ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশের নামটা মোটামুটি ভাবে যুক্ত হয়েছিলো সেই ৯০ এর দশকে। যদিও তখন বাংলাদেশের ক্রিকেট ছিলো অনেকটা নিজেদের মদ্ধে। ঘরোয়া লিগ বা পাড়ার ক্রিকেট ছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেট এর আসল যায়গা। তখনো বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ নাম লেখাতে পারিনি ভালোভাবে। কিন্তু তখন থেকেই শুরু হয়েছে বাংলার মানুষের অন্তরে ক্রিকেট যুদ্ধ। তাই তো তখন সেই অবস্থা থেকেও উঠে এসেছিলো বাংলার ক্রিকেটের কিছু দানবীয় ক্রিকেটীয় অস্ত্র। যাদের হাত ধরেই বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে।
সময়টা তখন ১৯৯৭-১৯৯৯, তখনই মুলত বাংলাদেশের ক্রিকেট কে বিশ্ব ক্রিকেটে আবির্ভাব করার সুযোগ আসে।কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে ছিলো তখন বাংলাদেশের নিয়মিত প্রতিপক্ষ। কিন্তু যখন ১৯৯৯ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয় লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা তখন থেকে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে থাকে এক বড় প্রতিপক্ষ। আস্তে আস্তে চিনতে শুরু করে ক্রিকেট পরাশক্তিরা বাংলাদেশকে। আর তখন ই বাংলাদেশ আইসিসি কতৃক এক মহা সুসংবাদ পেয়ে যায়। আর সেটি ছিলো একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অনুমতি।
২০০১ সালের বিশ্বকাপের কথা। তৎকালিন ক্রিকেট এর অন্যতম শক্তিধর পাকিস্তান কে বিশাল ব্যাবধানে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। মুলত তখন ই বাংলাদেশ পুরা বিশ্ব কে জানিয়ে দেই তাদের আগমনের কথা। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর টেস্ট তথা ৫ দিনের ম্যাচ খেলার স্বীকৃতি পায়। যদিও টেস্ট এর প্রথম জয় টা পেতে একটু দেরিই হয়ে যায়। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম টেস্ট জয়লাভ করে। এরপর একের পর এক দুর্দান্ত পারফর্ম করে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম হয়। ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো ২য় রাউন্ড খেলার সৌভাগ্য হয়।সেই বার বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিধর ভারত কে পরাজিত করতে সক্ষম হয়। আর সেইবার ভারত বাংলাদেশ এর কাছে হেরেই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে বাধ্য হয়।
২০১১ এর বিশ্বকাপ টা বাংলাদেশের ভালো যায়নি। ঘরের মাঠে সেবার বাংলাদেশের পারফর্মেন্স ভালো ছিলো না। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে যায় পরবর্তী বিশ্বকাপ তথা ২০১৫ বিশ্বকাপেই। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্ত্বে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার সৌভাগ্য লাভ করে। এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল, ভারত, পাকিস্তান,ইংল্যান্ড, অষ্ট্রলিয়া,সাউথ আফ্রিকার মতো পরাশক্তি কে টানা পরাজিত করে। বলা হয়ে থাকে তখন ছিলো বাংলাদেশের স্বর্ণ যুগ ছিলো।
এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় হলেও প্রতিটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের সাথে চোখে চোখ রেখেই লড়াই করে থাকে। ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট হওয়ার ও দাবি রেখেছিলো বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
২০১৯-২০২০ অ-১৯ বিশ্বকাপের অর্জনই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা অর্জন। এ অর্জন কোনো যেনোতেনো অর্জন নয়। এই অর্জন টা বিশ্বকাপ জয়লাভের অর্জন। এ অর্জন টা পুরা বিশ্বকে হারিয়ে দেওয়া এক অনন্য গৌরবের অর্জন। অ-১৯ বিশ্বকাপ জয় লাভ করে বাংলাদেশের সাকিব তামিম শরিফুল পারভেজরা।
তাই এর থেকে বাংলাদেশের মানুষ এটা আসা করতেই পারে ছোটো দের এই অর্জনে তালে তাল মিলিয়েই সামনের ক্রিকেট কে আরো অগ্রসর করবে আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা।