ফ্রিলেন্সিং কি? ফ্রিলেন্সিং করতে কি কি জানতে হবে ?জেনে নিন-

আসসালামুয়ালাইকুম ,আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদেরকে একটি খুবি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর পরিষ্কার ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব। এই পোস্টটি মুলত যারা নতুন ফ্রিলেন্সিং থেকে আয় করে ক্যারিয়ার গড়বেন চিন্তা করছেন কিন্তু ফ্রিলেন্সিং বিষয় নিয়ে কোন ধারনা নেই তাদের জন্য। তাই আপনার যদি ফ্রিলেন্সিং নিয়ে পরিপূর্ণ ধারনা থাকে তাহলে আপনি পোস্টটি এরিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি ফ্রিলেন্সিং বা অনলাইনের আয় নিয়ে কোন ধারনা না থাকে বা এটি নিয়ে আর ও ভাল করে জানতে চান তা হলে পোস্টটি পুরোপুরি পরুন। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে  আপনি ফ্রিলেন্সিং  নিয়ে একটি পরিপূর্ণ ধারনা পাবেন।

 

যারা ফ্রিলেন্সিং করবে বলে ভাবছে, তাদের সবার মনে কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খায় যে ফ্রিলেন্সিং কি? ফ্রিলেন্সিং করতে কি লাগবে? আরও অনেক কিছু । এই পোস্টটিতে আমি আপনাদের মনের প্রশ্ন গুলো তুলে ধরব, এবং সে বিষয় গুলোতে ভালভাবে বুঝিয়ে  লিখার চেষ্টা করব।

 

·        ফ্রিলেন্সিং কি?কে বা কারা ফ্রিলেন্সিং করতে পারবে?

নতুনদের মনে প্রথমে এ যে প্রশ্নটি থাকে সেটি হল ফ্রিলেন্সিং কি?

ইংরেজিতে ফ্রিলেন্সিং (Freelancing) আর বাংলায় মুক্তপেশা। ফ্রিলেন্সিং বলতে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে মু্ক্তভাবে কাজ করাকে বোঝায়।যারা এধরনের কাজ করেন তাদের বলা হয় ফ্রিলেন্সার (Freelancer) । আরো সহজভাবে বলা যায়, একজন ফ্রিলান্সার হচ্ছে আত্ম-কর্মশীল, যে কোন নির্দিষ্ট কর্মদাতার অধীনে দীর্ঘ সময়ের জন্য কাজ না করে ইন্টারনেটে ঘরে বসে নিজেস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী দেশ বিদেশের বিভিন্ন কম্পানি, এজেন্সিতে নিজেদের নিযুক্ত করে শ্রম দেয় ।  অনেকে মনে করে যে ফ্রিলেন্সিং একটি কাজ।আমি তাদের বলব তাদের এই ধারনাটি ভুল। যেমন ডাক্তারি একটি পেশা, এবং ডাক্তারি বিভিন্ন সেক্টর থাকে ফ্রিলেন্সিং ও একটি পেশা। ফ্রিলেন্সিং সেক্টরে ও অনেক কাজ আছে যার যেকোনো একটি বা একাধিক ক্ষেত্রে স্কিল্ বাড়িয়ে আমরা মুক্তভাবে অনলাইনের মাধ্যমে  ঘরে বসে কাজ করে থাকি।

 

এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে ফ্রিলেন্সিং কারা করতে পারে?

আসলে ফ্রিলেন্সিং কে বা কারা করতে পারবে তার জন্য ধরা বাধা কোন নিয়ম নেই। যে কেউই কম্পিউটারের যেকোনো সেক্টরের কাজে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে একজন ফ্রিলেন্সার হিসাবে কাজ শুরু করতে পারে। ফ্রিলেন্সিং কাজে কেউ শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে না ।কিন্তু একজন ফ্রিলেন্সার এর যেহেতু দেশ বিদেশি  ক্লায়েন্টের সাথে কমিউনিকেশন করতে হয় তাই তার  ইংরেজিতে কমিউনিকেশন স্কিল অবশ্যই ভাল হতে হবে তা না হলে এতে সফল হওয়া সম্ভব নয়।

 

·        ফ্রিলেন্সিং করতে কি কি লাগবে ?

পরবর্তীতে যে প্রশ্নটা টা মনে আসে তা হল  ফ্রিলেন্সিং করতে আমাদের কি কি লাগবে?

সেক্ষেত্র আমি বলব, আপনি যদি ফ্রিলেন্সিং করে ক্যারিয়ার গরতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার চারটি গুণ থাকতে হবে তা না হলে ফ্রিলেন্সিং করা সম্ভব হবে না।ফ্রিলেন্সিং করতে আপনার যে গুনগুলো থাকতে হবে তা হল-

