জীবনকে যেভাবে উপভোগ করার যায়।

জীবনকে উপভোগ করার এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই যা সবার জন্যে প্রযোজ্য। বিষয়টি সম্পূর্ণই আপেক্ষিক। আসলে কে কিভাবে জীবনটাকে উপভোগ করতে চান, এটি তার উপরেই নির্ভর করে। কেউ অল্পতেই খুশি, আবার কেউ সাত পুরুষের ধন একাই সাবাড় করে দিচ্ছেন!

এমতাবস্থায় আমরা জীবনকে উপভোগের ব্যাপারে একটা গড়পড়তা ধারনা পেতে পারি। যেমন-

১। প্রথমত, জীবনকে জানতে চেষ্টা করুনঃ আপনি যখন জানতে পারবেন যে, এই জগতে কোন কিছুরই কোন স্থায়িত্ব নেই এবং সবকিছুই সাময়িক, তখন আপনার কোন লোভই থাকবে না। অন্যের ধন সম্পদ, বাড়ি, গাড়ি, সুন্দরী স্ত্রীর সাথে নিজেরটার তুলনা করে কেউ সুখী হতে পারে না। যতটুকু আপনা থেকেই ধরা দেয়, তা নিয়েই হাসি মুখে দিনগুলো কাটিয়ে যেতে থাকবেন। আরোও চাই, আরোও দরকার, এসব করে করে হতাশাগ্রস্থ হবেন না। অন্যের অবস্থান দ্বারা নিজের অবস্থাকে বিচার করবেন না।

২। সঠিক জ্ঞানার্জনঃ জ্ঞানার্জন করুন, মানুষের সাথে মিশুন, যখন যেটা ভাল লাগে, সেটা সৎ এবং মানবিক উপায়ে অর্জন করার চেষ্টা করুন।

৩। সুস্থ শরীর, সুস্থ মনঃ নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করুন। সস্তা হোক কিংবা দামী, পুষ্টি রক্ষা করে এমন খাবার গ্রহণ করুন। নিয়মিত বই পড়ুন এবং নিজের চিন্তা চেতনাগুলোকে গুছিয়ে নিন। নিজের পোশাক এবং আবাসস্থল পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিজেকে সময় দিন। নিজেকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত না হয়েও নিজের যত্ন নেয়া যায়।

৪। জীবনের জন্য একটি মজবুত ভিত তৈরী করুনঃ অতি আপন জন ও নিকটাত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক, আপনার জীবিকা এবং আপন ব্যক্তিত্ব, এগুলোকে কখনো নড়বড়ে হতে দিবেন না। এগুলোর জন্যে স্বার্থ ত্যাগ করতেও দ্বিধা করবেন না। কারণ, এগুলো থেকে যা পাবেন, সেটাই আসল সুখ। মেনে নিতে শিখুন, কখনো কোন ছোটখাটো বিষয় নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করবেন না।

৫। সময়ের মূল্য দিনঃ যা হওয়ার তা তো হবেই। তবুও, একটু একটু করে সামনে এগোতে চেষ্টা করুন। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে চেষ্টা করুন। কোনকিছুতে অতিরিক্ত তাড়াহুড়োর কোন প্রয়োজন নেই।

৬। গান শুনুনঃ বিশেষ করে আধ্মাতিক গান, গজল, দেশীয় সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেয় এমন গান শুনুন এবং নিজের জীবনের সংগে জড়িয়ে নিন।

৭। অবসরে করণীয়ঃ নিজের জন্য একটি শেষ আশ্রয় নির্ধারন করুন এবং তা হাসিলের চেষ্টা করুন। হতে পারে সেটা আপনার শখের কাজ, মানুষ সেবা, ধর্মকর্ম বা অন্যকিছু, যার ক্ষেত্রে যেরকম, সেরকমভাবেই নিজেকে তৈরী করুন।

আপনার আচরন যদি অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারে, আর আপনি যদি সেটা উপলব্ধি করতে পারেন, তবে তার মত সুখের তো আর কিছু হতেই পারে না। জীবনকে উপভোগের মূলমন্ত্রই হলো, “সেচ্ছাচারিতা পরিহার করা”।

আসলে, নিজে যদি সুস্থ থাকেন, আপনার কোন দুশ্চিন্তা যদি না থাকে, তাহলে ধরে নেয়া যায়, যে কোন পরিস্থিতিতেই আপনি ভালো আছেন।

সকলের সার্বিক মঙ্গল ও সুস্থতা কামনা করছি। আল্লাহ্‌ হাফিজ।

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন