গুগল অ্যাডসেন্স-এ আবেদন করার পূর্বে যা যা করবেন

আজকে আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আসলাম। টপিকটি হলো আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য গুগল অ্যাডসেন্স-এ আবেদন করার পূর্বে যে বিষয় গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, সে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর। তো চলুন বিষয়গুলো একে একে দেখা যাক।

অ্যাডসেন্স কোন প্লাটফর্ম বা CMS এর ওয়েবসাইট Allow করে?

CMS এর ফুল মিনিং Content Management System. আপনার ওয়েবসাইটটি কোন CMS এর তৈরি তা গুগলের কাছে ম্যাটার করে না। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস, ব্লগার, জুমলা, ড্রুপাল বা অন্য যেকোনো সিএমএস দ্বারা তৈরি ওয়েবসাইট-এ অ্যাডসেন্স নিতে পারবেন। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় CMS দুটি হলো ওয়ার্ডপ্রেস ও ব্লগার।

ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট কতটা ইউনিক হতে হবে?

এই প্রশ্নের এক কথায় উত্তর হলো, ১০০% ইউনিক হতে হবে। আপনার সাইটের আর্টিকেল যদি কপি করা হয় তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনি অ্যাডসেন্স পাবেন না। এজন্য অ্যাডসেন্স-এ অ্যাপ্লাই করার পূর্বে সাইটের কন্টেন্ট একদম Pure হওয়া বাধ্যতামূলক।

ওয়েবসাইটে আর্টিকেল সর্বনিম্ন কত ওয়ার্ড এর হতে হবে এবং সাইটে কতটি আর্টিকেল থাকতে হবে?

প্রথমত মনে রাখবেন যে, ওয়েবসাইটের আর্টিকেল কপি করা আর্টিকেল হওয়া যাবে না। আর্টিকেল গুলো সর্বনিম্ন ৩০০+ ওয়ার্ডে লিখুন। কিন্তু অ্যাডসেন্স-এ আবেদন করার পূর্বে আমি এটাই পরামর্শ দেবো যে, আপনার সাইটের আর্টিকেল গুলো সর্বনিম্ন ৫০০+ ওয়ার্ডের হলে ভালো হয়।

অনেকেই বলে অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদনের পূর্বে সাইটে সর্বনিম্ন ২০-২৫টি আর্টিকেল থাকতে হবে। এই তথ্যটি কিছু ক্ষেত্রে ঠিক আবার কিছু ক্ষেত্রে ঠিক নয়। এই বিষয়টা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের সাইট নিয়ে কাজ করছেন তার উপর। আপনার সাইটের আর্টিকেলের কোয়ালিটি ভালো মানের হলে ১০-১৫টি আর্টিকেল অ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্য যথেষ্ট। গুগলের কাছে কন্টেন্টই প্রথম বিষয়। এজন্য প্রথমে আপনার সাইটের কন্টেন্ট এর মান ঠিক করুন।

ওয়েবসাইট এ কি কপিরাইট ফ্রি ছবি ব্যবহার করতে হবে?

হ্যাঁ অবশ্যই। আপনি যে ছবি গুলো আপনার সাইটে ব্যবহার করবেন সেগুলো অবশ্যই কপিরাইট ফ্রি ছবি হতে হবে।

ওয়েবসাইট এ কি কি পেইজ তৈরি করতে হবে?

আপনি যদি আপনার সাইটে অ্যাডসেন্স পেতে চান তাহলে অবশ্যই, আপনার সাইটে About us, Contact us, Privacy policy, Terms and condition, Sitemap, Disclaimer ইত্যাদি পেইজ গুলো থাকতে হবে।

ওয়েবসাইট এ কয়টি ক্যাটাগরি বা লেবেল থাকতে হবে?

এ বিষয়টি নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। তবে আমি বলবো কমপক্ষে ৫টি ক্যাটাগরি তৈরি করুন এবং প্রতি ক্যাটাগরিতে কয়েকটা করে আর্টিকেল যোগ করুন। আপনি একটি আর্টিকেল একাধিক লেবেল বা ক্যাটাগরিতে রাখতে পারবেন, তাতে কোনো সমস্যা হবে না।

Google search console এ কি সাইটম্যাপ সাবমিট করতে হবে?

হ্যাঁ অবশ্যই করতে হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অ্যাডসেন্স এ আবেদনের পূর্বে অবশ্যই সাইটম্যাপ সাবমিট করুন।

ওয়েবসাইট এর ডিজাইন কেমন হতে হবে?

অ্যাডসেন্স এ আবেদনের পূর্বে ওয়েবসাইটকে বেশি চাকচিক্য না করে সিম্পল রাখার চেষ্টা করুন। দ্রুত লোড হয় এমন থিম বা টেম্পলেট ব্যবহার করুন।

বাংলা নাকি ইংরেজি ভাষাতে অ্যাডসেন্স পাওয়া যায়?

গুগল এখন পর্যন্ত ৪৫টি ভাষাতে অ্যাডসেন্স দিয়ে থাকে। এই ৪৫টি ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে। সুতরাং আপনার সাইট যদি বাংলা ভাষাতেও হয় তাহলেও আপনি অ্যাডসেন্স পাবেন।

ডোমেইন বা সাইটের বয়স কত হতে হবে?  

শুধু ব্লগস্পট সাব ডোমেইনের জন্য একটা সাইটের বয়স মিনিমাম এক মাস হতে হয়। তবে টপলেবের ডোমেন হলে কোন বয়স সীমা নেই। যেদিন ডোমেইন কিনবেন, ঐদিনই অ্যাডসেন্স এ আবেদন করতে পারবেন। যদি এডসেন্স-এর সকল শর্ত পুরণ করেন তবে।

ব্লগস্পটের সাব-ডোমেইনে কি এডসেন্স দেয়?

নিয়ম অনুযয়ী ব্লগস্পটের সাব ডোমেইনে এখনও এডসেন্স দেয়। এই সাব-ডোমেইন ব্যবহার করে কেউ এডসেন্স পায়, আবার কেউ এডসেন্স পায় না। মোট কথা, ব্লগস্পটের সাব ডোমেইন দিয়ে এডসেন্স পাওয়াটা তুলনা মূলক কঠিন। সুতরাং ব্লগস্পটের সাব ডোমেইন নিয়ে কাজ না করে, টপলেবেল ডোমেইন কিনে কাজ শুরু করুন।

ওয়েবসাইটে সর্বনিম্ন কত ভিজিটর থাকতে হবে?

আপনি যদি অ্যাডসেন্স এর সকল শর্ত ১০০% পুরণ করে থাকেন, তাহলে সাইটে যদি শূণ্য ভিজিটরও থাকে… তাহলেও আপনি এডসেন্স পাবেন। সুতরাং এডসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে ভিজিটর কোন ফ্যাক্ট না।

তো আশা করি আজকের আলোচিত বিষয় গুলো আপনি বুঝতে পেরেছেন। বিষয়গুলো যদি একটু হলেও আপনার উপকারে আসে তাহলে আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

Related Posts

23 Comments

মন্তব্য করুন