বাংলাদেশী ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর লেডি মাফিয়া

তিনি ছিলেন একজন গার্মেনটস কর্মী। তার নাম সূর্যমনি। এখন তিনি আন্তর্জাতিক লেডি মাফিয়া। তার বাবা দিনমজুর আব্দুর ছত্তার। সুর্যমনি লালমনির হাট জেলার কালিগঞ্জের তিস্তার দুর্গম চরাঞ্চল বৈরাবতির দরিদ্র ঘরের কন্যা। পরিবারের অভাব অনটন পূরণের জন্য কাজের সন্ধানে চলে আসে ঢাকায়। তখন তার বয়শ মাত্র ১১ বছর। তার বয়শ ১১ বছর থাকায় তিনি প্রথমে কাজ নেয় বাসর ঝি এর। আর এর পরে গার্মেন্টস কর্মী। আর বর্তমানে তিনি মাফিয়া ডন। হিরোইন কোকেনের বিশাল চালান সহ আটক করার পর তিনি এখন শ্রীলঙ্কার কারাগারে বন্দী অবস্থায়।

বাংলাদেশের কোনো সুর্যমনী শ্রীলঙ্কায় আটকের পরই দেশজুড়ে আলোচনার ঢল। লালমনির হাট জেলা শহর থেকে ৪০ কিমি দূরত্ব কালিগঞ্জ উপজেলা। সেখান থেকে আরো ৫ কিমি দূরে তিস্তা নদীর কোল ঘেঁষে চরবৈরতে হাজির হাট গ্রাম। আর ওই গ্রামেই সূর্যমনির বাড়ি। সুর্যমনির বাবা আব্দুস ছত্তার নদী থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। মাছ বিক্রি করে উপার্জিত টাকাই তার ছোট্ট সংসার ছিল। সূর্যমনীর জন্ম ২০০০ সালের ১৪ নভেম্বর। তার সংসারে অভাব অনটনের জন্যই সূর্যমনী মাত্র ১১ বছর বয়সে ঢাকা পারি দেয় গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য। সেই সময় তার বয়শ ১১ বছর হওয়ায় গার্মেন্টসে চাকরি পায়নি সার্যমনি। তখন ঢাকার এক গার্মেন্টস মালিকের বাড়িতে তিনি ঝি এর কাজ করেন।

পরে তার ভাই রাশেদুল ইসলাম চাকরি পায় যাত্রাবাড়ী গার্মেন্টস ইয়ার মার্কেটে। ওই গার্মেন্টস মালিকের সহায়তায় সুর্যমনীর নকল জন্মসনদ তৈরি করে। অবশেষে তার চাকরি হয়। ভাই বোন একসঙ্গে চাকরি করে ওই গার্মেন্টসে। ওই গার্মেন্টসের সূত্র ধরে উত্তরা নয় নম্বর সেক্টরে আব্দুল্লাহপুর এলাকায় সেই বাইং হাউজে কাজ নেয় সে। সেই বাইন হাউজের মালিক চয়েজের সঙ্গে সার্যমনির সক্ষতা ছিল। মালিকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় কথা মত কাজ করতো সূর্যমনি।

যখন সার্যমনী গার্মেন্টসে কাজ করতো তখন তিনি বাড়িতে সংসার খরচের জন্য প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা পাঠাত। সেই সূর্যমোনি বাইন হাউজের চাকরি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে পাঠাতে শুরু করে ৫০/৬০ হাজার টাকা প্রতিমাসে। পরে ওই থাকা দিয়ে তার বাবা আব্দুর ছত্তার জমি ক্রয় ও বন্দক নেওয়া শুরু করে এলাকায়। তখনই তার এলাকাবাসী সমালোচনা শুরু করে কিভাবে একজন গার্মেন্টস কর্মী এতো টাকা উপার্জন করতে পারে।

সুর্যমনি ঈদে তার বাড়িতে যেত। তবে তিনি বাড়িতে যেত ঢাকা থেকে সৈয়দপুর প্লেনে চড়ে এবং প্লেন থেকে নেমে বাড়ি যেত বিলাসবহুল গাড়ি চড়ে। আর সে ফিরে যেত সেই বিলাসবহুল গাড়িতে করেই। সূর্যমনই কে বিয়ের কথা বললেই সে এড়িয়ে যেত সবসময়।

সূর্যমণী রহস্য ফাঁস হয়ে পরে তার শ্রীলঙ্কার কারাগারে বন্দী হওয়ার পরেই। বাইন হাউজের মালিক চয়েজ সূর্যমনিকে ফাঁদে ফেলে এই ধরনের অন্যায় কাজ করিয়েছে।

সূর্যমনি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাদক ডন হোয়ে শ্রীলঙ্কায় কারাগারে আটক হন। ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি বিপুল পরিমাণ মাদক সহ শ্রীলঙ্কায় পুলিশের কাছে গ্রেফতার হন।

ধন্যবাদ পাঠ করার জন্য। আশাকরি এই ব্লগের সাথেই থাকবেন। নিত্য নতুন জানা অজানা অবাক করা খবরের আপডেট পাবেন।

Related Posts