কিভাবে ধনি হওয়া যায়

সবাই ধনী হওয়ার কৌশল গুলো জানতে চায় , কিন্তু খুব কম লোকই জানার পর কিভাবে ধনী হওয়া যায় তা বুঝতে পারেন। ধনী হওয়ার বিষয়টি আপনার ভাগ্য, দক্ষতা, ধনী হওয়ার আমল, ধনী হওয়ার জন্য দোয়া বা প্রার্থনা এবং ধৈর্য্যের উপর নির্ভর করে। ধনী হওয়া বা কোটিপতি হওয়ার উপায় জানার পর এমন ভাবে আর্থিক সিদ্ধান্ত গুলো নিতে হবে যাতে আমরা আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারি। আর আপনার ব্যাবসা বা চাকরির অর্জিত অর্থগুলো সঠিকভাবে বিনিয়োগ করে, অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে এবং জমা করে আরো মজবুত আর্থিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন। ধনী হওয়ার কৌশল গুলো জেনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে পারলে আর্থিক ভাবে উন্নতি করা অসম্ভব কিছু নয়। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে ধনী হওয়া যায়ঃ

জ্ঞান অর্জনে বিনিয়োগ করুনঃ

বুদ্ধি সমস্যা সমাধান করে এবং অর্থ উৎপাদন করে। আর্থিক বুদ্ধি ছাড়া যে অর্থ আসে তা শীঘ্রই চলে যায়। আর মানুষের সবছেয়ে বড় সম্পদ হলো তাঁর মেধা, জ্ঞান এবং তাঁর যোগ্যতা। আমাদের স্কুল কলেজে কিভাবে সিভি লেখা যায়, কিভাবে চাকরি করা যায়, কিভাবে অন্যের জন্য কাজ করা যায় এসব শিখানো হয়। কিন্তু কিভাবে ব্যাবসা শুরু করা যায় বা কিভাবে ব্যাবসা করে সফল হওয়া যায় সেসব শেখানো হয় না। অর্থাৎ আপনি কি শিখছেন সেটা খুবই ইম্পর্টেন্ট। আপনাকে শিখতে হবে কিভাবে ধনী হওয়া যায়, ধনী হওয়ার কৌশল, কোটিপতি হওয়ার উপায়, এবং কিভাবে ধনী হওয়ার জন্য দোয়া করতে হয়। আর আর্থিকভাবে জ্ঞানী না হলে মানে অর্থ কিভাবে কাজ করে তা জানতে না পারলে আপনার টাকা হলেও তা রাখতে পারবেন না। তাই জ্ঞান অর্জনে বেশি বিনিয়োগ করুন।

পথ নির্ধারন করুনঃ

এক আগন্তুক দুই দিকে যাওয়া পথের কাছাকাছি এসে দেখা হওয়া এক লোককে জিজ্ঞেস করলো আচ্ছা ভাই এই পথ দুটি কোনটা কোন দিকে গেসে? লোকটি আগন্তুককে জিজ্ঞেস করলো- আপনি কোথায় যাবেন? আগন্তুক উত্তর দিলো- যানি না। লোকটি আগন্তুককে বলল তাহলে আপনি যে কোন একটা পথেই রওনা হতে পারেন। তো টাকা কড়ি করতে হলে আপনাকেও জানতে হবে আপনি কোন পথে এগুতে চান, কিভাবে এগুতে চান তাহলে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌছতে পারবেন। বয়স অল্প হলে আপনি যদি ব্যাবসা ভাল বোঝেন তাহলে ব্যাবসা শুরু করুন, আর আপনি যদি ঝুঁকি নিতে ভয় পান এবং শূন্য থেকে কাজ শুরু করতে পছন্দ না করেন তাহলে চাকরি করুন আর আর্থিক জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অর্থ সঞ্চয় করতে থাকুন।

সম্পত্তি ও দায় সম্পর্কে জানুন ঃ

ধনী না হওয়ার অন্যতম কারন সম্পত্তি ও দায়ের মধ্যে তফাৎ না জানা। ধনী ব্যাক্তিরা সম্পত্তি সংগ্রহ করে আর গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেনী দায় সংগ্রহ করে তারা এগুলোকে সম্পত্তি মনে করে। সম্পত্তি ও দায়ের মধ্যে প্রভেদ না জানলে ধনী হওয়ার যত কৌশলই আমরা জানি না কেন তা কাজে আসবে না। আর আর্থিক ভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ধনী হওয়ার যত আমলই করেন তাতে কাজ হবে না। তাহলে সম্পত্তি কি? সম্পত্তি এমন এক জিনিস যা পকেটে অর্থাগম করে। দায় এমন জিনিস যা আমার পকেট থেকে অর্থ নিয়ে নেয়। শুধু এটুকুই জানা যথেষ্ট। যদি আপনি ধনী হতে চান, সারা জীবন ধরে সম্পত্তি কিনে যান। যদি গরিব বা মধ্যবিত্ত হতে চান সারা জীবন দায় কিনে যান। বিষয়টা খব সরল বলেই অধিকাংশ বুদ্ধিমানদের মাথায় ঢুকে না।

