বুড়ো প্রজার সাহসী পাঁচ মেয়ে।

কুসুমপুর রাজ্য নামে এক রাজ্যে একটু রাজা থাকতেন।রাজা ছিলেন বড়ই দুষ্টু।রাজার জন্য ওই রাজ্যে কোনো মেয়েকে তার কারাগারের বাইরে দেখা যেত না।রাজ্যে যত মেয়ে থাকে সব মেয়ে কে রাজা তার কারাগারে বন্দী করে রাখতেন।

কিন্তু রাজার চোখ এড়িয়ে এক বুড়ো প্রজা তার পাঁচটি মেয়ে কে বড়ো করে তুলেন। একদিন পাঁচ মেয়ে আর বুড়ো প্রজা তাদের ঘরে বসে কথা বলছেন হটাৎ রাজার সেনারা এসে টা শুনে ফেলেন।এবং দরজা ভেঙে তাদেরকে বন্দী করে নিয়ে যান।রাজার চোখ এড়িয়ে মেয়েদের মানুষ করার কথা শুনে তো রাজা খুবই রেগে গেলেন। তাদের বললেন তোমাদের কারাগার না আমি তোমাদের সরাসরি মৃত্যু দন্ড দিলাম।৭দিনের মধ্যে এদের ফাঁসির বেবস্থা কর।

এটা শুনে রাজার বড়ো মেয়ে বললো আপনি যা শাস্তি দিবেন আমি টা মাথা পেতে নিবো।তবে আমাদের শেষ ইচ্ছা টা পূরণ করতে হবে।সবারই শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয়।রাজা বললেন কি শেষ ইচ্ছা বলো।বড়ো মেয়ে বললো আমাদের পাঁচ বোন দেরি একটা করে বিশেষ গুন আছে। আমরা আপনাকে সেটা দেখেন চাই।রাজা বললো তোমাদের আবার বিশেষ গুন ও আছে।আচ্ছা দেখাও তাহলে ।বড়ো মেয়ে বললো আমি কোনো ছেরা জিনিস এমন ভাবে সেলাই করতে পারি যেটা পরে বোঝাই যায়না কোথায় ছেড়া ছিল।রাজা একটা কাপড় ছিঁড়ে তাকে দিল।

বড়ো মেয়ে সেটা সেলাই করে রাজা কে দিলেন। রাজা তো দেখে একেবারে অবাক হয়ে গেলো।তারপর মেজো মেয়ে বললো আমি খুব ভালো রান্না করতে পারি।রাজা বললেন ঠিক আছে আজ পুরো রাজ্যের রান্না তুমি একা করবে।মেজো মেয়ে রান্না করতে গেলো।রাজা মন্ত্রী কে বললো নুনের বাটিটা সরিয়ে দাও।দেখি নুন ছাড়া কিভাবে রান্না ভালো হয়।মন্ত্রী নুন এর বাটিটা সরিয়ে ফেললেন।কিন্তু মেজো মেয়ে নুন ছাড়াই খুব ভালো রান্না করেছেন।রাজা খেয়ে ভালো বললেও ,তাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা বললেন।

লুয়া মেয়ে বললেন কেনো রাজা রান্না তো ভালই হয়েছে তাহলে আপনি ফাঁসি কেনো দিবেন।রাজা বললেন তোমার বোন রান্না করতে গিয়ে পুরো রান্না ঘর ময়লা করে ফেলেছেন।১ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার করতে না পারলে তোমাদের ফাঁসি দেওয়া হবে।৩নম্বর মেয়েটি বললেন ঠিক আছে। মন্ত্রী বলেন বললেই হলো।ওই রান্নাঘর পরিষ্কার করতে ১০জন দাসীর হাফ বেলা কেটে যায়।৩নম্বর মেয়ে বললেন ঐটা তো আমার গুন।

৩নম্বর মেয়ে পানি কে অনুসরণ করে বললেন হে পানি তোমরা এসে রান্না ঘর পরিষ্কার করে দাও।পানি এসে রান্না ঘর পরিষ্কার করে দিলো।রাজা বললেন অনেক হইছে আমি আর কোনো গুন দেখতে চায়না।৪নম্বর মেয়ে বললেন কেনো রাজা আমরা ২বোন কি দোষ করলাম আপনি ওদের গুন দেখলেন আমাদের দেখবেন না।মন্ত্রী বললো রাজার এক কথা।আর কোনো গুন দেখা হবে না।৪নম্বর মেয়ে বললেন আমার গাছ বড়োই প্রিয় আমি একটি গাছ লাগিয়ে যেতে যায়।রাজা মন্ত্রী কে বললেন ওকে বীজ দাও।আর কারাগারে বন্দী করে দাও।

এবার ৪নম্বর মেয়ে কারাগারে বসেই বীজ লাগলেন এবং গাছটি একনিমিসেই অনেক বড় হইয়ে গেলো তারা গাছের মোগ ডালে উঠে বসলো আর গাছ টি কারাগারের ছাদ ভেঙে অনেক উপরে উঠে গেল।রাজা এবং তার সেনারা সেটা দেখে সেনারা গাছ কাটতে লাগলো।ছোট মেয়ের গুণটি ছিল সে ইচ্ছা মত চুল বড়ো ছোট করে পারে।ছোট মেয়ে তার চুলটি বড়ো করে নিচে দিল আর সবাই চুল বেয়ে নিচে নেমে গেলো।মুহূর্তে গাছ কাটা শেষ এবং গাছটি প্রাসাদের ওপর পড়ে প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে গেলো।

রাজ্যের লোকজন পাঁচ মেয়ের সাহসিকতা কে বাহবা দিতে লাগলো।এর পর থেকে রাজ্যে ছেলে মেয়ের সমান অধিকার।তারপর থেকে রাজ্যে  শান্তি ফিরে এলো।

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন