পেপাল বাংলাদেশে এখনও বৈধ হয়নি। অনেকে নানাভাবে পেপাল একাউন্ট তৈরি করে ডলার, পাউন্ডসহ ফরেন কারেন্সি পেপালের মাধ্যমে তুলতে গিয়ে প্রতারিত হন। বিভিন্নরকম জালিয়াতি আর হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। বিশেষ করে যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ডলার, পাউন্ডসহ ফরেন কারেন্সি পেপালের মাধ্যমে তুলতে গিয়ে নানারকম জালিয়াতি আর হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন, তাদের জন্য বিকাশ নিয়ে এসেছে এক অপূর্ব সুযোগ।
দারুণ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সাররা এখন থেকে পেওনিয়ারের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ডলার, পাউন্ডসহ যেকোনো ফরেন কারেন্সি বিকাশের মাধ্যমে ঘরে বসে তুলতে পারবেন। এর জন্য কোনো ব্যাংকে যাওয়ারও দরকার হবে না। শুধু বিকাশের দোকানে গিয়ে ক্যাশ আউট করে টাকা হাতে নিতে হবে।
আমাদের দেশে বিপুলসংখ্যক ফ্রিল্যান্সার বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ফ্রিল্যান্সিং সাইট, আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার, হায়ারসাইন, ক্রিয়েটিভ জবস ইত্যাদিতে কাজ করেন। পেপালের মাধ্যমে বৈধভাবে টাকা আনতে তাদের ব্যাংকের নানারকম ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। আবার সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশের সাইট ব্যবহার করে পেপালের মাধ্যমে অবৈধভাবে টাকা তুলতে গিয়ে অনেকে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।
এমনকি অনেক কষ্ট করে উপার্জিত অর্থ অনেকে খুইয়েছেন। পেপালে অনেকে সর্বস্ব ডলার হারিয়েছেন একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবার কারণে। আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ সম্প্রতি এদেশের বিপুলসংখ্যক ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নিয়ে এসেছে পেওনিয়ারের মাধ্যমে বিকাশ রেমিট্যান্স সেবার এক অভূতপূর্ব দারুণ সুযোগ।
বিকাশের এই দারুণ সুযোগ কাজে লাগিয়ে যে কেউ এখন বিদেশ থেকে ডলার-পাউন্ডসহ পেওনিয়ারের মাধ্যমে বিশ্বের সবধরনের কারেন্সি টাকায় কনভার্ট করে বিকাশে তুলতে পারবেন। বিষয়টি খুবই সহজ। এজন্য প্রয়োজন হবে একটা বিকাশ একাউন্ট। আর বিকাশ একাউন্ট করার জন্য বিকাশ অ্যাপ গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিলেই হল। বিকাশ অ্যাপের “মোর” বা “আরো” অপশন ক্লিক করলে রেমিট্যান্স অপশন আসবে।
রেমিট্যান্স অপশন ক্লিক করলে পেওনিয়ার অপশন আসবে। পেওনিয়ার অপশনে “একাউন্ট খুলুন” এ গিয়ে ক্লিক করলে ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বরসহ চাহিত সব তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে। সব তথ্য সঠিকভাবে দিলে পেওনিয়ার একাউন্ট চালু হয়ে যাবে। তারপর পেওনিয়ার একাউন্ট বিকাশের সাথে কানেক্ট করে দিতে হবে। ব্যস, হয়ে গেলো। এখন আপনি বিদেশের যেখান থেকে ডলার-পাউন্ড আনতে চান, বিকাশের মাধ্যমে সরাসরি টাকায় পরিণত করতে পারবেন।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিকাশের এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিকাশের এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারনে এখন বাংলাদেশের লাখো কোটি ফ্রিল্যান্সার নির্বিঘ্নে মনের আনন্দে কাজ করতে পারবেন। কেননা, তাদের আর মাসের পর মাস ব্যাংকে টাকা আসার অপেক্ষায় থাকতে হবে না। ব্যাংকে ঘোরাঘুরি করে সময় নষ্ট করতে হবে না। বিকাশ ও পেওনিয়ারের এই সিস্টেম ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সাররা খুব সহজেই নিজের বিকাশে টাকা তুলতে পারবেন। তাই বলা যায় বিকাশের এই সুবিধা পেপালের চেয়ে অধিক সুবিধাজনক। তাই আমাদের এখন আর পেপাল এর প্রয়োজন নেই।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিকাশ ২% বোনাস দিচ্ছে। আর পেওনিয়ার ডলার-পাউন্ড থেকে টাকা কনভার্ট করে বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য যে কমিশন নেবে, তার পরিমাণ ঐ ২% অর্থ। কাজেই কেউ যদি বিদেশ থেকে ১০০ ডলার আনে তাহলে সে ১০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকাই পাবে। প্রতি ডলার যদি ৮৬ টাকা হয়, তাহলে সে ১০০ ডলারের জন্য ৮,৬০০/- টাকাই পাবে। বিকাশ কোনো টাকা কাটবে না। এর চেয়ে আর বড় সুবিধা আর কি হতে পারে? তাই আমরা যারা বিদেশ থেকে ডলার টাকায় কনভার্ট করতে চাই, আমাদের জন্য বিকাশের এই পেওনিয়ার রেমিট্যান্স সিস্টেম হবে সবচেয়ে উত্তম!!!
সাইফুল হক : লেখক, সম্পাদক, গবেষক।