বাবা ছিলেন সৌম্য সরকারের প্রথম বোলার

খারাপ সময় যেতে না যেতেই অনেক অবুঝ ক্রিকেটপ্রেমীরা সৌম্যের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে আজ আমরা শুনব তার দক্ষতার গল্প। তখন সৌম্যের বয়স প্রায় তিন বছর। বাবা স্কুল থেকে ফেরার সময় একটি ব্যাট এবং একটি টেনিস বল এনে দিলেন। তারপর সেটি পেয়ে লুফে নিলেন বাম হাতে ব্যাট তুলে নিলেন সৌম্য সরকার। বাবা বল করলেন। তারপর হঠাৎ করেই শট খেলতে শুরু করলেন সৌম্য সরকার। সেখান থেকেই তার জীবনের গল্পের শুরু। এরপর অবশ্য বিকেএসপিতে চান্স পেতে বেগ পেতে হয়নি তার। ব্যাস! এর পর বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে সর্বপ্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে বিশ্বের রেকর্ড তালিকায় নাম লেখান সৌম্য সরকার। এর আগে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটেও তিনি কাতারের বিপক্ষে হাঁকিয়েছিলেন 200 প্লাস রানের একটি রেকর্ড। বাবার বলে ব্যাট করা সেই তিন বছরের সৌম্য এখন ব্যাট হাকান বিশ্বের বড় বড় বাঘা বাঘা বোলারদের বিরুদ্ধে। এখন আমরা জানব তার সবুজ গালিচায় উঠে আসার গল্প সম্পর্কে।
সাতক্ষীরার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন সৌম্য সরকার। বাবা ছিলেন স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওই বিদ্যালয় থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর সৌম্য সরকার চলে আসেন ঢাকায় এবং সেখানে বিকেএসপির ক্লাবে ভর্তি হন। তবে সাতক্ষীরাতে আগে গণমুখী ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতেন তিনি। পরিবার মোটামুটি স্বচ্ছল থাকায় বিকেএসপিতে পড়াশোনা করাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি বাবার। তবে তিনি কখনো ভাববেন না যে তার ছেলেকে কোন সময় টিভিতে দেখাবে। সৌম্য কে মূলত আবিষ্কার করেছিলেন একটি ক্লাবের প্রধান যার নাম ছিল আলতাফ সরকার। বিকেএসপির সহ বিভিন্ন ধরনের বয়স ভিত্তিক টুর্ণামেন্টে খেলার পর কাতারের বিপক্ষে প্রথম অনূর্ধ্ব 19 ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয় তার এবং সেই ম্যাচে 205 রানের ইনিংস খেলেন তিনি। সেই ম্যাচে ছিল 27 টি বাউন্ডারি এবং সাতটি ওভার বাউন্ডারি। তার ক্রিকেট অভিষেক ঘটেছিল 2015 সালের বিশ্বকাপের কিছুদিন আগে। 2014 সালের ডিসেম্বর মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চম ওয়ানডে ম্যাচে তিনি প্রথম খেলার সুযোগ পান। সেই ম্যাচে 18 বলে 20 রান করে তিনি তার প্রথম ম্যাচটি শেষ করেন। তবে সেই ম্যাচে চারটি চার মেরে তিনি নিজেকে রহস্যময় করে তুলেছিলেন। তারপর 2015 সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার নাম আসে। মধ্যে তিনি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলার মাধ্যমে নির্বাচকদের নজরে আসেন। 2015 সালের 13 মার্চ তিনি হ্যামিল্টনে একটি হাফ সেঞ্চুরি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে স্থান করে নেন। সৌম্য আমাদের মত সাধারন পরিবারের একটি নিরিবিলি সন্তান কিন্তু তার গল্পটি বলতে গেলে অসাধারণ। আজকাল সরকার যদি দুই একটি ম্যাচে খারাপ পারফরম্যান্স করে তাহলে আমাদের ক্রিকেটপ্রেমীরা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে তাতে তার খারাপ সময় পাস করাটাই স্বাভাবিক। তবে ভবিষ্যতে সৌম্য আবার নিজের মতন করে জ্বলে উঠুক এই কামনা আমাদের সবার।
প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না এবং আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকার জন্য আপনার আমন্ত্রণ রইল। এবং আমাদের অন্য পোস্টগুলো করতে অবশ্যই ভুলবেন না এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য
ধন্যবাদ…

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন