গল্প: একটি ভুল ও লোমহর্ষক লজ্জা :: পর্ব-০২

……… : তুই যাইয়া দুইদিন থাকতে থাক। দুইদিন পর আমি যায়া আনি’র।
তানিয়া বুঝে গেলো যে, নয়নকে যাওয়ার জন্য আর ঠেলা ধাক্কা করে লাভ নেই। তার এখন একাই যেতে হবে। দু’একদিন নয়ন তাকে নিয়ে আসতে যাবে।
১ম অংশের পর……..

পরদিন সকাল বেলা তানিয়া ঘুম থেকে উঠে খুব সকাল সকাল রান্নাবান্না শেষ করে ফেললো। অনেক দিন হয়ে গেলো সে বাপের বাড়ি যায় না। তাই যাওয়ার জন্য মনটা আনচান আনচান করছে। ওদিকে নয়ন এখনো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। তানিয়া রান্নার কাজ শেষ করে একবার ভাবলো নয়নকে জাগিয়ে দেবে। আবার পরক্ষণে ভাবলো এত সকাল বেলা ডাকাডাকি করলে নয়ন যদি রেগে যায় তবে যাত্রার শুরুটাই নিরানন্দ হয়ে যাবে। তাই সে নয়নকে ডাকা বাদ দিয়ে গোসল করতে চলে গেলো। গোসল সেড়ে একটু সাজুগুজু করে নিজের কাপড় চুপর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

ঐদিকে সকাল বেলার কাঁচা রোদ নয়নের চোখে পড়ায় নয়ন ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠলো। আজ খুব সকালেই তার উঠার কথা ছিল। মাঠে পানি তোলতে হবে বলে। কিন্তু এখন অনেকটা দেরী হেয়ে গেছে। তাই হাঁক ছাড়লো- এই… কই গেলি রে? দেরী হওয়ায় নয়নের মাথায় রাগ ধরে গেছে। – এই যে, আইতাছি.. বলে তানিয়া তাড়াহুড়ু করে নয়নের কাছে চলে আসল। তার ইচ্ছা, বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় রাগারাগি করে যেতে চায় না। তাই এখন একটু বেশি অনুগতভাব প্রকাশ করছে।

– সকালে আমারে একটু ডাইক্কা দেওন গেলো না? বলে চোখ কচলাতে কচলাতে তানিয়ার দিকে তাকাল। তানিয়ার দিকে তাকিয়েই কেমন যেন তার মনটা ভালো হয়ে গেলো। সকাল বেলা সাজুগুজো চেহারা দেখতে পেয়ে মনে পড়লো আজ তানিয়ার বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা। তাই সে আর রাগ দেখাতে চাইল না। তাই সে একটু মাজা করার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো- কিরে? এত সকাল সকাল সাইজ্জাগুইজ্জা পরী অয়া গেলি দেকতাছি? তানিয়া লজ্জা পেয়ে যায়। আবার মনে মনে একটু খুশিও হয়। সাধারণত মেয়েরা একটু প্রশংসার কথা শুনলেই খুব খুশি হয়ে উঠে।

– কিন্তু মুখে তার অন্য কথা। সে বলে উঠলো রাহ তোমার ঢঙ্গের কতা। ভাত তরকারি রাইন্দা, গাও গোছুল কইরা তোমার নাইগ্গা বইয়া রইছি। ওইদিকে তোমার উডার নামই নাই। তাড়াতাড়ি আতমুখ ধুইয়া আও। খাবার খাওয়াইয়া একটু সকাল সকাল বাড়িত যাবার চাইতাছি।

– নয়ন হাসতে হাসতে বলে মাইয়া মানুষ বাপের বাড়ি যাওনের কথা হুনলে এহেবারে বেওশ অইয়া যায়। এই কথা বলেই তাড়াতারি ওঠে ব্রাশ নিয়ে রওয়ানা দেয় এবং বলে- তুই ভাত বাড়তে থাক। আমি অহনি রেডি অইয়া আইতাছি। এই বলে নয়ন টিউবলের দিকে রওয়ানা দিল।

– যাও, আমি ভাত বাড়তাছি, দেরী করলে কিন্তু ভাত ঠান্ডা অইয়া যাবো। এই বলে তানিয়া খাবার রেডি করতে রান্নাঘরের দিকে হাটা দিল। (চলবে)

Related Posts

20 Comments

    1. সত্যি বলতে গ্রামে এখন আর কাঠের কয়লা দিয়ে হাত ব্যবহার করে দাঁত মাজে না, যা আমাদের ছোটবেলায় প্রচলিত ছিল। এখন গ্রামের সবাই ব্রাশ ব্যবহার করা শুরু করেছে। তবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য ধন্যবাদ

মন্তব্য করুন