চাঁদপুর ভ্রমন ও প‌রিদর্শন

চাঁদপুর ভ্রমন plan: আমরা প্রথ‌মে ঠিক করলাম চট্রোগ্রাম এর দি‌কে যা‌বো। ওই দি‌কে অ‌নেক গুলো ঘুরার জায়গা আ‌ছে। প‌রে একজন ব‌লে উঠ‌লো ওই দি‌কে যাই‌লে এক‌দিন এর বে‌শি থাক‌তে পার‌বো না। সে বল‌লো চাঁদপুর এর দি‌কে চল । সেখা‌নে আমার এক বন্ধু আ‌ছে তার বাসায় একরাত থাকা যা‌বে। তো আমরা এসু‌বিধা পে‌লে আমরা এক‌দিন বে‌শি ঘুর‌তে পার‌বো। তো আমরা ঠিক করল‌াম চাঁদপুর এর দি‌কে যা‌বো।

সকা‌লের নাস্তা এবং যাত্রা: আমরা তিন বন্ধু একসা‌থে বা‌হির হই। আর একজন স্টেশন আমা‌দের জন‌্য অ‌পেক্ষা কর‌ছিলো। তো আমরা স্টেশন গি‌য়ে তা‌কে আমা‌দের সা‌থে নি‌য়েনি। ৯টায় আম‌দের ট্রেন ছিল । আমরা ৮টায় স্টেশন পৌ‌ছে যাই। তারপর আমরা স্টেশনে আম‌া‌দের সকা‌লের নাস্তা ক‌রে পে‌লি। অব‌শে‌ষে আমা‌দের ট্রেন চ‌লে আ‌সে। তারপর আমরা ট্রেনে উ‌ঠি।আমা‌দের এখান থে‌কে শুরু হয়।

ট্রেন ভ্রমন: আমা‌দের ট্রেনটা ছিল একটা লোকাল ট্রেন। যার কার‌নে পু‌রো যাত্রা টা ছিল বি‌রক্তি কর। প্রতিটা জায়গায় ট্রেনটা থাম‌ছিল।আম‌াদের ‌তেমন খারাপ লা‌গে নাই,কারন আমরা ই‌ঞ্জিল এর ভো‌গি তে চ‌লে যাই। যার কার‌নে আমরা বা‌হি‌রের প্রকৃ‌তিক দৃশ‌্য গুল‌া সুন্দর ভা‌বে উপ‌ভোগ ক‌রি।

এভা‌বে আমরা কু‌মিল্লা পর্যন্ত যাই। তারপর আমরা ওইখা‌নে নে‌মে হালকা নাস্তা ক‌রি। ট্রেনটা ওইখা‌নে ৩০ মি‌নিট থে‌মে ছিল। কারন কু‌মিল্লা থে‌কে চাঁদপুর যে‌তে হ‌লে ভো‌গি চেঞ্জ কর‌তে হয়। ৩০‌মি‌নিট পর আমা‌দের ট্রেন আবার ছা‌ড়ে।‌তো আমরা সিট খু‌জে ব‌সে প‌ড়ি। দীর্ঘ ৩ঘন্টা পর ট্রেনটা হা‌জিগঞ্জ গি‌য়ে পৌছায়।

ট্রেন থে‌কে নামার পর: ট্রেন থে‌কে নে‌মে আমরা হা‌জিগ‌ঞ্জ আমা‌দের যে বন্ধু ছিল তা‌দের বাসায় যাই। স্টেশন থে‌কে তা‌দের বাসা পযর্ন্ত বাড়া ছিল ১০০ টাকা।মূল বাড়া হ‌চ্ছে ৬০টাকা ।বে‌শি দেওয়ার কারন হ‌চ্ছে আমা‌দের এক বন্ধু তা‌দের বাসা না চি‌নে গা‌ড়ি ওয়ালা‌কে ঘুরায়। যার কার‌ণে ৪০ টাকা বে‌শি দি‌তে হয়।অব‌শে‌ষে আমরা তা‌দের বাসায় গি‌য়ে পৌছাই।

দুপু‌রের খাবার: দুপু‌রের খাবার আমরা আমা‌দের বন্ধু‌দের বাসায় খাই।তার আম্মু আমা‌দের জন‌্য ভা‌লো আ‌য়োজন করে। দুপু‌রের খাবা‌রের ম‌ধ্যে ছিল পলাও,শিং মাছ,মুর‌গি,ডিম,বেগুন বর্তা,গরুর মাংশ,দ‌ধি ইত‌্যা‌দি।দুপু‌রের খাবার শে‌ষে আমরা তা‌দের বাসার পা‌শে একটা মস‌জি‌দে যোহ‌রের সালাত আদায় ক‌রি।

মোহনপু‌রের উ‌দ্দেশ‌্য যাত্রা: যোহ‌রের সালাত শে‌ষে আমরা তা‌দের বাসা থে‌কে বা‌হির হই। তারপর আমরা হা‌জগঞ্জ ‌সিএন‌জি স্টেশন এ যাই।‌তো আমরা একটা সিএন‌জি বাড়া ক‌রি। যেটা আমা‌দের কে মোহনপুর নি‌য়ে যা‌বে এবং হ‌া‌জিগঞ্জ এ‌নে দি‌বে। তার ধার্য বাড়া ছিল ১৮০০ টাকা। তারপর আমরা রওয়ানা দেই মোহনপুর এর উ‌দ্দেশ‌্য।

সিএন‌জি ভ্রমন: একটা সিএন‌জি তে পাঁচ জন বসতে পা‌রে। আমরা লোক ছিলাম পাঁচ জন। আমরা তিন জন পিছ‌নে বা‌সি এবং বা‌কি দুই জন ড্রাইবার এর সা‌থে সাম‌নে ব‌সে। আমা‌দের যাত্রার শুরু‌তে একটা ফি‌লিং স্টেশন থে‌কে পর্যাপ্ত প‌রিমা‌নে গ‌্যাস নি‌য়েনি।

তারপর আবার যাত্রা শুরু হয়। আমরা সিএন‌জি থে‌কে সোনার বাংলার প্রকৃ‌তিক দৃশ‌্য দেখ‌তে দেখ‌তে প্রাণ টা ঠান্ডা হ‌য়ে যায়।দীর্ঘ দেড় ঘন্টা যাত্রার পর আমা‌দের গা‌ড়ি এক জায়গায় দাড়ায়। জায়গাটা খুবই আসাধারন ছিল। যেন এক নতুন পৃ‌থিবী‌তে হা‌রি‌য়ে গেলাম। তারপর আমরা আবার যাত্রা শুরু ক‌রি। প্রায় ৪০ মি‌নিট পর মোহনপুর এসে আমরা পৌছাই।

মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র: আমরা সিএ‌ন‌জি থে‌কে নে‌মে গে‌টে দি‌কে যাই। তারপর আমরা টি‌কেট নি‌য়েনি। মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র প্রবেশ আমা‌দের প্রতি জন‌কে ৫০ টাকা ক‌রে ঘুন‌তে হয়। আমা‌দের পাঁচ জন কে মোট ২৫০ টাকা দি‌তে হয়।

তারপর আমরা বিত‌রে প্রবেশ ক‌রি। জায়গাটা খুবই অসাধারন ছিল। তারপর আমরা নদী‌তে নে‌মে গোসল ক‌রি। আমরা প্রায় দুই ঘন্টার ম‌তো বিত‌রে ছিলাম। প্রায় ৬ টার দি‌কে আমরা দ‌্যা শিপ ইন রেস্টু‌রেন্ট এ নাস্তা ক‌রি। তারপর আমরা আবার হা‌জিগঞ্জ এর উ‌দ্দেশ‌্য যাত্রা ক‌রি।

রা‌তের বেলা: মোহনপুর থে‌কে আমরা ৯ টার দি‌কে হা‌জিগঞ্জ এ‌সে পৌছাই। রা‌তে আমরা হা‌জিগঞ্জ টাউনে ঘু‌রি।১১ টার দি‌কে আমরা বাসায় গি‌য়ে রা‌তের খাবার খে‌য়ে ঘু‌মি‌য়ে যাই।

রাত কাটার শে‌ষে সকাল: আমার বন্ধুরা ঘুম থে‌কে ৫ টায় উ‌ঠে ফজ‌রের নামাজ ক‌রে। তারপর ৭ টার দি‌কে নাস্তা ক‌রি। আমা‌দের সকা‌লের নাস্তা ছিল রু‌টি,খোলা পিঠা,নালার জোল ইত‌্যা‌দি। নাস্তা শে‌ষে আমরা ৮ টার দি‌কে চাঁদপুর মি‌নি কক্সবাজার এর উ‌দ্দেশ‌্য যাত্রা করি।

চাঁদপুর মি‌নি কক্সবাজার যাত্রা: আমরা হা‌জিগঞ্জ থে‌কে বা‌সে উঠলাম।বাসটা চাঁদপুর পর্যন্ত যা‌বে,তো আমা‌দের প্রত্যেকের বাড়া ছিল জন প্রতি ৩০ টাকা। চাঁদপুর যে‌তে আমা‌দের ৪০ মি‌নিট এর ম‌তো সময় লাগ‌ছে।আমরা সেখা‌নে নে‌মে একটা অ‌টো ক‌রে তিন নদীর মোহনায় চ‌লে যাই।

আমরা সেখান থে‌কে একটা টলার বাড়া করি। টলার নি‌য়ে আমা‌দের এবং মা‌ঝি‌দের মা‌ঝে অ‌নেক কথা কাটাকা‌টি হয়। অব‌শে‌ষে আমরা ৮০০ টাকা দি‌য়ে একটা টলার বাড়া ক‌রি। টলা‌রে ক‌রে মি‌নি কক্সবাজার যে‌তে আমা‌দের প্রায় ২০ মি‌নিট সময় লা‌গে। অব‌শে‌ষে আমরা মি‌নি কক্সবাজার এ‌সে পৌছাই।

মি‌নি কক্সবাজার পর্যটন কেন্দ্র: টলার থে‌কে নে‌মে আমরা পোষাক চেঞ্জ ক‌রি। তারপর আমরা নদী‌তে না‌মে যাই। নদীর ঠেউ আমা‌দের গা‌য়ে এ‌সে লা‌গে। আস‌লে বল‌তে গে‌লে যেন আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এসে গে‌ছি। আমরা ওইখা‌নে ২ ঘন্টার ম‌তো ছিলাম।

তারপর আমরা প্রায় ১২ টার দি‌কে ওইখান থে‌কে টলা‌রে ক‌রে যাত্রা ক‌রি।

দুপু‌রের খাবার: দিনটা ছিল শুক্রবার।আমরা একটা মস‌জি‌দে জুমার নামাজ আদায় ক‌রি। তারপর আমরা চাঁদপু‌রের ই‌লিশ খে‌তে একটা হে‌া‌টেলে প্রবেশ ক‌রি।খানা শে‌ষে আমরা বিল দি‌য়ে হো‌টেল থে‌কে বের হই।

চাঁদপুর থে‌কে ফেনীর উ‌দ্দেশ‌্য যাত্রা: দুপু‌রের খানা শে‌ষে আমরা চাঁদপুর স্টেশনে এ‌সে ট্রেনে উ‌ঠি। ২ টার দি‌কে ট্রেনটা ছা‌ড়ে।‌ট্রেনে উঠার ৩০ মি‌নিট পর ট্রেনটা হা‌জিগঞ্জ এ‌সে পৌছায়। তারপর আমরা আমা‌দের হা‌জিগ‌ঞ্জের বন্ধু‌কে বিদায় দি‌য়ে দেই। তারপর আমরা ৫ টা ৩০ এর দি‌কে ফেনী এসে ‌পৌছাই।

Related Posts

14 Comments

মন্তব্য করুন