বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস উপলক্ষে আমাদের করণীয়

সমস্ত পৃথিবীর একটি সুন্দরতম অংশজুড়ে বিরাজমান করছে পাখিরা। মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় প্রকৃতির এই সুন্দরতম পাখিরা। পৃথিবীর সৌরজগতের সবচেয়ে সুন্দর একটি গ্রহ হওয়াই খেতে মনোরম সৌন্দর্যের লীলাভূমি আর বেঁচে থাকার সমস্ত উপকরণ বিরাজমান। এমন সুন্দর সৃষ্টি স্রষ্টার কাছ থেকে একটি উপহার হিসেবে পাওয়া। আরো সুন্দর পৃথিবীর রূপ টাকে কয়েক শ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রকৃতির সুন্দরতম পাখিরা। পাখি হচ্ছে প্রকৃতির সবচেয়ে কাছের ও বিচিত্র একটি অংশ।পরিযায়ী পাখি বলতে আমরা বুঝি যারা এখন চলছে থেকে অন্য অঞ্চল এক দেশ থেকে অন্য দেশে এমনকি এখনও দেশ থেকে অন্য দেশে কাল ওর ঋতুভেদে বিভিন্ন সময় পরিভ্রমণ করে থাকে।পরিবেশের ভারসাম্য ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় পাখিদের কোন তুলনা নেই ।বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে প্রায় দশ হাজার প্রজাতির পাখি রয়েছে। এবং পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই পাখির বিচরণ দেখা যায় সুস্থ জীবনধারা কি টিকিয়ে রাখতে যে সবথেকে বেশি যে সহায়তা করে আসছে সে হচ্ছে প্রকৃতির পাখি। পৃথিবীর বিশাল অংশজুড়ে পরিযায়ী পাখিদের অবস্থান। পাখির নিজের দেশে বছরের পর বছর অবস্থান করে ঠিক হয় কিন্তু সময়ের তাগিদে বা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা নিজেদের জীবনকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন সময় এক দেশ থেকে অন্য দেশে পরিবহন করে থাকে। 2006 সাল থেকে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত হয়ে আসছে। এটির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা ।পরিযায়ী পাখিদের কে মূলত অতিথি পাখি হিসেবে গণ্য করা যায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গবেষণা করে দেখা গেছে আমরা তাদেরকে অতিথি পাখি বলছি তারা শুরু অতিথি নয় বরং তারা যেখানে যাচ্ছে সেখানে তারা ডিম পারছে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেই স্থান ত্যাগ করছে না। তারমানে বুঝা যাচ্ছে তারা আসলে ভিনদেশী নয় বরং তারা স্বদেশী হিসেবেই পরিচয় লাভ করছে।শীতকালীন সময় যেসব দেশে বরফে ঢাকা পড়ে যায় সমস্ত পাহাড় শহর নদী গ্রাম সেসব অঞ্চল থেকে এসমস্ত পাখিরা নিরাপদ স্থান খুঁজে সেখানে চলে যায়। বাংলাদেশ একটি নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ বিরাজ করে বলে আমাদের দেশেও পরিযায়ী পাখির অভাব নেই। পরিযায়ী পাখিরা মূলত হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ান ইন্ডিয়ান ফ্লাই দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করে থাকে। বিভিন্ন ইউরোপ দূরপ্রাচ্য থেকেও কম বেশি পরিযায়ী পাখিরা বাংলাদেশ পরিবহন করে থাকে ।এটি সাধারণত নভেম্বরের দিকে বাংলাদেশে এসে থাকে।বাংলাদেশে প্রতিবছর 10 এই মেয়ে এবং 11 ই মে এই দিনটিকে পালন করা হয়। পরিযায়ী পাখিরা বাংলাদেশ সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে ঠিক হয়ে আসে ।কিন্তু আমরা তাদেরকে আত্মীয়তার পরিচয় ঠিকমতো দিতে পারি না। আমরা মানুষেরা মানুষের স্বার্থে যেমন বোন বনের গাছপালা উজাড় করে দিচ্ছি যেমন পাহাড় গুলো কেটে ফেলছি নদী-নালা বাধ দিয়ে শুকিয়ে ফেলছি ঠিক তেমনি এসব পাখিরা বাংলাদেশে আসার সাথে সাথেই আমরা তাদেরকে ধরে মেরে ফেলার চেষ্টা করছি। এগুলো সবগুলোই করছি নিজেদের স্বার্থের জন্য সখের বসে পাখি পালনের লোক থেকে আমরা করে থাকি হাজার হাজার লোকের মানুষের আপাকে দেখে ধরে ধরে মেরে ফেলছে।এখন পরিবেশের ভারসাম্য কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সেই ব্যাপারে চিন্তার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুন্দর সব সময় পবিত্রতার প্রতীক হয়ে থাকে আমরা পাখিদেরকে পবিত্রতার প্রতীক বলতে পারি যারা ডানা মেলে আকাশে প্রাণ খুলে উড়ে বেড়ায় বসন্ত দিয়ে বেড়ায় কিন্তু আমরা নিজেদের হাতেই বসন্তকে কতল করে ফেলি। আমরা শরতের শুভ্র কাশফুলের মতসাদা সাদা মেঘগুলোকে নিজেদের হাতে শেষ করে দিই। আমরা নিজেরা পাখিদেরই স্বীকার করতে গিয়ে কোন একদিন নিজেরাই স্বীকার হয়ে যাব প্রকৃতির কাছে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত বিষয়টিকে নিয়ে ভালোমতো চিন্তাভাবনা করা। আসুন এই বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আমরা শপথ করি আমরা আর কোন পরিযায়ী পাখি কে নিজেদের লোভ এর বশবর্তী হয়ে আটক করব না । চলুন পাখিদেরকে আমরা স্বাধীনভাবে উড়তে দিন আমাদের নীল আকাশে।

Related Posts

18 Comments

মন্তব্য করুন