একটি ভালবাসার গল্প ইরা

ইরা- তোকে নিয়ে আমার অনেক গল্প। একদিন দুদিনের গল্প না – প্রায় এক যুগের গল্প। তুই তখন গার্লস স্কুলের পাশেই তিনতলার ভাড়া বাসায় থাকতি। গল্পটা সে সময় থেকেই।
তারপর তোর সাথে ষাটগম্বুজ মসজিদের সামনে গাছের চারিদিকে বেদীর গল্প।

সে গল্পের শুরুটা হয়েছিলো ভিন্ন নীরায়। তারপর নীলা বিউটি পার্লারের পাশের বাড়ীটায় রমাদির বাসার স্মৃতিটা আজ ভয়ংকর ছোবল দিয়ে যাচ্ছে পল-অনুপলে।
রমাদির বাসাটা ছিলো তোর আমার সবচেয়ে অন্তরঙ্গ বসবাসের উপন্যাস। সারারাত খুনসুটি আর নির্ঘুম রাত শেষে সকালে আলো ফোটার আগেই গন্তব্যের নাম শুনতেই কী ভীষন কান্না করতি।

চোখ দিয়ে জলের ফোয়ারায় বুকটা ভিজতো।
তারপর কত চন্দ্রভুক অমাবশ্যা চলে গেলো তুই আর পেছনে ফিরলিনা।
ইরা, শেষ দৃশ্য বলতে আমাদের কিছু ছিলো না। ছিলোনা বিরহের কোনো পংক্তিমালা। কি এক আকর্ষনে -কি এক দুর্বোধ্য মোহে তুই দিন বদল করে ফেললি। তাও আবার শ্রীকৃষ্ণের সাথে। তোর ভেতরে আমার বসবাসের নক্ষত্রটি তখন চারমাসের জমজ।
মমতা আপার হাতে তখন ঘর্মাক্ত অপারেশন।

তুই তখন তিননম্বর কেবিনের ভেতর নিথর নিস্তব্দ।
থাকনা এসব মন ভারী হওয়া গল্প।
তোকে আজ কথা দিলাম, সামনে যতগুলি বইমেলা পাবো তার সবকটি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র তুই হবি।
তোর আমার গল্প হয়ে উঠবে এক একটি ইতিহাস।
তোর জীবন বদল করা মানুষের সাথে হিংস্রতা হবে। হবে রক্তক্ষয়ী লড়াই। মৃত্যু দিয়ে শেষ হবে তোর জীবনের গল্প।
খুব বেশী দূরে নয় তোর সাথে প্রখর শত্রুতা শেষে কোন একদিন অষাঢ় দেহ নিয়ে যখন তুই নিশ্চল হবি তখন
বাবলা গাছে খঁই ফুটবে।


বাবলার তখন পাতায় পাতায় কাঁটা।
তোর চোখ তখন ব্রহ্মপুত্র-তোর বুক তখন হিমালয়।
ইরা,
খুব শীঘ্রই তোর আর আমার গল্পগুলো ইতিহাস হতে থাকবে। প্রতিক্ষায় থাকিস।অপেক্ষার কোন ধরাবাধা নিয়ম থাকবেনা তোর। অহমিকার আরেক নামযে ধুকে ধুকে মৃত্যু তা তুই মানিসনি কোনদিন। কোরান-বাইবেল, গীতা-ত্রিপিটক তোর কাছে শুধুমাত্র কাগজে বাঁধানো বই।

কিন্তু সবাই জানে এই বইগুলো কত দামী আর কতটা পবিত্র।
আর লিখবোনা। তোর সাথে কথা হবে গল্পের প্রতিটি লাইনে-প্রতিটি শব্দে-প্রতিটি বর্নে।
ভালো থাকিস
(পূনশ্চঃ জানি তুই আপাতত ভালো থাকবি।)

Related Posts

27 Comments

মন্তব্য করুন