শিশুদের অনেক ক্ষেত্রেই প্রস্রাবে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। আমাদের শরীরে কিডনি রক্ত থেকে বজ্র পদার্থ পানি শুষে নিয়ে ইউরিন তৈরি করে। প্রতিদিন আমাদের শরীর থেকে ইউরিন বেরিয়ে গিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ।এই যে কিডনি থেকে বেরিয়ে সরু টিউবে মধ্য দিয়ে আমাদের ইউরিনারি ব্লাডার এ জমা হয়। বয়সের উপর নির্ভর করে কতটা ইউরিন জমা থাকবে। এরপর ব্লাডার থেকে জমা ইউরিন শরীর থেকে বেরিয়ে যায় ।এখন প্রশ্ন থাকতে পারে যে কেন ইনফেকশন হয় ?
আসলে ইউরিনারি ট্রাক্ট এ এমনিতে কোন ব্যাকটেরিয়া থাকে না। কোন কারণে ব্যাকটেরিয়া মূত্রথলিতে ঢুকে গেলে ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন হতে পারে। ব্লাডার ফুলে যায়,পেটের নিম্নাংশে যন্ত্রনা হতে পারে ।যদি কোনভাবে আমাদের কিডনিতে পৌঁছে যায় তাহলে কিডনি ইনফেকশন হতে পারে ।সাধারণত ভ্যাজাইনার ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। কোন কারণবশত যদি ইউড়িনারি ট্রেক্ট ঠিকমত কাজ না করতে পারে তাহলে ব্যাকটেরিয়া ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ঢুকে যায় ।ফলে ইনফেকশন হতে পারে।
জন্ম থেকে ইউরিনারি ট্র্যাক এর গঠনে কোন ত্রুটি থাকে থাকে তাহলে সহজেই প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়। কীভাবে বুঝবেন যে আপনার শিশুর প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়েছে?আর তার কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ দেখে আপনি তা চিহ্নিত করতে পারেন ।যেমন :
জ্বর হতে পারে ,বাচ্চা অকারনে বিরক্তি প্রকাশ করে ,খেতে চায় না, বমি করে ,এমনকি বারবার বাথরুমে যেতে হয় ।বাথরুম করার সময় ব্যথা হতে পারে বা জ্বালা করতে পারে। তলপেটের নিম্নাংশে ব্যথা হতে পারে ।অনেক সময় ইউরিনে রক্ত বের হতে পারে। যদি কোন ভাবে কিডনিতে ইনফেকশন ছড়িয়ে যায় তাহলে বাচ্চার অবশ্যই হবে খুব বেশি জ্বর আসবে। ত্বক লাল হয়ে যাবে। মাথা ঘুরাবে ,বমি হবে এমনকি পাঁজরে ব্যথা হতে পারে।
এখন এটাকে আমরা কিভাবে প্রতিরোধ করতে পারি। শিশুর প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে বেশি বাবল বাথ করতে দেবেন না। জামা কাপড় ঢিলা পরা ভালো ।বাচ্চা যেন প্রচুর পরিমাণে পানি খায় সে দিকে নজর দেবেন। বাচ্চাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বোঝান। বাচ্চাকে দিনে একাধিকবার বাথরুমে যাওয়া শেখান।
চিকিৎসকরা মূলত একাধিক টেস্টের মাধ্যমে শিশুর প্রস্রাবে ইনফেকশন আছে কি না তা নির্ণয় করে থাকে। শিশুদের প্রস্রাবে ইনফেকশন টেস্ট করা হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসক জানতে চান বাচ্চার বয়স কত, ইনফেকশন হয়েছে কিনা ।এক্ষেত্রে চিকিৎসক মূলত ইউরিন স্যাম্পল টেস্ট করেন ।কেন ইনফেকশন হয়েছে বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা দেখার জন্য কিডনির আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এছাড়া ইউরিনের সময় বিশেষ পদ্ধতিতে এক্সরে করা হয়।
শিশুদের প্রস্রাবে ইনফেকশন এই জটিলতার চিকিৎসা রয়েছে এবং ডাক্তাররা নানাবিধ চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। প্রথমেই বাচ্চাকে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় যাতে ইনফেকশন কিডনি পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে। একদম ছোট বাচ্চাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। বড় বাচ্চাদের ঔষধ খেতে দেয়া হয়। ইনফেকশন কতটা জটিল তার উপর নির্ভর করে এন্টিবায়োটিক কতদিন খেতে হয়।