ডিপ্রেশনে থেকে বেচে ফেরার ভয়ংকর কাহিনি

আমি যেভাবে ডিপ্রেশন থেকে মৃত্যু কে কাছ থেকে দেখে এসেছি
আমার জন্য গত বছরটা খুবই কষ্টের ছিল, এখন যে ভালো তাও নয় তবে আগের চেয়ে অনেকটা ভালোই আছি। ডিপ্রেশন কে আমরা কিন্তু টেনশন মনে করি আসোলে কিন্তু ডিপ্রেশন টেনশন নয়, তবে টেনশন থেকে ডিপ্রেশনের সৃষ্টি হয়,একটা মানুষের অতিরিক্ত টেনশন তাকে ডিপ্রেশনে ফেলে দেয়। ডিপ্রেশন কতোটা ভয়ংকর হতে পারে শুধু মাত্র তারাই বলতে পারবে যারা এর স্বীকার হবে। এর মানে আমি বলতে পারবো কারন আমি তো নিজেই এর স্বীকার হয়েছি। আসোলে আমি আমার সেই ভয়ানক সময়ের কথা শেয়ার করতে চাচ্ছি।

এই জন্য চাচ্ছি যে, আমার মতো সবাই এই ভয়ানক ডিপ্রেশন থেকে বের হয়ে আসুক, কেউ যেনো আত্মহত্যা না করে এই ডিপ্রেশন থেকে আসোলে আমার থেকে যদি কেউ শিখতে পারে তাহলে তো আমার খুশি। তো যাই হোক আমার সেই গল্পটা শোনাই। একদিনে কখনো ও আপনি ডিপ্রেশনের স্বীজার হবেন না এটা ১০০% সত্যি কথা। এর জন্য সময় লাগে, তবে আমার মনে হয় বেশির ভাগ যে ডিপ্রেশনের স্বীকার হয় তার পিছনে ২ টা কারন থাকে ১ হলো ক্যারিয়ার, কারন পড়াশোনা থাকলেও তো বেকারত্ব অনেক বেশি এটা মানুষকে কতোটা খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে তা সেই বুজে যে বার বার চাকরির পরীক্ষায় বার বার ফেল করছে বা অন্য কোনো কারনে চাকরি পাচ্ছে না ২ নাম্বার কারন হলো সম্পর্ক গতো জটিলতা। আমি তো দুটা কারনেই ডিপ্রেশনে চলে গেছিলাম। এতোটা খারাপ পর্যায়ে গেছিলাম আজও মনে হলে ভয় লাগে। কতোটা ভয়ংকর অবস্থা ছিলো বলে বোঝানো সম্ভব নয়।

আমাদের পরিবারের সবাই তো টেনশনে ছিল, আমাকে নিয়ে। আমি তো হাসি ও ভুলে গেছিলাম, ভুলে গেছিলাম আমাকে। জীবন টা কখনোই সোজা পথে চলে না। আর জীবনে বেচে থাকাটা একটা যুদ্ধের চেয়ে কম নয়। সমস্যা জীবনের অন্যতম একটা অংশ। আমি যখন একেবারে ভেংগে পড়লাম তখন খাওয়া দাওয়া সব গেছিলাম, দিনে তিন বারের বেলা একবার কি দু বার খুব জোর করে খাইতাম,খিদাই লাগতো না।

তারপর আমার রাতে ঘুম আসতো না,এটা সবচেয়ে কষ্ট দিতো আমাকে, ঘুম আসা খুবই জরুরি কিন্তু আসতো না ঘুম সারারাত, একাত ওকাত করে করে সব রাতগুলো পার করেছি। এরপর কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হতো না কি বলবো? কিভাবে কাউকে ফেস করবো সেটাও তো পারতাম না, শুধু কান্না করতাম।

তবে দুটা কাজ করতাম আমি একটা হলো আমি সবসময়ই ইন্টারনেট চালাতাম, ইউটিউবে ভিডিও দেখতাম, মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতাম, ফানি ভিডিও গুলো দেখতাম যতোক্ষণ চার্জ থাকতো মোবাইলে ততক্ষণ আমি ফোনে নেট চালাতাম, এটা এখন আমার এডিকশন হয়ে গেছে। আমি তো আর এখান থেকে বের হতে পারতেছি না। আর একটা কাজ করছিলাম সেটা হলো ধর্মের দিকে খুব ঝুকে গেছিলাম, সবসময় দোয়া দরুদ পড়তাম আর কান্না করতাম।

এরপর গোসল করা নিজের খেয়াল রাখা যত্ন নেয়া সবটাই ভুলে গেছিলাম। ইভেন আমি ঘর থেকেই বের হতাম না। ২৪ ঘন্টা ঘরে থাকতাম,ভালো লাগতো না কোনো কিছুই। এসব যা বলতাম তা হলো ডিপ্রেশনের লক্ষণ। এগুলো হয় ডিপ্রেশনে গেলে, আর মরে যেতে ইচ্ছে করে। ভালো লাগে না আর জীবন, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা উঠে গেছিলো, এই সব সমস্যা এগুলো বড়ো মনে হতো আর মনের মধ্যে কি কি যে আসতো তা বলে শেষ করা যাবে না।

এর পরের বার আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে আপনি ডিপ্রেশনে থেকে মুক্তি পাবেন।

Related Posts

9 Comments

  1. ভাই এই সমস্যাটা আমারও আছে। আমিও খুব বেশি মোবাইল টিপি। যতক্ষণ মোবাইলে চার্জ থাকে ইভেন চার্জে লাগিয়েও। এজন্য খুব খারাপ লাগে। মোবাইল এতো বেশি টিপতে চাই না কিন্তু তবুও যেন চুম্বকের মতো টানে। আরেকটা ব্যাপার, মানুষের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারেও আমার সমস্যা। কারো সাথে মিশতে পারিনা। একধরনের ভয় কাজ করে। অন্যান্য ছেলেরা যেমন হাসি-তামাশা করে আমি তা কতে পারিনা। ঠিক করে গুছিয়ে কথাও বলতে পারিনা। কথা বলতে আমতা-আমতা ভাব আসে। গুছিয়ে কথা বলতে না পারার যে কষ্ট সেটা আমি বুঝি। কারণ এ সমস্যাটা আমি ফেস করছি। ঠিকটাক কথা বলতে পারলেই হাসি-খুশি থাকতে পারতাম। শুভ কামনা তোমার জন্য ভাই।

মন্তব্য করুন