কম্পিউটারের জন্মের ইতিকাহিনী এবং কম্পিউটারের প্রজন্মের বংশবিস্তার

কম্পিউটারের আবির্ভাব ও বিস্তারলাভের ইতিহাস

বিজ্ঞানীদের বদ্ধমূল ধারণা মতে, যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৩,৫০০ বছর পূর্বে প্রাচীন ব্যাবিলীয়ানরা বিভিন্ন রেকর্ড সংক্ষণের জন্য ক্লে ট্যাবলেট ব্যবহার করতাে। হিসাব নিকাশের জন্য গণনার কাজে মানুষ নিজের হাতের আঙুল ব্যবহার করেছে । নুড়ি, ছােট ছােট কাঠি, দড়ির গিঁট ইত্যাদি ব্যবহার করে ঠিক রেখেছে হিসাব-নিকাশ। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০ বছর আগে মানুষ এ্যাবাকাস যন্ত্রের ব্যবহার করে। বলা যায় এটাই প্রথম সংখ্যাভিত্তিক বা ডিজিটাল গণনা যন্ত্র। চীন দেশে প্রথম এ্যাবাকাস যন্ত্র আবিষ্কার হয়। জাপানে এ যন্ত্রের নাম সরােজন’।

                                                                                                অ্যাবাকাস মেশিন

মুলত এ্যাবাকাস হলাে আয়তাকার একটা কাঠামাে। এর মধ্যে কতগুলাে তার আড়াআড়ি বসানাে থাকতাে। প্রতিটি তার আবার দুটো অংশে ভাগ করা। উপরের অংশে দুটো করে আর নিচের অংশে পাচটা করে পুঁতি থাকতাে। উপরের প্রত্যেকটি পুঁতির মান ৫ আর নিচের প্রত্যেকটি পুঁতির মান ১। প্রতিটি তার আবার একক, দশক, শতক, হাজার বােঝায় । গণনা কাজে ঠিক সংখ্যার পুঁতি উপরের দিকে ঠেলে দিতে হতাে। ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি গণিত বিশারদ প্যাসকেল সহজে গণনা করার জন্য ‘প্যাসকেলাইন’ নামের একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। ধারণা করা হয়, এটি পৃথিবীর সর্বপ্রথম ক্যালকুলেটর । এরপর ২০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ১৮৩৩-৩৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ যে ধারণা দেন, আধুনিক কম্পিউটার সে অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়। তাই চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। তিনি তার ধারণা অনুযায়ী তিনি নিজে কম্পিউটার তৈরি করে যেতে পারেন নি। তবে তা পরবর্তীতে বাস্তবে রূপ লাভ করেছে।

