে আর কেউ নয় আমাদের ব্যাচের রাতুল। কমার্স গ্রুপে সবাই তাকে খুব ভালোমতোই চিনে। আর সে তো প্রতিনিয়ত তাকে মনে রাখার মতো বিভিন্ন কাজ করে যায় যার জন্য তাকে কমার্স গ্রুপসহ প্রত্যেক গ্রুপের ছেলে মেয়েরা খুব ভালোমতোই চেনে।

রাতুল ছিল অনেক দুষ্টু একটা ছেলে। সে যেমন দুষ্টু ছিল লেখাপড়াতেও ছিল তেমনই ফাঁকিবাজ। আর সবাইকে হাসাতে সে ছিল একেবারে পটু। ক্লাসে যখন স্যার ঢুকতো তখন সে স্যার থাকা সময় করতো সব ধরনের দুষ্টুমি।  কখনো পাশের ব্যঞ্চে বসা ছেলেদের হাত দিয়ে মাথায় মারতো, কখনো মেয়েদের দিকে কাগজ ছুড়ে মারতো, কখনো ঘুমাতো, কখনো কথা বলতো জোরে জোরে। আর এসব করার জন্য স্যার এর থেকে সে বকাও কম খেত না। আমাদের স্কুলের সবথেকে বেশি কে মাইর আর বকা খেয়েছে সে লিস্ট করলে সবার আগে তার নাম আসবে।

তবে এত মাইর খেয়েও তার পেট ভরতে চায়না। তবুও সে তার দুষ্টুমি ছাড়তে রাজি নয়। অনেকবার তার বাবা মাকেও স্কুলে ডেকে আনা হয়, বাসায় বাবার কাছেও কম শুনতো না। তবে তার খারাপ গুণ এর পাশাপাশি তার এমন একটি গুণ ছিল যেটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। সে যখনই কিছু টাকা হাতে পেতে তখন সে সেগুলো রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষদের নাস্তা বা খাবার কিনে দেওয়ার কাজে ব্যয় করত।

তবে এ বিষয়টা সে কাউকে বলতে না এমনকি আমরা এ বিষয়টা নিয়ে কিছু জানতাম না। সে হাজার কষ্টের মাঝে তার সব কষ্ট দুঃখ গুলোকে নিজের মাঝে লুকিয়ে রাখত, কখনো কাউকে তার কোনো কষ্ট বুঝতে দিত না। এমনকি সে মানুষকে যে সাহায্য গুলো করে তার জন্য কারো কাছে কখনো হাত পাতেনি। যদিও ক্লাসে সে অনেক দুষ্টু ছিল, লেখাপড়ায় ছিল অনেক অমনোযোগী, কিন্তু মনটা ছিল তার বিশাল সাগরের মত।

ক্লাসের সবচেয়ে মনোযোগী ছেলে, যে ক্লাসের ক্যাপ্টেন, সেও কিন্তু এই দিক থেকে রাতুল এর কাছে হেরে গেলো। এমনকি আমরা সবাই হেরে গেলাম। হাজার দুষ্টামি করলেও সে কারো মুখে খাবার তুলতে পারলে খুশি হয়, অন্যকে খুশি করার মধ্যে নিজের খুশিকে খুঁজে পায়।

এটা ছিল আমাদের ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসে সবচেয়ে দুষ্টু ছেলেটার গল্প। আশা করছি ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে মন্তব্য করতে পারেন।

Related Posts

13 Comments

মন্তব্য করুন