(যারা প্রথম পর্ব পড়েননি এখান থেকে পড়ুন প্রথম পর্ব লিংক) পরেরদিন ইনসিয়া স্কুলে চলে যায়। আর স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখতে পায় তার ভিডিও তে অনেক ভিউজ এসেছে। অনেক লাইক কমেন্ট এসেছে। সে খুশিতে আত্বহারা হয়ে তার মাকে এসব দেখায়। সে বলে মা দেখো আমার ভিডিও তে কতো ভিউজ এসেছে। কতো মানুষ আমার ভিডিও দেখেছে। এবার আমিও সুপারস্টার হয়ে যাব। তখন নাজমা বলেন, কালকে তর বাবা বাসায় আসবে। উনি যেন এই ল্যাপটপ দেখতে না পান। আর কোনো ভাবেই যেন টের না পান তুই ইউটিউবে গান গাইছিস। ইনসিয়া বলে প্রমিস বাবা কিছুই জানবে না।
সে দিন রাতে ইনসিয়ার ভিডিও তে আরও ভিউজ আসতে থাকে। হাজার হাজার লাইক কমেন্ট আসতে থাকে তার ভিডিও তে। সবাই ইনসিয়ার কন্ঠের প্রশংসা করছে। পরের দিন সকালে ইনসিয়ার বাবা বাসায় চলে আসেন। আর তিনি এসেই সবার আগে ইনসিয়ার ল্যাপটপ টি দেখতে পান। তখন ইনসিয়ার মা বুদ্ধি করে বলেন আমার বড়ো ভাই ইনসিয়ার জন্য এটা পাটিয়েছে। এভাবে তিনি আজকের মতো ইনসিয়াকে তার বাবার হাত থেকে সামলে নেন। এরপর ইনসিয়ার বাবা বলেন আমাকে আজকেই আরেকটা কাজে বাইরে যেতে হবে। ইনসিয়া এতে খুশি হয়। এরপর তার বাবা চলে যাওয়ার পর আবার বোরকা পড়ে নতুন একটা গান রেকর্ড করতে বসে। এবার এই গানটা সে গায় তার মা কে নিয়ে মেরি পায়ারি আম্মি। আরো আবেগ দিয়ে আরো আত্নবিশ্বাস দিয়ে সে এবার এ গানটা গায়। এরপর এই গানটা ইউটিউবে আপলোড করার পর আগের চেয়েও দ্রুত ভাইরাল হয়। এবং তার গানটি অল্প সময়ে ৩০ মিলিয়ন ভিউ পেয়ে যায়।
আর সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে অমিতাবচ্ছন নিজে এই গানটি তার পেইজে শেয়ার দেন। দিন দিন ইনসিয়ার ফ্যান ফলোয়ার বাড়তে থাকে। সবাই জানতে চায় পর্দার আড়ালে কে এই মেয়েটি। ইনসিয়া স্কুলে গিয়ে দেখতে পায় স্কুলের সবাই তার গান দেখছে। কিন্তু কেউ জানে না এই গানটা ইনসিয়ার। ইনসিয়ার গানের প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়তে থাকে। একদিন তার স্কুলে পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে সে দেখতে পায় পত্রিকায় সিক্রেট সুপারস্টার নামে একটা নিউজ ছাপা হয়েছে। এটা দেখে সে প্রচন্ড খুশি হয়ে ২ ঘন্টার পরিক্ষা ২০ মিনিটে শেষ করে চলে যাচ্ছিলো বাড়ি গিয়ে নিউজ টা ভালো করে পড়ার জন্য। কিন্তু মেডাম তাকে বলে কি বাজে পরিক্ষা দিয়েছো? এখানে তোমার বাবার সই নিয়ে আসবে। ইনসিয়া বলে দুঃখিত মেম, দিন আমি আবার পরিক্ষা দিচ্ছি। কিন্তু মেডাম খাতা ফেরত দেয় না। ইনসিয়া রুম থেকে বাইরে চলে আসে। চইতান ও মেম কে বলে আমার ও পরিক্ষা শেষ। এরপর চইতান ও বের হয়ে ইনসিয়ার পেছন পেছন যায়।
আর ইনসিয়া বাড়ি ফিরে গিয়ে পত্রিকায় নিজের ছবিটা ভালো করে দেখে। তখন সেখানে চইতান চলে আসে। এসে বলে আমি কিন্তু আগে থেকেই সন্দেহ করেছিলাম। ইনসিয়া বলে প্লিজ চইতান এ কথা কাউকে বলিস না। জানাজানি হলে বাবা আমাকে মেরেই ফেলবে। চইতান বলে ঠিকআছে আমি এটা সিক্রেট রাখবো। আর আমার ও একটা সিক্রেট কথা আছে। ইনসিয়া বলে কি কথা? চইতান বলে আমি তোকে ভালোবাসি। ইনসিয়া বলে কি? চইতান বলে তুই সুপারস্টার হয়েছিস এ জন্য না। আমি তোকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করি। ইনসিয়া বলে হয়েছে এখন যা এখান থেকে। চইতান চলে যায় এরপর ইনসিয়া ঘরে গিয়ে দেখে টিবিতে সিক্রেট সুপারস্টার এর নিউজ চলছে। আর ইনসিয়া তার মেইল চেক করে দেখতে পায় সেখানে অনেক এই তাকে ভিডিও মেসেজ পাটিয়েছে। এবং আশ্চর্যের কথা হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে মিউজিক স্টার শক্তিকুমার থাকে একটা ভিডিও মেসেজ পাটিয়েছে। আর সেখানে তিনি তার নাম্বার ও দিয়েছেন। আর তিনি ইনসিয়াকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। এরপর একদিন ইনসিয়ার পরিক্ষার রেজাল্ট বের হয়।
ইনসিয়া তার বাবার কাছে যায় সাইন নেওয়ার জন্য। তার বাবা দেখেন ইনসিয়া পরিক্ষায় ফেইল করেছে। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলেন তোমার গিটারটা নিয়ে এসো। ইনসিয়া ভয়ে ভয়ে তার গিটার টা নিয়ে আসে। ইনসিয়ার বাবা তার প্রিয় গিটার টা তার সামনেই নষ্ট করে ফেলে। এবার ইনসিয়া বলে ফেলে পরিক্ষায় ফেইল করার সাথে গিটার নষ্ট করার সম্পর্ক কি? ইনসিয়ার বাবা এবার আরো রেগে গিয়ে বলে আমার কথার উপর আরেকবার কথা বললে জিভ ছেড়ে ফেলে দিবো। তখন ইনসিয়ার মা এসে তাকে কোনো রকম এ উদ্ধার করে। সেদিন বিকালে তার পরিবার নিয়ে তার এক বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে যাচ্ছিলেন। যখন ইনসিয়ার মা রেডি হয়ে বের হন তখন ইনসিয়ার বাবা বলেন তোমার গলার হারটা পরে এসো সুন্দর লাগবে। ইনসিয়ার মা বলেন সেটা কোথায় রেখেছি ভুলে গেছি।
ইনসিয়ার বাবা বলেন তাড়াতাড়ি খুঁজে বের করো। আমি অপেক্ষা করছি। ইনসিয়ার মা এমনি আলমারিতে হার খুজতে যান। অনেক সময় পার হয়ে যায় তিনি হার খুঁজে পান না। ইনসিয়া এবার সব বুজতে পেরে সে তার মার কাছে এসে বলে তুমি আমার ল্যাপটপ কিনতে অই হারটা বিক্রি করে দিয়েছো তাই না? এখন বাবা জানতে পারলে কি হবে তোমার? তখনি দেখা যায় আলমারির সামনে ইনসিয়ার বাবা দাড়িয়ে আছেন। উনি সব শুনে ফেলেছেন। উনি প্রচন্ড রেগে ইনসিয়ার মাকে চড় মারেন। আর ইনসিয়া কে বলেন সিয়াম কে নিয়ে বাইরে যাও। ইনসিয়া বলে বাবা আম্মুর কোনো দুষ নাই। আমি ল্যাপটপ এর জন্য জিদ ধরে ছিলাম। ইনসিয়ার বাবা বলেন তোমাকে যা করতে বলেছি তাই করো।
গল্পটি ভালো লাগলে পরবর্তী পর্ব পড়তে বেশি বেশি করে শেয়ার করুন।