                                                                                                           অ্যালান টিউরিং

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী অ্যালান টিউরিং আধুনিক কম্পিউটারের গঠন কী রকম হওয়া উচিত, কেন এ রকম হওয়া উচিত, এটির কর্ম ক্ষমতা কত দূর এবং কোথায় এর দুর্বলতা তার একটি সার্থক মডেল তিনি বিজ্ঞানীদের সামনে তুলে ধরেন। আজকের কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের মাঝে টিউরিং-এর মেশিন (Turing Machine) নামে সমধিক প্রচলিত। অ্যালান টিউরিং-এর কম্পিউটার মডেলের বাস্তব রূপ দিলেন ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী কনরাড জুস। তিনি আবিষ্কার করেন জেড-ওয়ান (21) নামক প্রথম প্রােগ্রাম চালিত যান্ত্রিক কম্পিউটার। সে বছর প্রথম ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটারের আদি রূপ তৈরি হয় ড. ভিনসেন্ট অ্যাটাফ এবং ক্লিফোর্ড বেরি নামক দুই মার্কিন বিজ্ঞানী কর্তৃক । তাদের নামানুসারে ঐ কম্পিউটারের নাম দেওয়া হয় অ্যাটাসফ বেরি কম্পিউটার সংক্ষেপে (ABC)। ১৯৪০-৪১ খ্রিস্টাব্দে জন মসিল নামক এক বিজ্ঞানী (ABC)-কে আরাে উন্নত করার জন্য আমেরিকার সামরিক বিভাগের ব্যালিস্টিক রিসার্চ ল্যাবরেটরিত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আবিষ্কার করলেন ‘এনিয়াক’ (ENIAC) নামক কম্পিউটার যার ওজন ছিল ৩০টন এবং আকৃতি ছিল ৩টি বিশাল ঘর জুড়ে । এনিয়াক-ই ছিল পৃথিবীর প্রথম পুর্ণাঙ্গ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার। আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কার হয় ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে। আর কম্পিউটারের ব্যাপক প্রচলন আরম্ভ হয় ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের পর প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কম্পিউটার বাজারজাত করা হয়। প্রথম যুগের কম্পিউটার ছিল বিশাল বড়। সেগুলাে যিনি আবিষ্কার করেছেন তিনি ছাড়া আর কেউ তা চালাতেই পারতাে না। এবাকাস আবিষ্কারের বহু পরে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ থেকে ৭০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে আবিষ্কৃত হয় ঘড়ি। সেই ঘড়ি কিন্তু নিজে নিজে চলতে পারতাে না। তাকে চালানাের জন্য সহযােগিতার দরকার হতাে। কিন্তু মানুষের আশা যন্ত্র যেন নিজে নিজে চলতে সক্ষম হয়। ১৬৪২ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি বিজ্ঞানী প্যাসকল আবিষ্কার করেন যােগ বিয়ােগ করার একটি যন্ত্র । পাসকলের পিতা ছিলেন একজন সরকারি চাকরিজীবী— তাকে কর আদায়ের হিসাব রাখতে হতাে। ওই হিসাব করার ব্যাপারটি কী যে ঝামেলার এবং কষ্টের! বাবাকে ঝামেলামুক্ত করতে প্যাসকল নামলেন গবেষণায়। অবশেষে তিনি আবিষ্কার করেন যােগ বিয়ােগের যন্ত্র। তিনি তার আবিষ্কৃত যন্ত্রটির নাম দিলেন ‘প্যাসকালিন’। যােগ বিয়ােগ ছাড়াও আরাে অন্যান্য হিসাব করা যায় এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করলেন জার্মান বিজ্ঞানী লাইবনিৎজ। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ কম্পিউটার আবিষ্কারের একশাে বছর আগে কম্পিউটারের মূল সূত্র বর্ণনা করেন। তাই তাকে বলা হয় কম্পিউটারের জনক। তিনি বললেন, যন্ত্রের মাধ্যমে জটিল অংক সহজে করা সম্ভব। তিনি ১৮৩৩ থেকে ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দ অক্লান্ত পরিশ্রম করে আবিষ্কার করলেন এনালাইটিক্যাল মেশিন। এটিকেই পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার বলা যায় । তার এ কম্পিউটারের ছিল তিনটি অংশ। যথা : ১. স্টোর ও বাণ্ডার, ২. মিল বা কারখানা ও ৩. সিকোয়েন্সিয়াল মেকানিজম বা পর্যায়ক্রমিক যান্ত্রিক কাজ। তাছাড়া ব্যাবেজের যন্ত্রে ছিল স্মৃতি। ১০০টি সংখ্যা এতে জমা থাকতাে। এর ১০০ বছর পর হাওয়ার্ড এইকেন যে আধুনিক কম্পিউটার তৈরি করেন তারও ছিল তিনটি উপাদান। যথা : ১. ম্যাগনেটিক কোর, ২, রেজিস্টার ও ৩, প্রােগ্রাম। তিনি এটি করেছিলেন ব্যাবেজকে অনুসরণ করে। ব্যাবেজের ছাত্রী কবি বায়রনের কন্যা এডা বায়রন ব্যাবেজ আবিষ্কৃত কম্পিউটারের জন্য কিছু নির্দেশ রচনা করেন। তাই তাকে ‘পৃথিবীর প্রথম প্রােগ্রামার’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

                                                                                                             চার্লস ব্যাবেজ

অবশ্য কম্পিউটারের ইতিহাসে এর পরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন হার্মেন হলারিথ । যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী প্রতি ১০ বছর অন্তর অন্তর দেশের লােক গণনা করার নিয়ম। ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে লােক গণনার কাজ শুরু করে তা ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দেও শেষ করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দের গণনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার যন্ত্রের সাহায্যে লােক গণনার ইচ্ছে প্রকাশ করে। কিন্তু তেমন যন্ত্র তাে থাকা দরকার। ২৫ বছর বয়সের পরিসংখ্যানবিদ হলারিথ আবিষ্কার করেন তেমনি একটি যন্ত্র। নাম দেন ‘সেন্সস মেশিন’। এটি বিশ্বের প্রথম ডাটা প্রসেসিং যন্ত্র। এ যন্ত্রের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বুঝে হলারিখ ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ট্যাবুলেটিং মেশিন কোম্পানি গঠন করেন। এটি সহ অন্য কয়েকটি কোম্পানিকে একত্রিত করে ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে আই.বি.এম. প্রতিষ্ঠা করা যায়। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাওয়ার্ড এইকেন স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরির কাজে হাত দেন। সে দেশের নৌবাহিনী তাকে এ কাজে সহায়তা করে। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি কম্পিউটার ‘সার্ফ-১’-এর কাজ সমাপ্ত করতে সমর্থ হন।

