বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রিলেটেড আজকে যেই টপিকটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর বাস্তবিক প্রয়োগ বা বাস্তবে এর ব্যবহার নিয়ে।পুরো আর্টকেলটি পড়লে অনেক কিছুই জানতে পারবেন।তো চলুন শুরু করা যাক আজকের আর্টিকেল।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর নাম হয়তো আমরা সবাই শুনেছি। এটি বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।জিন জীবদেহের বংশগতি ধারণ করে।আর জিন বহন করে DNA। সুতরাং বলা যায় DNA এর মধ্যে প্রাণীজগৎের প্রাণীদের বংশগতি বিষয়ক তথ্য সংরক্ষিত থাকে,যা নিয়ে আমি গত কোন এক আর্টিকেলে লিখেছি,যেটি ছিল DNA Computer নিয়ে,সেটা পাড়লে পড়ে নিতে পারেন।যাহোক আজকে আর সেদিকে গেলাম না।এখন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং আসলে কী?
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো কোন জীবকোষ থেকে কোন সুনির্দিষ্ট জিন নিয়ে অন্যকোনো জীবকোষে স্থাপন ও কর্মক্ষম করা বা নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য জীবের DNA তে পরিবর্তন ঘটানোকেই বলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বর্তমান বিশ্বে ব্যাপক ভাবে আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।এতদিন হয়তো ভাবতাম শুধু মেডিসিন সায়েন্স বা চিকিৎসা ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহৃত।কিন্তু আসলে তা নয়।জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো মৎস উন্নয়ন,কৃষি ক্ষেত্রে,পরিবেশ সুরক্ষা,ভাইরাসনাশক বা ভ্যাকসিন তৈরিতে,ফার্মাসিউটিক্যালে,হরমোন তৈরিতে ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
মৎস উন্নয়নেঃএখন আমরা অনেক বড় ধরনের রুই মাছ,তেলাপিয়া,কার্প ইত্যাদি দেখে থাকি, এছাড়াও আগে বাজারে অনেক মাছ দেখতাম যেগুলো আগে ছোট ছিল কিন্তু ইদানীং সেই মাছগুলো আশ্চর্যজনক ভাবে একটু বড় দেখায়।আসলে এসবই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জাদু।
কৃষি ক্ষেত্রেঃকৃষিক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভূমিকা ব্যাপক।উন্নত মানের ফসল,সহনশীল জাত,বৈচিত্রতা সবই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে হয়েছে। বর্তমানে পোমাটো নামের একটি উদ্ভিদ আছে যে উদ্ভিদে একই সাথে টমোটো ও আলু উভয়ই উৎপন্ন হয়।
পরিবেশ সুরক্ষাঃজেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।যেগুলোর পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
ভাইরাসনাশক তৈরিঃমানুষের কোষ থেকে এক ধরণের রসকে কাজে লাগিয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিয়াররা ভাইরাসনাশক তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছেন।
হরমোন তৈরিঃজেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সুফলে গ্রোথ হরমোন তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।যার ফলে মানুষ বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
ফার্মাসিউটিক্যালঃজেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে জিনের ক্লোনিং করে তা ফার্মেসি শিল্পে ব্যবহৃত।যারা ডায়বেটিস রোগী আছেন বা যাদের পরিবারের কেউ ডায়াবেটিস রোগী থেকে থাকলে তারা সবাই ইনসুলিনের সাথে পরিচিত।আসলে এই ইনসুলিন কোথা থেকে আর কীভাবে অাসে?
এই ইনসুলিন মানব দেহের অগ্নাশয়ের আইলেটস্ অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স কোষ থেকে জিন ক্লোনিং এর মাধ্যমে আসে।সুতরাং বলাই যেতে পারে এই ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর অবদান যে কতটুকু।
- অনেক ক্ষেত্রে সন্তান মার পেটে থাকলে সন্তানের অনেক ত্রুটি দেখা যায়।জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে এসব ত্রুটি সন্তান পেটে থাকলেই সংশোধন করা যায়।ফলে, সন্তান কোন রকমের ত্রুটি ছাড়াই জন্মগ্রহণ করে।
অতএব,বোঝাই যাচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভূমিকা কতটুকু।আশা করি অনেক নতুন তথ্যই জানতে পেরেছেন।
সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।