চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অবদান

আধুনিক বিশ্ব সভ্যতার ক্রমবিকাশে প্রযুক্তির অবদান অপরিসীম।বর্তমান সভ্যতার অগ্রগতির ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি এক নতুন আশীর্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রাচীনকালে রোগ নির্ণয়ের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাই অনুসরণ করা হতো প্রথাগত পদ্ধতি। সে সময়ে মানুষ বিভিন্ন গাছ গাছালি, তাবিজ, পানি পড়া এবং ঝাড়ফুঁকের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তখন মানুষের জীবনে ছিল খুব সংকটাপন্ন। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যায় তো অসহায় ভাবে। মানুষের মতো প্রাণীরাও তখন মারা যেত সঠিক চিকিৎসার অভাবে।আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রযুক্তি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষের ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। রোগ নির্ণয়ে এসেছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি। প্রযুক্তির ফলে প্রাচীন পদ্ধতির কবিরাজি চিকিৎসা স্টলে স্থানে হোমিওপ্যাথিক ও অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা উদ্ভব হয়। মরণঘাতী রোগের ওষুধ আবিষ্কারের ফলে মানুষ গাছ গাছালি, তাবিজ কবজ ও ঝাড়ফুঁকে মতো কুসংস্কারের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। এসব চিকিৎসাব্যবস্থা আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ময়কর অবদান। বর্তমান চিকিৎসাশাস্ত্র পুরোপুরি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রাচীনকালে মানুষের দেহে কোন রোগ-ব্যাধি হলে তা নির্ণয় ব্যবস্থা ছিল না। চিকিৎসকরা তখন নিজেদের অভিজ্ঞতার সাহায্যে ওষুধ-পত্র নির্ধারণ করতেন। ফলে অনেক সময় সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হতো না। কিন্তু কালক্রমে রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসাপদ্ধতি সহজতর হয়েছে। রোগ নির্ণয় এবং রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় অবদান। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বড় সাফল্য হলো বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য নানারকম ওষুধপত্রের আবিষ্কার। একসময় দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা ব্যবস্থায় ছিলনা। বিজ্ঞান দ্বারা প্রযুক্তি সেসব রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। যেমন রক্ষার ব্যাপারে একটি প্রবাদ বাক্য প্রচলিত ছিল যে, যার হয় যক্ষা তার নেই রক্ষা। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এ মারাত্মক ব্যাধি কেও জয় করেছে ওষুধ আবিষ্কারের মাধ্যমে। এখন আর যক্ষা কোনো দুরারোগ্য ব্যাধি নয়। বর্তমান বিশ্বে যে দুটি রোগ সবচেয়ে দুরারোগ্য বলে গণ্য হচ্ছে তাহলো ক্যান্সার ও এইডস। এ দুটি রোগের চিকিৎসার কোন সুব্যবস্থা করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এর প্রতিরোধের উপায় নিরূপণের জন্য। মানবদেহের জন্য মানুষের হৃদপিণ্ড সংযোজনের মতো অলৌকিক ক্ষমতা প্রযুক্তির এক বিস্ময়কর অবদান। বিজ্ঞান বিশ্ব সভ্যতার জন্য একাধারে আশীর্বাদ ও অভিশাপ দুটোই। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কেবল আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে। প্রবাদ আছে যে, সুস্থ শরীরে সুস্থ মন বিরাজ করে। ধন্যবাদ সবাইকে

 

 

Related Posts

19 Comments

মন্তব্য করুন