ফর্সা হওয়ার ক্রিম ও একটি প্রচলিত ভুল ধারণা।

উপরের ছবিতে পাশাপাশি দুজন মেয়ের ছবি দেয়া হলো। তারা আমাদের উপমহাদেশ তথা মিডিয়াব্যাপী মোটামুটি বিখ্যাত বলাই যায়। তাদের একজন হলো বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের মেয়ে সুহানা খান, আরেকজন হলো ভারতের বর্তমান সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি মুখেশ আম্বানির মেয়ে ইশা আম্বানি। এরা কেহই ফর্সা ত্বক নিয়ে জন্ম নেয়নি।

একটা বিষয় ভালোভাবে ভেবে দেখুনতো এদের কি টাকার কোনো অভাব আছে? নিশচয় আপনি ভেবে পাবেন, পৃথিবীর সব থেকে বেস্ট ব্রান্ডর মেকাপ বা স্কিনকেয়ার না বিউটিশিয়ান কিনে ব্যবহার করার সামর্থ্য তাদের আছে। অথচ আপনি নিজেই এদের গায়ের রঙ খেয়াল করে দেখুন। তারপর, আবার ভাবুন।

ডিপ মেকাপ আর ক্যামেরার গুনগত মানের জন্য এদের গায়ের রঙ ভালো ও সুন্দর দেখালেও মেকাপ ছাড়া এদের ন্যাচারাল স্কিন টোন কিন্তু উজ্জ্বল শ্যামলা বর্নের। শুধু এরাই নয়। তাদের ছাড়াও আরও রয়েছে দীপিকা, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, বিপাশা বসু, পাওলী দাম এদের সবার গায়ের রং কিন্তু শ্যামলা। অথচ, তারাই আবার নামীদামী সেলেব্রিটি। তারা কোনো স্পেশাল প্রোডাক্ট গায়ে মুখে মেখে ফর্সা হয়ে যায়নি।

অথচ আমরা আপনারা গায়ের রং নিয়ে কি না করছি। ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দামের গ্রিন টি সহ কত হরেক রকমের ক্রিম লাগাচ্ছি। নিজের চামড়াটাকে গ্লাস স্কিন বা কোরিয়ার স্কিন বানিয়ে ফেলছি। আর এটা করেই খুবই মজা পাচ্ছি আমরা। ভেবে ভেবে একটু মাথা খাটান। এই ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার ক্রিম যদি এতই ভালো হবে তবে এরা এগুলো লাগিয়ে নিজের স্কিনকে গ্লাস স্কিন বা কোরিয়ার স্কিন কেন বানায় না?

মানুষের শরীরের স্কিন টোন কখনোই স্থায়ীভাবে চেঞ্জ করা যায় না। এটা আপনারা আমরা কখনো মানতে রাজি হইনা। ন্যাচারাল বা ভালো প্রোডাক্ট নিয়মিত ইউজ ও শরীরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে স্কিন হেলদি রাখা যায়। যার কারণে আমাদের শরীর দুই থেকে তিন শেড পর্যন্ত ফর্সা লাগে। কিন্তু কালো বা শ্যামলা বর্ণকে একেবারে কখনো ফর্সা করা যায় না।

আর এদিকে আপনারা গ্রিন টি বা ক্রিম লাগিয়ে ১৫ দিনে কালো থেকে ধবধবে সাদা হয়ে যাচ্ছেন। এই ক্রিমের ব্যবহার আপনাদের স্কিনের উপর কি মারাত্মক প্রভাবই না ফেলছে এটা কি একবারও ভেবে দেখেচেন? আপনারা আসলেই বুঝতে পারছেন না, না কি বুঝেও না বুঝার ভান করে আছেন? এ বিষয়ে আমার সহ অনেকেরই বোধগম্য হয় না।

আর কতো বোকা সাজবেন? বোকা সেজে সেজে সুযোগ সন্ধানীদের টাকা ইনকাম করার সুযোগ করে দেবেন? তারপরও তা নিজের ক্ষতি করে? কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়া কালো থেকে ফর্সা হওয়া গেলে দুনিয়ায় কোন বোন ই কালো থাকতো না।

এবারতো সময় নিজে মাথা খাটান। নিজের ভালোটা এবার বুঝুন। এসব ফর্সা হওয়ার ক্রিম মেখে নিজের শরীরটা এমনকি নিজের লাইফটাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন না।এর পরেও যদি আপনারা না বুঝেন তাহলে আর কিছু বলার নাই।

ভালো থাকবেন।

Related Posts