  1. ধর্য্যঃ ফ্রিলেন্সার হিসাবে কাজ শুরু করার প্রথম দিকে একজন ফ্রিলেন্সারকে অনেক ধৈর্যের প্রমান দিতে হয়। কারন শুরুতে একজন ফ্রিলেন্সারকে কাজ পেতে অনেক অপেক্ষা করতে হয়। তাই ধর্য্য না থাকলে একজন ফ্রিলেন্সার মাঝ সময়ে নিরাশ হয়ে পরে এবং সফল হতে পারে না।
  2. দক্ষতাঃ একজন ফ্রিলেন্সারকে অবশ্যই কম্পিউটারের যেকোনো একটি বা একাধিক কাজের উপর দক্ষতা থাকতে হবে। কাজের দক্ষতা ছাড়া  ফ্রিলেন্সিং কাজ করা সম্ভব নয়। তাই ফ্রিলেন্সিং পেশায় আশার আগে একজন ফ্রিলেন্সারকে কম্পিউতারের এক বা একাধিক কাজে দক্ষ হয়ে তারপর কাজ শুরু করতে হবে।
  3. ইন্টারনেট রিসার্চ দক্ষতাঃ একজন ফ্রিলেন্সারকে অবশ্যই ইন্টারনেট থেকে কিছু খুজে বের করার ক্ষমতা থাকতে হবে। কোন মানুষই কোন কাজের সম্পূর্ণভাবে জানে না।কাজ করতে করতে কখন যদি কোথাও আটকে যায়  তাহলে যেন ইন্টারনেট রিসার্চ করে তার সমাধান করতে পারে তার জন্য একজন ফ্রিলেন্সারের ইন্টারনেট রিসার্চ ক্ষমতা থাকে হবে।
  4. ইংরেজিতে কমিউনিকেশন ক্ষমতাঃ ফ্রিলেন্সিং এর কাজ করার জন্য একজন ফ্রিলেন্সারের দেশ বিদেশের বিভিন্ন ক্লাইনটের সাথে কথা বলতে হয়,আর তাদের সাথে কথা বলার জন্য ইংরেজি ভাষা ব্যাবহার করতে হয়। তাই একজন ফ্রিলেন্সারকে অবশ্যই ইংরেজিতে কমিউনিকেশন করার ক্ষমতা রাখতে হবে।

যখন কেউ ফ্রিলেন্সিং করে ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবে তাকে আগে এই বিষয় গুল ভাল করে জেনে পরে ফ্রিলেন্সিং করার কথা চিন্তা করা উচিত। নতুবা একজনের কখনো ফ্রিলেন্সিংকরে উন্নয়ন সম্ভব হবে  না।

 

·        ফ্রিলেন্সিং করার জন্য কি কাজ শিখবো?

এগুলো জানার পর আমরা যা ভাবি তা হল যে ফ্রিলেন্সিং করতে কোন কাজ টা শিখলে ভাল হবে?

ফ্রিলেন্সিং কাজের পরিধি অনেক বেশি। বিশ্বব্যাপী এধরনের কর্মপদ্ধতির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে শীর্ষে থাকা কয়েকটি কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

 

  • লেখালেখি ও অনুবাদ: নিবন্ধ , ওয়েবসাইট কন্টেন্ট, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি, ছোট গল্প, প্রাপ্তবয়স্কদের গল্প এবং এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় ভাষান্তরকরণ উল্লেখযোগ্য।
  • সাংবাদিকতা: যারা এবিষয়ে দক্ষ তারা বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রপত্রিকায় লেখালেখির, চিত্রগ্রহণের পাশাপাশি ইন্টারনেটভিত্তিক জনসংযোগ করে থাকেন।
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন: লোগো, ওয়েবসাইট ব্যানার, ছবি সম্পাদনা, অ্যানিমেশন ইত্যাদি।
  • ওয়েব ডেভলপমেন্ট: ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়েবভিত্তিক সফ্‌টওয়্যার তৈরি, হোস্টিং ইত্যাদি।
  • কম্পিউটার প্রোগ্রামিং: ডেস্কটপ প্রোগ্রামিং থেকে ওয়েব প্রোগ্রামিং সবই এর আওতায় পড়ে।
  • ইন্টারনেট মার্কেটিং: ইন্টারনেটভিত্তিক বাজারজাতকরণ কার্যক্রম, যেমন ব্লগ, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে বিপণন।
  • গ্রাহক সেবা: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহককে টেলিফোন, ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহাজ্যে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা।
  • প্রশাসনিক সহায়তা: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কাজের ডাটা এন্ট্রি করণ, ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা ইত্যাদি* প্রশাসনিক সহায়তা: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কাজের ডাটা এন্ট্রি করণ, ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা ইত্যাদি।

 

এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বিষয়ে দক্ষ হয়ে একজন ফ্রিলেন্সার তার ক্যারিয়ার গড়ার কাজ শুরু করে কঠোর পরিশ্রম দিয়ে সফল হতে পারে।

 

এই পোস্টটির মাধ্যমে আমি আপনাদের ফ্রিলেন্সিং বিষয়ে একটি পরিপূর্ণ ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকে মনে করে  যে ফ্রিলেন্সিং করা খুব সহজ কিন্তু কোন কাজই সহজ না। জিবনে সফল হতে হলে একটু পরিশ্রম করতেই হবে। পরিশ্রম করলেই সফলতা পাওয়া যাবে ।আশা করি আমি আপনাদেরকে এই পোস্টটির মাধ্যমে ফ্রিলেন্সিং নিয়ে পরিপূর্ণ ধারনা দিতে পেরেছি। আজকের মত বিদায় আবার ও কোন নতুন টপিক আবার চলে আসব। ধন্যবাদ,

Related Posts

26 Comments

মন্তব্য করুন