ঢাকা আসার সময় বাসের ভাড়া দিতে পারেননি রুবেলের বাবা

বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটের সকল ব্যাটসম্যানের কাছে এক আতঙ্কের নাম রুবেল হোসেন। তার বাবা সবসময় ক্রিকেট খেলার জন্য বিরোধিতা করতেন। অন্য বাবা মার মতো তিনিও চেয়েছিলাম যে, রুবেল হোসেন ভালোভাবে পড়াশোনা করে চাকরি বাকরি করবে। কিন্তু তার ক্রিকেটের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য তিনি ঘর থেকে পালিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। তার বাবা ছিলেন হতভাগা একজন মৎস্যজীবী। এখানে অনেকের হয়তো বা অভিমত থাকতে পারে, যে তার বাবা ছিলেন একজন রিকশাচালক। তবে আমি ইউটিউব, গুগোল থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন থেকে অধিকাংশ যে তথ্য পেয়েছি তাতে উল্লেখ্য যে, রুবেলের বাবা একজন মৎস্যজীবী। দুইবেলা যেখানে খাওয়া নিয়ে টান পরান ছিল সেখানে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানো ছিল এক আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন। তবুও রুবেল হোসেন কখনো দমে থাকেননি। স্কুল পালিয়ে সব সময় ক্রিকেট খেলা খেলতেন। আমরা জানি যে 2000 সালের দিকে বাংলাদেশের কোন ফাস্ট বোলার ছিলনা। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ফাস্ট বোলার হিসেবে আবির্ভাব ঘটে মাশরাফি বিন মোর্তজার তবে মাশরাফি বিন মর্তুজার। পরে ফাস্ট বোলার হিসেবে দলে প্রবেশ করেন রুবেল হোসেন। গ্রামীণফোন পেসার হান্ট তাকে তুলে এনেছে জাতীয় দল পর্যন্ত। বাগেরহাটের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন রুবেল হোসেন। রুবেল হোসেনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে যখন রুবেল হোসেন বাগেরহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করে তখন তার বাবা তাকে বাসের ভাড়ার টাকাটাও হাতে তুলে দিতে পারেননি। বাসের ছাদে চড়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি বাংলাদেশ দলের একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। রুবেল হোসেন বলেন, “আমি খুব ভালো ব্যাটসম্যান ছিলাম। ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। বাবা ক্রিকেট খেলা পছন্দ করতেন না। তিনি আমার ক্রিকেট খেলার জন্য পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাই আমি লুকিয়ে লুকিয়ে ক্রিকেট খেলতাম। আমি অনেক বড় বড় ছক্কা মারতে পারতাম। অনেক ভালো ব্যাট করতে পারতাম। এবং সজোরে বল করতে পারতাম। সেজন্য আমাকে অনেক জায়গায় হায়ার করে নিয়ে যাওয়া হতো। আমি যখন প্রথম ঢাকায় আসি তখন আমার বাবা আমাকে বাসের ভাড়া টাকাটাও দিতে পারেননি। ঢাকায় আসার পর আমাকে অনেক ধরনের সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। আমি কোন খানে থাকার জায়গা পেলাম না। পরে বিসিবি আমাকে আশ্রয় করে দেন। ক্রিকেট এর মাধ্যমে আমি আমার ভাগ্য পরিবর্তন করি। “প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তার অভিষেক শুরু হওয়ার পরে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের প্রথম ম্যাচে 137 রান দেওয়ার বিনিময় ১ উইকেট শিকার করেন।প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ভালো খেলার মাধ্যমে তিনি জাতীয় দলে সুযোগ পান। 2007 সালে তার ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। সেই ম্যাচে 4 ওভার বল করে 34 রান দেওয়ার বিনিময়ে রুবেল হোসেন সংগ্রহ করে নেন চারটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। যা বাংলাদেশের জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। টেস্ট খেলা এবং টি-টোয়েন্টি খেলায় রুবেল হোসেন 2009 সালে অভিষেক লাভ করেন। বর্তমানে রুবেল হোসেন বাংলাদেশের একজন সফল ফাস্ট বোলার এবং বিশ্বের সকল পাকা পাকা ক্রিকেটারের কাছে বিধ্বংসী বলার বিশেষ।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের আজকের আর্টিকেলটি কেমন লাগলো যদি আপনাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ…

Related Posts

12 Comments

মন্তব্য করুন