ধনী ব্যাক্তিদের মানসিকতা তৈরি করুনঃ

পৃথীবির ১% লোক পুরো পৃথীবির ৫০% সম্পত্তির মালিক। তারা তাদের সন্তানদের বাসায় খাবার টেবিলে শিখিয়ে দেন কিভাবে ধনী হওয়া যায়। তারা ধনী হওয়ার কৌশলগুলো জানেন। কিন্তু আপনি যদি ঐ ১% এর মধ্যে না পড়েন তাহলে, টাকা কড়ির ব্যাপারে আপনি আপনার পরিবার থেকে শিখছেন, যারা নিজেরাই সারা জীবন কোন অর্থ করতে পারেনি। তাদের পরামর্শ শুনলে আপনি তাদের মতই হবেন, এর বেশি দূর যেতে পারবেন না। তো ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে সবার প্রথমে গরিব মানসিকতা দূর করে ধনীদের মানসিকতা তৈরি করতে হবে, ধনীরা কিভাবে চিন্তা করেন, কিভাবে সিদ্ধান্ত নেন সেটা আপনাকে জানতে হবে এবং প্রয়োজনে তাদের সাথে মিশতে হবে। ধনীদের সাথে মিশে আপনি তাদের গুণগুলো আয়ত্ত্বে আনতে হবে।

সিদ্ধান্ত ও ঝুঁকি ঃ

অর্থ হারাবার ভয়টা সত্যি। এটা প্রত্যেকের আছে, এমনকি বড় লোকেরও। কিন্তু এই ভয়টা সমস্যা নয়, আপনি কিভাবে ভয়ের মোকাবেলা করছেন সেটাই বিবেচ্য বিষয়। একজন ধনী ব্যাক্তি আর একজন গরিব ব্যাক্তির মধ্যে পার্থক্য হল তারা কিভাবে তাদের অর্থ সংক্রান্ত ভয়ের মোকাবেলা করে। আর ধনী হওয়ার কৌশল জানার পর জরুরি হল ঝুঁকি নেয়ার ক্ষমতা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রবনতা কত!

খরচ কমানঃ

আসলে আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যেখানে খরচ করাকে সঞ্চয় করার থেকেও গুরুত্ব দেয়া হয় বেশি। আপনি কত টাকা ইনকাম করলেন তা নয়, কত টাকা রাখতে পারলেন সেটাই আপনি ধনী কি ধনী না তা নির্ধারন করেব। আর খরচের উপর যদি আপনার নিয়ন্ত্রন না থাকে তাহলে যতই ধনী হওয়ার কৌশল শিখন না কেন কোন কাজে আসবে না। তাই কিভাবে খরচ কমাতে হয় তা শিখুন এবং বুদ্ধিমানে মত খরচ করুন।

নিজের ব্যাবসায় মন দিনঃ

ধনী আর গরিবের মধ্যে সবছেয়ে বড় তফাত হলো ধনীরা বিভিন্ন বিনিয়োগের ক্ষেত্র বের করে তাতে বিনিয়োগ করে। আর গরিবেরা শুধু খরচ করে। তাই আপনাকে ধনীদের মত নিজের ব্যবসায় মন দিতে হবে। আর কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা আপনার মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে। বিনিয়োগ করার আগে প্রাথমিক ROI করে নিতে হবে। বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে- আপনি স্টক একচেঞ্জে বিনিয়োগ করতে পারেন, বন্ড কিনতে পারেন, মেধা খাটিয়ে লিখে আয় করতে পারেন, কিভাবে ইউটিউব থেকে আয় করতে হয় তা শিখতে পারেন, কিভাবে ব্লগ লিখে আয় করতে হয় সেটা শিখতে পারেন, যেগুলো আপনার রিটায়ারমেন্টের সময়েও কাজে লাগবে। এছাড়া রিয়েল স্টেটে ও বিনিয়োগ করতে পারেন, আর এমন কিছুতে ইনভেস্ট করা যাবে না, যেটায় ক্ষতি প্রায় নিশ্চিত।

উপরে আলোচিতে ধনী হওয়ার কৌশলগুলো মেনে চলতে পারলে আপনি ধনী হবার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবেন। সেই সাথে ধনী হওয়ার জন্য ধনী হওয়ার আমল, দোয়া বা প্রার্থনা করুন। আর বাস্তবে সবর করুন।

Related Posts

45 Comments

মন্তব্য করুন