তবে এই কম্পিউটারটি দৈর্ঘ্য ছিল ৫১ ফুট, উচ্চতা ৮ ফুট। প্রােগ্রামিংয়ের জন্য এতে ছিদ্র করা টেপ ব্যবহার করা হয়েছিল। ভেতরের কাজ ছিল ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক্যালি বা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয়। এ কম্পিউটারের কোনাে স্মৃতি ছিল না। আর তাই এটি দ্বারা কোনাে তথ্য জমা করে রাখা যেত না। প্রথম যে ইলেকট্রনিক্স কম্পিউটার তৈরি হলাে তার নাম এনিয়াক’। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে এটি তৈরি করেন জে প্রেসপার একার্ট জুনিয়র এবং জন ডব্লিউ মকলিকে। মকলিকে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ছাত্র একার্ট জন সঙ্গে নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় এনিয়াক তৈরি করেন। মার্ক- ১’ এর চেয়ে এনিয়াক আকারে বেশ ছােট ছিল। এনিয়াকের ওজন ৩০ টন বা ২৭ হাজার কেজি। দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট, প্রস্থ ২০ ফুট। ১৫০০ বর্গফুট জায়গার দরকার হয়েছিল এটি স্থাপন করতে এর মধ্যে ছিল প্রায় ১৮ হাজার ভ্যাকুয়াম টিউব। প্রতিদিন অন্তত দু হাজার ভ্যাকুয়াম টিউব নষ্ট হয়ে যেত। আর মেশিন চালু রাখার জন্য তা প্রতি মাসেই বদলাতে হতাে। এজন্য ৬ জন কর্মী সব সময় নিয়ােজিত থাকতাে। এনিয়াক প্রত্যেক সেকেণ্ডে ৫ হাজার সংখ্যা যােগ করতে সক্ষম ছিল।

                                                                                        প্যাসকেলিন

১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে জন ভন নিউম্যান এক গবেষণাপত্রে কম্পিউটারে প্রােগামিংয়ের তত্ত্ব প্রকাশ করেন। আগে প্রােগ্রামিংয়ের কাজ করা হতাে তারের সংযােগ খুলে। প্রতিবারে ভিন্নভাবে লাগাতে হতাে। মকলি ও একটি জন ভন নিউম্যানের ধারণার ওপর নির্ভর করে তৈরি করেন এডভাক। এটি অবশ্য পুরােপুরি মেমােরি নির্ভর নয়। পুরাে মেমােরি নির্ভর কম্পিউটার এডসাক তৈরি হয় ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে। কেমব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এটি আবিষ্কার করেন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে মকলি ও একার্ট কম্পিউটার ইউনিভাক তৈরি করেন। এ কম্পিউটারটি প্রথম কোনাে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি হয়। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ইউনিভাক-১’ কিনে নেয় অ্যাপ্লায়েন্স পার্ক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ট্রান্সিস্টর আবিষ্কার হয়। এটি বিদ্যুৎকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি মাধ্যম। কম্পিউটারের উন্নতিতে এই ট্রান্সিস্টরের বিশেষ অবদান রয়েছে।

ট্রান্সিস্টরের সুবিধার পাশাপাশি ছিল বেশ কিছু অসুবিধা। এটি খুব সহজে ভেঙ্গে যেত। প্রায় বাের্ড থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসতাে। তখন বিকল হয়ে পড়তাে কম্পিউটার। ওই সমস্যার সমাধান করতে বিজ্ঞানীরা ভাবনা চিন্তা করতে থাকেন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তারা তৈরি করেন আই.সি. বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট। এর ঠিক ১০ বছর পর কম্পিউটার প্রযুক্তির আরাে উন্নতি হলাে। তৈরি হলাে মাইক্রো প্রসেসর। বর্তমানের একেকটি মাইক্রোপ্রসেসরে ১ কোটির উপরে ট্রান্সিস্টর রয়েছে। কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এর আকারও অনেক কমেছে। আগে যা স্থাপন করতে বিশাল জায়গার দরকার হতাে এক সময় তা আকারে ছােট হতে হতে টেবিলের কোণায় কিংবা হাতে বহন করার মতাে রূপ নিয়েছে। আর এর গতি বা প্রসেসিং ক্ষমতাও বেড়েছে বিস্ময়কর ধরনের।

