বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে একজন মানুষের মাইন্ডসেট যেমন হওয়া উচিৎ

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। এখন ২০২২। সময়ের অনেকটা পথ পেরিয়ে মানবজাতি ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে আরও একটি নতুন সময়ের পথে। মানুষ স্বভাবতই কর্মচঞ্চল। কাজ করতে প্রচুর ভালোবাসা মানুষ। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি খুশি হয় যখন তার কাজটি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়। বর্তমান সময়ে মানুষ কাজ করতে চায় বিভিন্ন জায়গায়। যা তাদের জীবনকে আরো সহজতর করে তুলবে। সে যেন তার পরিবারের নিকট বোঝা না হয়ে দাঁড়ায় সেই প্রচেষ্টায় তারা প্রতিনিয়ত ব্যস্ত।

কিন্তু আমরা যতই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নত হই না কেন কষ্ট না করলে কোন কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই চাই আমাদের নিজস্ব অর্থ উপার্জনের একটি কাজ থাকুক, আমরা যেন আমাদের পরিবার পরিজনদের কে নিয়ে একটু সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারি যতদিন এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকে। বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের বেলায় এই শর্ত প্রযোজ্য। কিছু মানুষের লক্ষ হয়তো একটু ভিন্নতর হতে পারে। তবে সবকিছুর মূলেই রয়েছে সুখ। কিন্তু এই অর্থ উপার্জন করতে গিয়েই আমাদের জীবনে সকল প্রকার পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।

আমরা মনে করি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আমাদের কাছে থাকলে আমাদের জীবন যাপন করা আরও সহজ হয়ে পড়বে। কিন্তু ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জন করার ক্ষেত্রে আমাদের সবার পথ এক রকম হয় না। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ইচ্ছা থাকে, লক্ষ্য থাকে, থাকে আলাদা মানসিকতা। আমরা সবাই যার যার মতো করে নিজের জীবিকা অর্জন করতে চাই। কিন্তু যখন আমরা আমাদের জীবিকা অর্জনের উপায়কে তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের দিকে অগ্রসর হতে চাই তখন আমরা চাই আরো সহজতর পথ খুঁজে বের করো। কিন্তু তখনই আমরা প্রকৃতপক্ষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যাই।

কারণ অর্থ উপার্জনের এই তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমাদেরকে পেয়ে বসে। তখন আমরা শুধু চিন্তা করি যে আমাদের কাছে টাকা আসলেই হল। কিভাবে আসছে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। তখনই সমাজে সৃষ্টি হয় দুর্নীতি, চোরাকারবারি, লুটতরাজ, চাঁদাবাজি প্রভৃতি সমস্যার। টাকার লোভ মানুষকে করে দেয় অন্ধ। তাকে চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও নিচু বানিয়ে দেয়। কিন্তু এই সমস্যা গুলোর সমাধান করা সম্ভব যদি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

এই সমস্যা আমাদের ভেতর থেকে দূর করার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি তা হল :

১. প্রত্যেকটি সময়ের সঠিক সদ্ব্যবহার করা।
২. সঠিক শিক্ষা অর্জন করা।
৩. অর্জিত শিক্ষাকে বাস্তব জীবনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা।
৪. পরিশ্রম করার ক্ষেত্রে ভয় না পাওয়া।
৫. লেখাপড়ার পাশাপাশি সময় পাওয়া গেলে প্যাসিভ ইনকাম এর ব্যবস্থা করা।
৬. যে কাজ করায় আপনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেই কাজের ধরন কে আরো উন্নত করা এবং ওই কাজ করার মাধ্যমেই অর্থোপার্জনের চেষ্টা করা।
৭. বেশি থেকে বেশি কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখা এবং একাধিক কাজ করার মত দক্ষতা অর্জন করা।
৮. সব সময় হালালভাবে উপার্জনের চেষ্টা করা এবং হারাম কে বর্জন করা।
৯. কাজকে ছোট-বড় মনে না করা, কাজকে কাজ হিসাবে দেখা।
১০. কে কি বললো সেদিকে খেয়াল না করে নিজের কাজ চালিয়ে যাও।
১১. কাজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করা।
১২. আবার নিজেকে অতিরিক্ত ক্লান্ত করে না ফেলা।
১৩. পরিবারকে যথাসম্ভব সময় দেয়ার চেষ্টা করা।
১৪. যেখানে আপনার কাজের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় সেখানেই কাজ করা।
১৫. ধৈর্য ধারণ করা, অপচয় থেকে নিজেকে বাঁচানো এবং নিজের প্রয়োজনীয়তাকে আগে প্রাধান্য দেওয়া।

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন