জীবন হলো বহমান নদীর মত। যদিও পানির মত জীবন স্বচ্ছ নয়। জন্মলগ্ন মানুষের জীবনের লড়াই শুরু হয়। এই লড়াই মানুষের মৃত্যু অবধি চলতে থাকে। সকল মানুষের জীবনে উত্থান-পতন আছে। জীবনে চলতে গেলে মানুষের অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। কেউ কেউ অন্যের জীবনের রঙ কেড়ে নিয়ে নিজের জীবন সাজাতে চায়।
অনেকে উপকারের জন্য নিজের জীবনের চাইতে অন্যের জীবন নিয়ে বেশি ভাবে। আবার কেউ ক্ষতি করার জন্যও অন্যের পিছনে লেগে থাকে। অন্যের স্থান দখল করে নেয়। অন্যের ক্ষতি করে সাময়িক লাভবান হওয়া যায় কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী নয়। দেখা যায় অন্যের ক্ষতি করলে অনেক সময় নিজের জীবন বিপন্ন হয়।
অনেক পরিবারে আপন জনেরা ক্ষতি করে দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ করে টাকা সম্পত্তি ছিনিয়ে নেয়। আপনজনদের অধিকার হতে বঞ্চিত হয়। এমন একটি ঘটনা আজ লিখলাম। বিদেশে একটি কোম্পানিতে চাকুরিরত কর্মচারীর সাথে মালিকের স্ত্রীর বোনকে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। কর্মচারী অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেললে মালিক তার আইডি ক্যান্সেল করে চাকুরি হতে বরখাস্ত করে দেয়।
সেই কর্মচারীটি তার স্ত্রী-সন্তানসহ দেশে ফেরত চলে আসে। দেশে আসার পর তার ভাই লোকটির কেনা বাড়িটি দখল করে নেয়। এতে বেচারী ভীষণ বিপদে পড়ে যায়। অনেক চেষ্টা করার পর দেশে একটি কোম্পানিতে চাকুরি যোগাড় করে নেয়। সেখানে ছয় মাস পর চাকুরি চলে যায়। এক মাসের বেতনের টাকা কোম্পানি মেরে দেয়।
সে তখন আবার বিপদে পড়ে যায়। পরবর্তীতে নিজের জমানো যতটুকু টাকা ছিল সেটা দিয়ে বন্ধুর সাথে ব্যবসা শুরু করে। একটি দোকান ভাড়া নেয়। কিছুদিন পর বন্ধুটি দোকান হতে তাকে বের করে দিয়ে দোকানটি ছিনিয়ে নেয়। লোকটি বার বার এতকিছু হারানোর পর মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলে। সংসারে অশান্তি নেমে আসে। জীবন বিভীষিকাময় হয়ে উঠে।
অনেক পরিবারই আপনজনদের যোগ্য অধিকার, সম্মান দিতে চায় না। এতে সেই পরিবারই ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক ক্ষেত্রে। কারণ পাঁচ জনকে নিয়ে একটি পরিবার। কেউ যদি তার সম্মান অধিকার হতে বঞ্চিত হয় তবে পরিবারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সংসারে নারীদের অবহেলা করা হয়। পুরুষেরা অবহেলিত হয় না এ কথা বলব না। তবে নারীরা বেশি অধিকার বঞ্চিত হয়। নারীরা যখন বাবার বাড়িতে থাকে তখন সে বিভিন্নভাবে অবহেলিত হয়।
আবার শ্বশুরবাড়িতেও অবহেলিত হয় অধিকাংশ নারী। অনেকক্ষেত্রে নিজের মা, শাশুরি মা সংসারে অন্য কেউও থাকে যারা নারীদের অধিকার হতে বঞ্চিত করে। অনেক নারীরাই নারীদের যোগ্য সম্মান দিতে চায় না। অনেক পুরুষদের ক্ষেত্রেও আশা করা যায় না। তাই নারী-পুরুষ এই দৃষ্টিতে না দেখে আসুন আমরা সবাই সবাইকে জোগ্য সম্মান-মর্যাদা দেই।