বাংলাদেশ এবং এর সৃষ্টির প্রেক্ষাপট

লাল সবুজের চিরচেনা রূপে ঘেরা আমাদের জন্মভূমি এই প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ।

প্রত্যেকের কাছেই তার নিজ নিজ জন্মভূমি খুবই প্রিয়তম এবং ভালো লাগার স্থান। তবে সেই দেশের সৃষ্টির পেছনে অবশ্যই কোনো না কোনল কাহিনী লুকিয়ে থাকে। ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের এই দেশটি সৃষ্টির পেছনে এক বিরাট প্রেক্ষাপটের ইতিহাস রয়েছে, যা লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। তবুও কিছু কিছু দিক তুলে ধরা যায়। এতে করে যারা দেশকে নিয়ে একেবারেই ধারণা হীন তারা কিছুটা হলেও নূন্যতম ধারণা পেতে সক্ষম হবে। তাই তাদের জন্যই আজ আমার এই লেখালেখি শুরু করলাম।

— বাংলাদেশ💚

আমাদের এই ছোট দেশটির আয়তন খুব বিশাল একটা নয়, তবুও আমাদের দেশটিকে আমরা অনেক অনেক বেশি পরিমাণে ভালোবাসি।

পূর্বের হিসাব অনুযায়ী ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত আমাদের এ দেশটি। শুরুতেই আমরা ব্রিটিশ শাসকদের ধারা শোষিত হয়েছি বহুকাল ধরে। তারা প্রায় দুশো টি বছর আমাদেরকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক শাসন শোষণ করেই গিয়েছে। তাদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে আমরা ছিলাম তিনটি খন্ড নিয়ে গঠিত। এই তিনটি একত্রে ছিল ভারতবর্ষের অধীনে। ভারতবর্ষে আবার তিন ভাগ, এগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ভারত এবং পাকিস্তান। পাকিস্তান আবার দুটো ভাগে বিভক্ত ছিল, যথাঃ- পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান। এই ভারত এবং পাকিস্তান আবার ১৯৪৫ সালে বিভক্ত হয়ে যায়। ভারত সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী এবং বিশাল এলাকা নিয়ে বিভক্ত হয়ে যায়। আর পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সাধারণত মুসলিমরা মিলে দেশটি তৈরি হয়। পাকিস্তান এর দুই অংশ ভারতের দুই পাশে চলে যায়। ভারতের পূর্ব দিকে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিমে পশ্চিম পাকিস্তান আত্মপ্রকাশ করে।

পাকিস্তানের সৃষ্টির শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান দুটি দুদিকে হাটতে থাকে। পশ্চিম পাকিস্তানীরাই মূল শাসকের আসনে অধিপতির সিংহাসন লাভ করে। তারা নানা পূর্ব পাকিস্তান এর উপর ক্রমাগত তাদের শাসক রূপ দেখাতে থাকে, এবং সেই সাথে সকল প্রকার ক্ষেত্রেই আমরা অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষেরা শোষিত হতে থাকি। কোনো কিছুতেই আমাদেরকে তারা মূল্যায়ন করত না। বিশেষ করে সকল প্রকারের ক্ষেত্রেই আমরা সব সময় অবহেলিত হতেই থাকতাম। তাই তারাও তাদের রাজত্ব চালিয়েই যেতো। কিন্তু এই রকম শোষণের মাঝে আর কয়দিন বেঁচে থাকা সম্ভব হতে পারে? তাই সময় মতো আমরাও সোচ্চার এর দিকে অগ্রসর হতে থাকি।

এক পর্যায়ে তারা আমাদের মাতৃভাষার উপর হস্তক্ষেপ করলে আমরা চিৎকারে ফেটে উঠি এবং নেমে যাই আন্দোলন এর পথে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বহু গ্ত্যাগ তিতিক্ষার পর অবশেষে আমরা সশস্ত্র যুদ্ধে অগ্রসর হই। দীর্ঘ ৯টি মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ এর বিনিময় এ আমরা স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হই। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর আমরা বিজয় লাভ করি এবং ইতিহাসের খাতায় জায়গা করে নেয় আরেকটি মানচিত্র।

এভাবেই জন্ম হয় আমাদের এই প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের। আমাদের দেশটিকে আমরা খুব ভালোবাসি এবং সর্বোপরি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখার সংগ্রাম করে যাবো

Related Posts

22 Comments

মন্তব্য করুন