গাধার বুদ্ধির পরিণতি ও চালাক মালিকের জয়

এক সময়ে এক গ্রামে বাস করতো এক কৃষক। তার নাম ছিল কাশির। তার একটা গাধা ছিল। কাশির তার গাধার নাম দিয়েছিল কাতুকুতু। কারণ সেই গাধাটা অনেক অলস ছিল। কোন কাজ করতে চাইতো না।

কাশির তার জমিতে গম চাষ করতো। সেই গম বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাতুকুতুর পিঠে বস্তা চাপিয়ে দিতো। এই ভাবে তাদের দিন ভালোই চলতেছিল। কিন্তু কাতুকুতু অলসের জন্য কাশিরকে গম বাজারে নিয়ে যাওয়ার একটু কষ্ট করতে হতো। তবে কাশির কাতুকুতুকে একটুকুও রেগে গালাগালি করতো না। কারণ, সে তো অবোলা প্রাণী। তবে একদিন কাশির গম নিয়ে বাজারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো। আর তাই কাতুকুতুকে বলল, আজকে বাজারে গম বিক্রি করতে যাবো। এই বলে কাশির কাতুকুতুর পিঠে গমের ২ টি বস্তা চাপিয়ে দিলো।

এবার তারা বাজারে যাওয়ার জন্য রওনা হলো। তবে বাজারে যাওয়ার জন্য তাদের একটা নদী পাড় হতে হতো। কাশির আর কাতুকুতু রাস্তায় যেতে যেতে সেই নদীর কাছে পোঁছে গেলো। আর নদীতে ছিল একটি নৌকা। কিন্তু সেই নৌকাটি নদীতে নেই। কাশির নৌকা না দেখতে পেয়ে আশেপাশের লোকজনদের জিজ্ঞাসা করলো নৌকাটি কোথায়?

লোকজনেরা বলল, সেই নৌকাটি ফুটো হয়েছে। তাই নৌকাটিতে পানি ঢুকতেছিল। এরজন্য মাঝি নৌকা মেরামত করতে গিয়েছে। কাশির নদীতে দেখল একহাঁটু পানি। তাই সে ভাবল এই হাঁটু পরিমাণ পানিতে এমনিই পার হওয়া যাবে। তাই সে কাতুকুতুকে বলল, চল এই নদী পাড় হই। কাতুকুতু ভাবল এই নদীতে মাঝখানে গিয়ে যদি পা গর্তে ফেলে পড়ে যাই তাহলে মালিক আর বাজারে যাবে না। আর কয়েকদিন পা মোচকে যাওয়ার অভিনয় করলে চার পাঁচ দিন কোন কাজ করতে হবে না।

কাতুকুতু এই বুদ্ধি বের করে তার মালিকের সাথে যেমনি নদীর মাঝখানে পৌছালো। তেমনিই কাতুকুতু একটি গর্তে তার পা ঢুকিয়ে দিলো। আর সাথে সাথে সে পানিতে পড়ে গেলো। কাশেমের গম পুরই ভিজে গেলো। তাই সে আর বাজারে গেলো না। ২ দিন পর আবারো গম বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের হলো। কিন্তু কাতুকুতু আবারো সেই ভাবে নদীর মাঝে গিয়ে পড়ে গেলো। এই ভাবে বেশ কয়েকদিন কাতুকুতু তার বুদ্ধি দিয়ে বেঁচে গেলো।

কিন্তু কাশির কাতুকুতুর অভিনয় বুঝতে পারলো। একদিন কাশিরের বন্ধু নষ্ট তুলো ফেলার জন্য নদীতে যাচ্ছিল। তখন কাশির তাকে বলল, আমি তোমার তুলো নদীতে ফেলে দিবো। তাই এবার কাশির গমের বস্তায় গম না দিয়ে তুলো ঢুকিয়ে দিলো। আর বাজারে যাওয়ার সময় কাতুকুতু নদীতে আবারো পড়ে গেলো।

এবার তো তুলোয় পানি ধরলে অনেক ভারি হয়ে যাবে। তাই কাতুকুতু উঠে দাঁড়াতে পারছে না। সে ডুবতেছে আর উঠতেছে। নদীর পানি তার মুখে ঢুকতেই আসে। এবার কাশির কাতুকুতুকে বলল, কি কেমন লাগতেছে? শেষ পর্যন্ত কাশির কাতুকুতুকে নদীর ধারে নিয়ে আসলো। আর তাকে বলল, একই বুদ্ধি বারবার প্রয়োগ করতে হয় না। যদি একই বুদ্ধি প্রয়োগ করো তাহলে একদিন না একদিন ধরা পরবেই।

কি বন্ধুরা কি বুঝতে পারলে? গাধার বুদ্ধির পরিনতি কেমন কমেন্ট করে জানাও।
সকলকে ধন্যবাদ।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন