একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গঠনের উপায়

আমরা সকলেই চাই একটি সুন্দর জীবন লিড করতে এবং এটাও  চাই জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আসুক সফলতা;কিন্তু আমাদের একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গঠনে এবং সফলতার পেছনে প্রতিবন্ধকতা কী? আমরা কেনইবা ব্যর্থ? কেনইবা  অসফল?  এবং একসময় জীবনের প্রতি ঘেন্না ও বিতৃষ্ণ হয়ে দেশ, সমাজ ও ভাগ্যকে দোষারোপ করছি অথচ  আমরা কি  কখনো এটা ভেবে দেখেছি যে এই ব্যর্থতা, অসফলতার পেছনে প্রধান দায়ী আমরাই!

আসুন আর কথা না বাড়িয়ে কীভাবে একটি সুন্দর সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে পারি সে বিষয়ে আপনাদের সুপরামর্শপূর্বক কিছু দিক নির্দেশনা দিবো। আশা করি এতে উপকার বৈ কারো ক্ষতি হবে না।  আমি প্রথমেই চিহ্নিত করব, আমাদের জীবনে ক্যারিয়ার গঠনের পথে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেসব বিষয়ে। শুধু তাই নয়, কীভাবে এই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে একটি সুন্দর সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে পারি এর সমাধানও দিবো ইনশাআল্লাহ।  

ক্যারিয়ার গঠনের পথে প্রতিবন্ধকতা ও তার প্রতিকারের উপায়: 

১. অপরিণত বয়সে রিলেশনশিপে যাওয়া: অবাক হলেন তাই না? কেন প্রথমে ‘প্রেম’কে টেনে এনেছি আপনি হয়তো ভাবছেন। আমাদের ক্যারিয়ার গঠনের অন্যতম এবং প্রথম সোপান হলো ‘কিশোর’ ও তরুণ বয়স। এই বয়সেই প্রেমে পড়ার ভূত মাথায় চেপে বসে; আর এই ভূতকে যে মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে তার ক্যারিয়ার গঠনের পথ কিছুটা সুগম হয়েছে।  মনে রাখবেন, ভুল প্রেমে জড়িয়েছেন কী মরছেন! সুতরাং সাবধান! যাই করবেন শতবার ভেবেচিন্তে করবেন৷

২. লক্ষ্য স্থির না করা: আমাদের জীবনের আরো একটি অন্যতম অধ্যায় হলো : লক্ষ্য স্থির করা; কিন্তু অধিকাংশ তরুণ-তরুণীরা তাদের লক্ষ্য স্থির করতে ব্যর্থ। তাই আমরা প্রথমেই আমাদের লক্ষ্য স্থির করব আমরা কী পারি?  কী করতে চাই?  তারপর সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।  

৩. দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে থাকা:  আমাদের ক্যারিয়ার গঠনে কোনো একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন না করা৷ বর্তমান বিশ্বে, আপনাকে কোনো না কোনো বিষয়ে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করতে হবে নতুবা গভীর কুয়োর পতিত হবে একসময় যার থেকে ওঠে আসার পথ এটাও সহজ নয়।

. ভাষাগত দক্ষতা না থাকা: কেউ কেউ আছেন বাংলা ভাষায় কিংবা ইংরেজিতে দক্ষ; আবার কেউবা দুটোতেই পারদর্শী; আবার কেউবা দুটোর একটিতেও ভালো নয়। এখন আপনিই পার্থক্য করুন কে বেশি এগিয়ে, নিশ্চয় বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়  পারদর্শী ব্যক্তি৷

৫. সময় ও অর্থ অপচয়: আমাদের জীবনের কিশোর ও নবীন তরুণ অবস্থায়ই কোনোরকম বাছ-বিচার ছাড়াই বেহুদা অর্থ অপচয় করে থাকি; যার ক্ষতির দিকটা আমরা বিপদে বুঝতে পারি। এছাড়াও আমরা ‘ সময়’কে মূল্য না দেওয়ার কারণে পরবর্তী সময়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের জীবনে এসে পড়ে।  

