কম্পিউটার ভাইরাস একটি ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম। কম্পিউটার ভাইরাস বাহিরের উৎস থেকে কম্পিউটারের মেমোরিতে প্রবেশ করে মেমোরিতে গোপন বিস্তার লাভ করে মূল্যবান প্রোগ্রাম, তথ্য নষ্ট করা ছাড়াও অনেক সময় কম্পিউটারকে অচল করে দেয়। সিআইএইচ ভাইরাসের রচয়িতা ( চেন ইং হাও)।
ভাইরাসের ইতিহাস :
১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের দুই প্রোগ্রামার আমজাদ ও বাসিত উপলব্দি করল ভ্লপি ডিস্কের বুটসেক্টর executable কোড ধারণ করে এবং এ কোড কম্পিউটার চালু করলেই রান করে যদি ড্রাইভে ডিস্ক থাকে। তারা আরও উপলব্ধি করল যে এ কোড তাদের নিজস্ব প্রোগ্রাম (কোড) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় যা মেমোরি রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম হতে পারে এবং যা নিজের কপি তৈরি করতে সক্ষম। প্রোগ্রাম নিজের অনুলিপি তৈরি অর্থাৎ ভাইরাসের মতো বিস্তার ঘটাতে পারে বলে তারা এর নাম দেয় ভাইরাস। কিন্তু এটি শুধু ৩৬০ কিলোবাইট ফ্লপি ডিস্ককে সংক্রমিত করে। ১৯৮৭ সালে University of Delaware এ কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। কম্পিউটার শুরু করে ভ্লপি ডিস্কের লেবেল (C) Brain লেখা দেখার মাধ্যমে কম্পিউটার ভাইরাসের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হ।। এটিই প্রথম ভাইরাসের আক্রমণ এবং এটি ড. সলেমন পর্যবেক্ষন করেন। এ ভাইরাসের উপস্থিতি প্রথম উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈকা কম্পিউটার মহিলা কর্মী দেখে একে ভাইরাস বলে মনে করেন এবং ডিস্ক থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার কাজে নিমগ্ন ড. সলেমনের শরণাপন্ন হন। ড.সলেমন একে বিশ্লেষণ করেন এবং এভাবে তিনি এন্টিভাইরাস ব্যবসায়ে আসেন। ১৯৮৭ সালে Charlie, Vienna নামক ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যা মেশিনকে Hang ও রিবুট করে দেয়। ইতোমধ্যে ইসরালের তেলআবিবে অন্য একজন প্রোগ্রামার Suriv – 01 নামে ভাইরাস তৈরি করে। এটি ছিল মেমোরি রেসিডেন্ট ভাইরাস কিন্তু এটি Com ফাইলকে আক্রমণ করতো। এভাবে প্রতি বছর নতুন নতুন অনেক ভাইরাস তৈরি হয় এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ৯৯ এর ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার সিআইএইচ বা চেরনোবিল নামক ভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। টাইম বোমার ন্যায় নিদিষ্ট সময়ে এ ভাইরাসটি কম্পিউটারকে আক্রান্ত করে। একই সময়ে সারাবিশ্বে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার এটিই সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। বাংলাদেশে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের অসংখ্য পিসি ছাড়াও এ ভাইরাস সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, ব্যাংক বিমা কোম্পানি সেলুলার ফোন কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয়,কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্র, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট হাউসের বহু সংখ্যক কম্পিউটার অচল করে দেয়। ২০০১ ও ২০০২ এ মেলিসা নামক ইন্টারনেট ভাইরাসের আক্রমণ অনেক ওয়েব সার্ভার ক্ষতি গ্রস্থ হয়। ই – মেইলের এটাচমেন্ট ফাইলের সাথে আসা এ ফাইলটিও ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
কম্পিউটারকে ভাইরাস যে ধরনের ক্ষতি করে
১. কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোনো ফাইল মুছে দিতে পারে।
২. ডাটা বিকৃত (Corrupt) করে দিতে পারে।
৩. কম্পিউটারের কাজ করার সময় আচমকা অবাঞ্ছিত বার্তা প্রদর্শন করে।
৪. কম্পিউটার মনিটরের স্কিনে ডিসপ্লেকে বিকৃত (Corrupt) করে দিতে পারে।
৫. একটি সিস্টেমের কাজকে ধীরগতি সম্পূর্ণ করে দিতে পারে।