কম্পিউটারের প্রজন্ম সমূহ-

কম্পিউটারের প্রথম প্রজন্ম ঃ আমাদের এই বিস্ময়কর কম্পিউটারের ইতিহাসকে প্রজন্ম দিয়ে ভাগ করলে প্রথম প্রজন্মের মেয়াদ ধরা হয় ১৯৪৪ থেকে ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এ সময়ের কম্পিউটার কেমন ছিল তা সংক্ষেপে বললে এরকম –

১।ডাটা ঢােকানাের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে পাঞ্চ কার্ড

২।ডাটা ধারনের জন্য ম্যাগনেটিক টেপ

৩। ভ্যাকুয়াম টিউব নির্ভর মেমােরি। তাছাড়া কোনাে কোনােটিতে মেমােরির জন্য ড্রাম ব্যবহৃত হয়েছে

৪। কম্পিউটারের গতি ছিল খুবই ধীর

৫.।একবারের মাত্র একটি প্রােগ্রাম চালানাে যেত

৬। মার্ক-টু’, ‘এনিয়াক’, ‘এড়সাক’, ‘এডভাক ইউনিভাক’ ইত্যাদি এ জনের কম্পিউটার

৭।দাম ছিল একেবারে আকাশ ছোঁয়া। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে একটি ইউনিভাক কম্পিউটারের দাম ছিল ৫ লক্ষ মার্কিন ডলার

৮। প্রতিটি কম্পিউটার ছিল খুব বিশাল আকারের

৯। রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা ছিল কনুনাতীত।

কম্পিউটারের দ্বিতীয় প্রজন্ম : কম্পিউটারের দ্বিতীয় প্রজন্মের মেয়াদ ধরা হয় ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এ সময়কার কম্পিউটার হলাে :

১।ভ্যাকুয়াম টিউবের বিদায় এবং তার জায়গায় ট্রালিস্টরের আগমন

২। মেমােরি হিসেবে তৈরি হয় ম্যাগনেটিক কোর

৩।তথ্য ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয় অপসারণযােগ্য ডিস্ক

৪।কম্পিউটারের আকার ছােট হয়েছে, গতি বেড়েছে এবং দাম অনেক কমেছে

৫।উচ্চ স্তরের প্রােগ্রামিং ভাষার ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পায়।

কম্পিউটারের তৃতীয় প্রজন্ম  :  তৃতীয় প্রজন্মের মেয়াদ হলাে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ৩৬০মেইনফ্রেম সিস্টেম আই.বি,এম, পরিবারে প্রবর্তনের সঙ্গে এ প্রজন্মের আরম্ভ মােটামুটিভাবে এ সময়ে কম্পিউটারের যে রূপ ধরা পড়ে তা হলাে :

১। আইসির ব্যবহার

২।ডাটা ধারণের জন্য ম্যাগনেটিক ডিস্কের ব্যবহার শুরু

৩।মাল্টি প্রােগ্রামিং বা একসঙ্গে কয়েকটি প্রােগ্রামিং করার সুযােগ

৪।১৯৭০ এ মিনি কম্পিউটার চালু হয়

৫হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার আলাদা আলাদাভাবে বিক্রি সিদ্ধান্ত হয়। ফলে সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশ ঘটে ব্যাপক হারে

কম্পিউটারের চতুর্থ প্রজন্ম : কম্পিউটারের চতুর্থ প্রজন্ম হিসেবে ১৯৭১ থেকে চলমান সময়কে ধরা হয়। এ সময়ে কম্পিউটারের উন্নতি সাধিত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। যেমন –

১।১৯৭১ এ টেড হফ মাইক্রোপ্রসেসরের উদ্ভাবন

২। তথ্য প্রযুক্তির অনেক উন্নয়ন

৩। মাইক্রোপ্রসেসরে সম্পূর্ণ একটি সি.পি.ইউ, একটি চিপে আটকানাে হয়

৪। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে এপল কম্পিউটার এবং ১৯৮৩-তে এপল ম্যাকিনটোশ বাজারে আসে

৫।১৯৮১-তে আই.বি.এম পিসির আর্বিভাব৬।

সফটওয়্যারের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন

৭।বিস্ময়কর আবিষ্কার ইন্টারনেটের সংযােজন

৮।কম্পিউটারের আকার অনেক ছােট হয়। কার্যক্ষমতা আরাে বৃদ্ধি পায়। দাম সাধারণের হাতের নাগালে থাকে।

Related Posts

11 Comments

মন্তব্য করুন