ছলনা ময়ি মেয়ে

 

কি যেন একটা স্বপ্ন দেখছিলাম,
ঠিক সেই সময় ঘুম ভেঙ্গে গেলো মোবাইলের রিংটোন এর শব্দে,
ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখি ৫ টা মিস্ট কল, অপরিচিত নাম্বার তাই কল ব্যাক করার দরকার আছে বলে মনে করছি না,
কিন্তু কে হতে পারে?? এই চিন্তায় মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে। যাই হোক উঠে ফ্রেশ হয়ে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদের দিকে পা বাড়ালাম।
.

নামাজ পড়ে এসে কবর জিয়ারত করে বাসায় আসলাম,গোসল করে এসে নাস্তা করে দোকানে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম। দেখি ঐ একি নাম্বার থেকে আবারো কল,
আমিঃ হ্যালো
কলার: রাসেল আমাকে কি আর একটা বার সুযোগ দেওয়া যায়? প্লিজ! তুমি যা বলবে তাই করব আমি, বুঝতে পারলাম মেয়েটা কাঁদছে,কিন্তু আমিতো রাসেল না।
তাই বললাম কে আপনি? আর কোন রাসেল কে ফোন দিয়েছেন?
মেয়েটা নিশ্চুপ,স্কিনে তাকিয়ে দেখি কল কেটে দিছে। আমিই আর কল ব্যাক করার দরকার মনে করলাম না, আমার নিত্যদিনের চলার সাথি, আমার সব চেয়ে কাছের বন্ধু টি,ভি,এস মেট্রো টার কাঁধে চড়ে দোকানে চলে আসলাম।
.
ভুলে গেলাম সেই ফোন কলের কথা, দুপরে যোহরের নামাজ পড়ে আসার পর মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি সেই একি নাম্বার থেকে ১ টা মিসড কল ও একটা মেসেইজ, মেসেইজে লেখা
রাসেল আমার অপরাধ টা কি? কেন আমায় এই ভাবে কষ্ট দিচ্ছ? প্লিজ কাম ব্যাক।
কিন্তু কে এই মেয়ে?
রাহির সাথে ব্যাকাপ হওয়ার পর থেকে মেয়েদের সাথে তেমন একটা কথা বলতে মন চাইনা। তার পরেও ফোন দিলাম মেয়েটাকে।
মেয়ে : হ্যালো রাসেল! কেন আমায় এই ভাবে কষ্ট দিচ্ছ?
আমি : দেখেন আপু আপনার মনে হয় কোথাও একটা ভুল হচ্ছে, আমি রাসেল নয়, আমি আরিফ, জানিনা আপনি কোন রাসেল কে খোঁজ করছেন, আর কাহিনিটা কি বলা যায়?
মেয়ে : কিসের কাহিনি?
আমি : ঐ যে আপনি রাসেল সাহেব কে খোঁজ করছেন!
মেয়ে: খিল খিল করে হেসে উঠল। আসলে ভাইয়া আমি রাসেল নামের কাউকে চিনিনা, আমাকে এক জন আপনার নাম্বার টা দিয়েছে আপনাকে কল দিতাম,
.

আমি : মানে! কে?
মেয়ে: আমার নাম নাতাশা, আর ঐ মেয়ের নাম রাহি, আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রি।
আমি: আপনি কোন রাহির কথা বলছেন?
নাতাশা : আরে আপনার সাথে যে মেয়ের রিলেশন ছিল!!
আমি : অ, তা আপনি সকাল বেলা ঐ রকম করে কাঁদলেন কেন?
নাতাশা: ভাবি শিখায় দিছে, আসলে আমার একটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিল, কিন্তু ছেলেটা অন্য আর একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে। আমার মন খারাফ দেখে ভাবি জিঙেস করেছিল কি হয়েছে? সব কিছু খোলে বলার পরে ভাবি আমাকে আপনার নাম্বার টা দিছে, বলছে আপনার সাথে টাইম পাস করার জন্য
আমি — দেখেন আমার হাতে অতটা সময় নেই, আপনার আর কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন??
কিন্তু আমি তাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিলাম।
আর মনে মনে বললাম তোমাদের কাছে যেইটা টাইম পাস কিন্তু অন্যদিকের সেই বোকা মানুষ টা তোমাকের ছলনার ফাদে পা দেয় তোমাদের যখন তাকে ব্যবহার করা হয়ে যায় তখন অন্যপ্রান্তের মানুষটা কে ছুড়ে পেলে দাও ঠিক যেমন করে মানুষ চিপস খাওয়ার পরে যেইভাবে খালি পেকেট টাকে ফেলে দেয় ডাস্টবিনের কোন এক কোনায়।
হটাৎ দেখলাম আমার চোখ দুইটি ঝাপ্সা হয়ে আসছে। হাত দিয়ে চোখ মুছে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে আবার ব্যাস্ত হয়ে পড়ি বাস্তবিক জিবনে। আর এইভাবে শত মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায়  আরিফের ন্যায় শত শত ছেলেদের জিবন কাহিনী।

Related Posts