কখন থেকে কর্মমুখী/কারিগরি শিক্ষা অর্জন করব? এসএসসি /এইচএসসি পাসের ( জেনারেল শিক্ষা)  পরপরই এমসএস ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইনে শিখতে পারি। বর্তমান চাকরির বাজারে এগুলোর চাহিদা ব্যাপক। সবাই-ই যে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, বিসিএস ক্যাডার, শিক্ষক হবেন এমনটা নয়; তাই আমি মনে করি বসে না থেকে বরং অবসর সময়ে উপরোক্ত কাজগুলো শেখা। এতে যেমন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন হয় তেমনি ইনকামের পথও সুগম হয়৷   

সফলতা কী মূলত আমরা তা-ই বুঝি না।  সফলতার সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম। আপনি জীবনে কী করতে চান? বা কী হতে চান?  আর তা-ই যদি করতে  পারেন বা হোন তাই হলো সফলতা।  

প্রিয় বন্ধুগণ,    মনে রাখবেন জীবনে চলার পথে আপনার অনেকেই সমালোচনা করবে। আপনার ব্যর্থতাকে পুঁজি করে আপনাকে কথার আঘাতক জর্জরিত করতেও কুণ্ঠাবোধ করবে না সমাজের মানুষ৷ সমালোচনাকে সাদরে গ্রহণ করে আপনি আপনার লক্ষ্যে এগিয়ে যান। আর হ্যাঁ, একটি সুন্দর জীবন গঠনে জ্ঞান-দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কোনো বিকল্প নেই। তাই দক্ষতা অর্জন করুন এবং একটি সুন্দর জীবন গড়ুন।   পরিশেষে বলব, উপরোক্ত দিকগুলো যদি আমরা পাশ কাটিয়ে সঠিক পথ জীবনে এ্যাপ্লাই করতে পারি তাহলেই আমাদের জীবন হবে সুন্দরতম।   বি. দ্র : এটি আমার প্রথম পোস্ট তাই ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করি। যদি আমার আমার এই লেখা আসবে কারো জীবনে একটুও উপকারে আসে তবেই আমার লেখার সার্থকতা মনে করব।  

Related Posts

10 Comments

  1. বাংলাদেশে বর্তমানে তরুণ- তরুণীরা আগের তুলনায় এখন পড়াশুনা করতে অমনোযোগী ।
    অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এখন ইন্টারনেটে ফেইসবুক,টিকটক,ফ্রি ফায়ার গেম,পাবজি গেমে দিন দিন মনোনিবেশ বেড়েই চলছে ।
    এতে তাদের একগুঁয়েমি আচরণও মারাত্মক ক্ষতি করছে পরিবারে,সমাজে ।
    অনেক অভিভাবক তাদের কাজকর্ম বা ব্যবসায়িক কাজের জন্য সঠিকভাবে খেয়াল রাখতে পারছেন না ।
    ফলে সেসব শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বই পড়া এড়িয়ে চলছে ও জ্ঞান অর্জন করতেও তারা পিছিয়ে পড়ছে ।
    অনেক শিক্ষার্থী এসব প্রযুক্তির ব্যবহারে একদিকে বিনোদন পাচ্ছে, অন্যদিকে পরিবারের অর্থও অপচয় করছে ।
    কিছু ব্যবহারকারী এসবের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করলেও,মূলত আলোর পথ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে ।
    এখনই উপযুক্ত সময়, সকল অভিভাবক ও প্রশাসনের সজাগ থাকার, তাদেরকে বুঝিয়ে -শুনিয়ে পাঠ্য বইয়ের দিকে মনোনিবেশ করানো ।নচেৎ, অচিরেই এই তরুণ প্রজন্ম অন্ধকারে ডুবে যাবে ।
    অনেক শিক্ষার্থী নোংরা রাজনীতি ও নোংরা পরিবেশে চলছে নোংরা মন মানসিকতার সঙ্গ পেয়ে ।
    পরিবার প্রধান,সমাজ প্রধান ও দেশ প্রধান সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি ।
    সকল শিক্ষার্থীদের বই পড়ার দিকে ঝুঁকিয়ে পড়তে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি এবং সুন্দর জীবন ও ভবিষ্যৎ কামনা করছি ।।

মন্তব্য করুন