ওয়ানডে ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে অবসর নিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

যদি প্রশ্ন করেন যে বাংলাদেশ ক্রিকেট এর অপর নাম কি? তাহলে আমি নির্দ্বিধায় বলে দিব বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপর নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা। যার হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট হাটি হাটি পা পা করে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তবে যদি আমি ফ্লাশব্যাকে ফিরে যাই তাহলে চলে আসে ১৯৯৭ সালে অধিনায়ক আকরাম খান এর হাত ধরে আইসিসি ট্রফি জেতা। মূলত তারপর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট এর পথচলা শুরু। আবার যদি প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবথেকে সফলতম অধিনায়ক কে? তাহলে সেখানেও নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায় তিনি আর কেউ নন তিনি হচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আপনি যে শুধু আবেগের বশে বলে দিবেন যে তিনি সেরা তা কিন্তু নয়। পরিসংখ্যান ও তার পক্ষে কথা বলে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক হিসেবে তিনি সবার উপরে আছেন। এখন পর্যন্ত অধিনায়ক হিসেবে 85 ম্যাচে 49 টি ওয়ানডে জয় করেছেন। এরপরে একে একে আছে সাকিব আল হাসান, হাবিবুল বাশার, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ আশরাফুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই ক্রিকেট মহলে একটা গুঞ্জন উঠেছিল যে মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিবে। আজ সেই গুঞ্জনই সত্য হয়ে ধরা দিল। আজকের দুপুর একটার দিকে মাশরাফি সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক হিসেবে যে নিজের শেষ ম্যাচ খেলবেন তা সবাইকে অফিশিয়ালি জানিয়ে দেন। কথাটা অনেকটা অপ্রত্যাশিত ছিল। এটা বলাই যাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দুইটিতে জিতে আগেভাগে সিরিজ জয় নির্ধারণ করে রেখেছে বাংলাদেশ দল। তবে কে জানত যে লাস্ট ওয়ান ডে তে মাশরাফি এমন একটা খবর দিবেন। এমন খবর শোনার পর ক্রিকেটমহলে বেশ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। কেউ কেউ বলছেন এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অনেক ভালো একটা দিক আবার কে কে বলছেন যে তাকে এখনই ভাবে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে সব কথা থাকবেই এটাই স্বাভাবিক। মাশরাফি আরো বলেছেন যে আমার পরে যে অধিনায়ক থাকবে তার জন্য আগাম শুভকামনা রইল। আমি অধিনায়কত্ব ছাড়ছি ঠিকই কিন্তু খেলাটা এখনই ছাড়তে চাই না। খেলাটা এখনো চালিয়ে যেতে চাই। বোর্ড কর্মকর্তারা যদি মনে করেন যে আমাকে দিয়ে কোন খেলানো যাবে তাহলে আমি চেষ্টা করবো এখনও বাংলাদেশ দলকে ঠিক আগের মতই সার্ভিস দিয়ে যেতে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের আরো কিছু জবাব তিনি খুব সফলভাবে এড়িয়ে যান। তার সাথে বোর্ড কর্মকর্তার কোন ঝামেলা আছে কিনা অথবা হয়েছে কিনা বা তার থেকে তাকে কোন পেশার সৃষ্টি করা হচ্ছে কিনা তার কিছুই তিনি বলেন নি। আসলে তিনি যে কতটা পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন তা অনেক আগে থেকে সবাই জানে। তিনি শুরুটা ঠিক যেভাবে করেছিলেন তার চেষ্টাও সেভাবে করতে চান। তবে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার পর তাকে নিয়ে যে আলোচনা সমালোচনা হয়েছে তাতেও তিনি তেমন কর্ণপাত করেন না। আসলে তার পক্ষে এটা সম্ভব যারা সত্যিকার অর্থে নায়ক তারা কখনো পেছন ফিরে তাকান না। তবে সব শেষে এটা বলাই যায় যে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের যে একটা সূর্য উদিত হয়েছিল তা অনেকাংশে ফিকে হয়ে যাবে। হয়তো তার পরেও আরো অনেক অধিনায়ক আসবে যাবে। মাশরাফি ঠিক একজনই। তার জায়গা কেউ দখল করতে পারবে না। বাংলাদেশের মনে একজন থেকেই যাবে যে কলার উঁচু করে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে বলবে হ্যাঁ বিজয় আমাদের হবেই। আপনি আজীবন রয়ে যাবেন বাঙালির হৃদয়ে।

Related Posts

18 Comments

মন্তব্য করুন